1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ক্লিন ফিড' কি  প্রাইভেট টিভি চ্যানেলকে বাঁচাবে?

৫ জুলাই ২০১৯

বাংলাদেশে বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে সরকার৷ মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কথাও বলেছেন তথ্যমন্ত্রী৷ বেসরকারি চ্যানেলগুলোতে যে আর্থিক সংকট চলছে তা কি এভাবে মোকাবেলা করা যাবে?

https://p.dw.com/p/3Lc99
Talkshows in Bangladesh
ছবি: Channel 24

বাংলাদেশে অন এয়ারে থাকা বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল এখন ৩০টি৷ এর বাইরে বিটিভি, বিটিভি ওয়ার্ল্ড এবং সংসদ বাংলাদেশ নামে আরো ৩টি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টিভি চ্যানেল আছে৷ একমাত্র বিটিভি টেরিস্টেরিয়াল সম্প্রচার চালায়৷

২০১২ সালে প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর জরিপ অনুযায়ী তখন বাংলাদেশে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার পরিবারে টেলিভিশন ছিল৷ এই সংখ্যা আরো বেড়েছে৷ কেবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)-এর সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজ জানান,‘‘ বাংলাদেশে আনুমানিক ৫০ লাখ কেবল কানেকশন আছে৷ অ্যানালগ হওয়ায় আমাদের কোনো পরিসংখ্যান নেই৷ এটা আমাদের ধারণা৷''

বিজ্ঞাপনের বাজার:

রায়ানস আর্কাইভস-এর হিসেবে ২০১৮ সালে সাত হাজার ৯শ' ৬০ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন গেছে বিটিভিসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে৷ রায়ানস-এর প্রধান নির্বাহী আহমেদ বলেন, ‘‘তবে এটা টেলিভিশনের রেটকার্ড ও প্রচারিত বিজ্ঞাপনের সময় হিসেব করে বের করা হয়েছে৷ কমিশন বাদ দেয়া হলে টাকার অংকটি আরো কম হবে৷'' টেলিভিশন চ্যানেল মালিক সমিতি (অ্যাটকো)-র সিনিয়র সহসভাপতি ও একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু বলেন, ‘‘প্রাইভেট টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে বাজার বছরে ৭২০ থেকে ৮০০ কোটি টাকার৷ আগে এর প্রায় অর্ধেকই ভারতের চ্যানেলে চলে যেতো৷ কিন্তু চাপের কারণে এখন তা কমেছে৷ এখনো ২০-২৫ শতাংশ বিজ্ঞাপন ভারতের চ্যানেলে যায়৷''

তিনি বলেন, ‘‘মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো বিজ্ঞাপন ভারতে ডাইভার্ট করে৷ তারা বলে, আমরা ভারতের টিভিতে বিজ্ঞাপন দেই৷ ২-৩টি দেশি প্রতিষ্ঠান ভারতীয় চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেয়৷''

ক্লিন ফিড নীতি:

অ্যাটকো'র পরিচালক ও ডিবিসি টেলিভিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘‘আইন অনুযায়ী কোনো বিদেশি চ্যানেলের অনুষ্ঠান বাংলাদেশে দেখাতে হলে ‘ক্লিন ফিড' দেখাতে হবে৷ ক্লিন ফিড মানে হলো কোনো বিজ্ঞাপন থাকতে পারবে না৷'' তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদও একই ধরনের কথা বলেছেন৷ তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা বিদেশি চ্যানেল বন্ধ করছি না, আইন বাস্তবায়না করছি৷'' কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬-এর ১৯ ধারার ১৩ উপধারায় বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য বিদেশি কোনো চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে৷

‘‘ক্লিন ফিডের বিধানটি বিশ্বের অন্যান্য দেশেও আছে’’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন ও ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক শফিউল আলম ভুঁইয়া বলেন, ‘‘ক্লিন ফিডের বিধানটি বিশ্বের অন্যান্য দেশেও আছে৷ আমাদের দেশে এটা কার্যকর না হওয়ায় দেশীয় টেলিভিশনগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমরা একটা গবেষণা চালাচ্ছি যার কাজ এখন শেষ পর্যায়ে৷ তাতে দেখা গেছে খবরের জন্য বাংলাদেশের দর্শকরা বাংলাদেশি চ্যানেল দেখেন৷ কিন্তু অন্যান্য বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের জন্য ভারতীয় চ্যানেলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন৷ বিজ্ঞাপনদাতারাও এটা জানেন৷''

‘‘টিভিতে ওয়েজবোর্ড না থাকায় অস্বাভাবিক পরিস্থিতি

ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘‘ক্লিন ফিড নীতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত তো হচ্ছেই, বিজ্ঞাপনের কলাকুশলীরাও বঞ্চিত হচ্ছেন৷''

চাই পে চ্যানেল:

পে চ্যানেলের দাবি জানাচ্ছেন টেলিভিশন মালিকরা৷ একইসঙ্গে তারা বিতরণ ব্যবস্থা ডিজিটাল করার কথা বলছেন৷ তারা মনে করেন, পে-চ্যানেল হলে টিভিগুলোর আয়ের নতুন একটি উৎস হবে৷ তখন চ্যানেলগুরলোর মধ্যে মানসম্পন্ন অনুষ্ঠান বানানোর প্রতিযোগিতা বাড়বে৷ ডিজিটাল হলে প্রচার-মানও বাড়বে, ঝকঝকে ছবি ও শব্দ পাওয়া যাবে৷ কত গ্রাহক তারও হিসাবও থাকবে৷

বাংলাদেশের ৩০টি চ্যানেলে ঢাকায় কম করে হলেও ৬ হাজার সাংবাদিক, টেকনিশিয়ান ও অন্যান্য সংবাদকর্মী কাজ করেন৷ কোনো কোনো চ্যানেলে ৫ মাস ধরে বেতন হয় না৷ ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘‘একমাত্র আয় বিজ্ঞাপন, সে কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ আর টিভিতে কোনো ওয়েজবোর্ড না থাকায়ও অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ তবে ওয়েজ বোর্ডের কাজ চলছে৷''

দেশের মাটিতে কীভাবে বাড়বে দেশের চ্যানেলের গুরুত্ব, জানান নীচের মন্তব্যের ঘরে...