ভারতে দুর্নীতি
৯ মার্চ ২০১২সততা ও কর্তব্যনিষ্ঠার পুরস্কার মৃত্যু৷ মধ্যপ্রদেশের তরুণ পুলিশ অফিসার নরেন্দ্র কুমার সিং-এর জীবনে সেটাই ঘটলো৷ এই নৃশংস হত্যার ঘটনায় ধিক্কার জানিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল৷ তারা এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছে৷ নিহত অফিসারের পরিবারের হয়ে তাঁর পিতা চেয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই'এর তদন্ত৷ অভিযোগের আঙ্গুল শাসক দল বিজেপি'র দিকে৷
মধ্যপ্রদেশের পূর্বতন মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং-এর অভিযোগ, বিজেপি-শাসিত রাজ্যের মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ, প্রভাবশালী ব্যক্তি থেকে আরম্ভ কোরে তৃণমূল স্তরের কর্মীরা পর্যন্ত অবৈধ মাইনিং-এর কাজে জড়িত৷ খনি মাফিয়াদের সঙ্গে তাঁদের যোগসাজস আছে৷ বিরাট মাফিয়া চক্র নাকি সক্রিয় রাজ্যে৷
এছাড়া, ঐ এলাকা বালি ও পাথরের জন্য বিখ্যাত৷ অথচ তারপরেও, রাজ্যের খনিজ সম্পদ নিলামের ব্যবস্থা করা হয়নি কেন? - তদন্তে সেটাও জানতে চাওয়া হবে৷ ‘‘বিজেপির দুর্নীতি দমনের এই তো নমুনা৷ কর্নাটকে দেখেছি, এখন দেখছি মধ্যপ্রদেশে'', বলেন কংগ্রেস মুখপাত্র রশিদ আলভি৷
সিপিএম সাংসদ সীতারাম ইয়েচুরি মনে করেন, এর পেছনে কিছু একটা আছে৷ সংবিধান অনুসারে এরজন্য দায়ী রাজ্য সরকার৷ উত্তরটা তাদেরকেই দিতে হবে৷ প্রকাশ্যে আনতে হবে নেপথ্য কাহিনী৷
ওদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেন, তাঁর সরকারকে হেয় করার জন্য মাফিয়া ইস্যু নিয়ে অযথা হৈচৈ করা হচ্ছে৷ তিনি জানান, সরকার নিহত অফিসারের পরিবারের পাশে আছে৷ প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে ৷
সংযুক্ত জনতা দলের শীর্ষ নেতা শারদ যাদব অপরাধীর কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, অবৈধ খননের ইস্যু তোলা হয়েছিল আগেই৷ অথচ বিজেপি বা কংগ্রেস সেদিকে কান না দিয়ে রাজ্যের প্রকৃতিক সম্পদ লুটেপুটে খাচ্ছে৷
সাধারণ মানুষের বক্তব্য, রাজ্যে বালি ও পাথর খনিতে মাফিয়ারাজ অনেকদিন ধরেই চলছে৷ প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে গেলে ওপরতলা থেকে চাপ আসতে থাকে৷ আর ব্যবস্থা নিতে গেলেই তাঁদের পায়ে বেড়ি পরানো হয়৷
উল্লেখ্য, গতকাল মধ্যপ্রদেশের বানমোর শহরের অদূরে টহল দেবার সময় খনি মাফিয়াদের পাথর বোঝাই একটি ট্র্যাক্টর-ট্রলিকে রাস্তায় নেমে আটকাবার চেষ্টা করেন তরুণ আইপিএস অফিসার নরেন্দ্র কুমার সিং৷ কিন্তু ট্রাক্টর চালক না থেমে ঐ অফিসারকে ট্রাক্টরে পিষে দিয়ে চলে যায়৷ চালককে গ্রেপ্তার করে তাঁর বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ