প্রধানমন্ত্রীকে পুনর্বহাল করছে সুদানের সেনাবাহিনী
২২ নভেম্বর ২০২১গত মাসে এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন আবদাল্লাহ হামদক৷ এরপর সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ চলতে থাকে৷ বিক্ষোভে বেশ কয়েকজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷
কয়েক সপ্তহের আলোচনা শেষে রোববার সেনাবাহিনী ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদককে ক্ষমতায় পুনর্বহাল কারার বিষয়ে একটি চুক্তি সই করেছে৷ তবে তাকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে পুনর্বহাল করা হবে৷ পরবর্তী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তিনি সুদানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে৷
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ২০২৩ সালে দেশটির সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন হামদক৷
চুক্তি স্বাক্ষরের পর হামদক বলেন, ‘‘সুদানের প্রতিটি নাগরিকের জীবন গুরুত্বপূর্ণ৷ চলুন আমরা রক্তপাত বন্ধ করে তরুণদের এ শক্তিকে উন্নয়নের কাজে লাগাই৷''
বন্দিদের মুক্তি দেবে সেনাবাহিনী
আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে হামদক জানান, সেনাবাহিনীর সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী, তিনি স্বাধীনভাবে মন্ত্রণালয় গঠন করতে পারবেন৷
জানা গেছে, দেশটিতে চলমান বিক্ষোভে রক্তপাত ঠেকাতেই তিনি সেনাবাহিনীর সাথে চুক্তিতে রাজি হয়েছেন৷
এদিকে সেনাপ্রধান জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ বুরহান ধন্যবাদ হামদককে জানিয়ে বলেন, ‘‘তিনি ধৈর্য্য ধরে এখন (চুক্তিতে পৌঁছা পর্যন্ত) পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন৷''
১৪ দফার এ চুক্তি অনুযায়ী, সকল রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেবে সেনাবাহিনী৷
ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া
হামদককে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণার পর এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফরেন পলিসি চিফ ইয়োজেফ বোরেল বলেন, ‘‘অক্টোবরের সেনা অভ্যুত্থানের পর অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে৷ শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্রের জন্য সুদানের জনগণ একতা ও অন্তর্ভুক্তি দেখতে চায়৷''
নতুন এ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এটি হলো অন্তর্বতীকালীন রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করার প্রথম ধাপ৷''
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, দুপক্ষের এ আলোচনার ফলে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি, প্রধানমন্ত্রীর পুনর্বহাল, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার এবং সমন্বয় প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়টি ইতিবাচক৷
তবে সুদানের গণতন্ত্রপন্থী কিছু গোষ্ঠিী চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে৷ তাদের দাবি, সেনা অভ্যুত্থানের সাথে যুক্ত ব্যাক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে৷ সেই সাথে জনগণের দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় তাদের৷
আরআর/কেএম (রয়টার্স, এএফপি, এপি)