খাবার নষ্টের বিরুদ্ধে আইন
৩০ এপ্রিল ২০১৬গত ফেব্রুয়ারি মাসে ফ্রান্সে এই আইন পাশ করা হয়৷ তবে কিছু কিছু দাতব্য প্রতিষ্ঠানের চিন্তা হলো, তারা এই পরিমাণ খাবার-দাবার বণ্টনের ব্যবস্থা করতে পারবেন তো? কারফুর-এর মতো কোনো বড় ফরাসি সুপারমার্কেট চেনের একটি আউটলেটে গেলেই টের পাওয়া যায়, রোজ কী পরিমাণ খাবার তাদের ফেলে দিতে হয়৷ সুপারমার্কেটের ঠান্ডাঘরে দই বা পুডিং, একটু পুরনো হয়ে যাওয়া কেক বা রুটি, এ সব ডাঁই করা আছে৷
নতুন আইন অনুযায়ী বিক্রি না হওয়া খাবার-দাবার ফেলে দেওয়ার ফাইন হবে ৩,৭৫০ ইউরো, যা একটা সুপারমার্কেটের পক্ষে খুব বেশি নয়৷ কিন্তু যেদেশে বছরে প্রায় ৭০ লাখ টন খাবার-দাবার ফেলে দেওয়া হয়, সেখানে এই আইনের উপযোগিতা স্বল্প হলেও, গৌণ নয়৷ তবে খাবার নষ্ট করার মূল দায়টা পড়বে সাধারণ মানুষের ওপরে – রেস্টুরেন্ট আর দোকানপাট আসছে তার পরে৷ অপরদিকে একটি সুপারমার্কেট থেকে দাতব্য সংস্থাগুলিকে বছরে তিন লাখের বেশি ‘মিল' সরবরাহ করা যেতে পারে৷ কিন্তু বাস্তব হলো এই যে, অধিকাংশ দোকান থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০ কিলো বিক্রি না হওয়া খাবার-দাবার ফেলে দেওয়া হয়৷
অপরদিকে ফ্রান্সের মতো দেশেও গরিব বা দুঃস্থ মানুষের কোনো কমতি নেই৷ এই পরিস্থিতিতে একটি অনলাইন পিটিশন থেকে খাবারের অপচয় রোধ আইন পর্যন্ত পৌঁছাতে একটি আধুনিক, সচেতন সমাজের বেশি দিন লাগার কথা নয় – ফ্রান্সে ঠিক যা ঘটেছে৷ ইউরোপের অপরাপর দেশেও এই সচেতনতা আছে অথবা বাড়ছে, যেমন জার্মানি কিংবা ব্রিটেনে৷ ডেনমার্কে শুধু ফেলে দেবার মতো খাবার-দাবার নিয়ে একটি ডিসকাউন্ট সুপারমার্কেট খোলা হয়েছে৷ ফ্রান্সের আগেই বেলজিয়ামের একাধিক শহরে খাবার নষ্ট নিষিদ্ধ করা হয়েছিল৷
বলতে কি, খাবারের অপচয় রোখার ক্ষেত্রে ফ্রান্স লাস্ট বয় না হলেও, আদৌ ফার্স্ট বয় ছিল না৷ এই নতুন আইন প্রমাণ করে দিল যে, সমাজে সচেতনতা দেখা দিলে পরিবর্তন ঘটতে খুব বেশি সময় লাগে না৷ তবে এমন একটি খাদ্য সরবরাহ প্রণালী, যেখানে দরিদ্র বা অভাবী মানুষজনকে ফেলে দেওয়া খাবারের ওপর নির্ভর করতে হয়, সেরকম একটি প্রণালী মানবমর্যাদার সঙ্গে কতটা খাপ খায়, এ প্রশ্নের জবাব আপাতত বাকি থাকল৷
বন্ধু, খাবার অপচয় রোখারজন্য আমরা কী করতে পারি? জানান নীচে, মন্তব্যের ঘরে৷