খালেদার ভিডিও বার্তা
২৮ ডিসেম্বর ২০১৩ঐ বার্তায় তিনি না থাকলেও কর্মসূচি সফল করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান৷ খালেদা জিয়া বলেন, পুলিশ অনুমতি না দিলেও সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে রবিবার নয়া পল্টনের সমাবেশে যোগ দিতে হবে৷ তবে কি কারণে তিনি থাকতে পারবেন না, তা উল্লেখ করেনি৷
ভিডিও বার্তায় খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয় মাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আগামী ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় পতাকা হাতে আমি আপনাদের প্রতি নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে সমবেত হতে অনুরোধ করছি৷ আমি আশা করি সকল প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে আপনারা ২৯ ডিসেম্বর ঢাকায় গণতন্ত্র রক্ষার সমাবেশে শরিক হবেন৷'' নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘আমি আপনাদের পাশে আছি, থাকব সবসময়৷ যদি আমি আপনাদের পাশে থাকতে না পারি, তাহলেও আপনারা এই কর্মসূচি-আন্দোলন চালিয়ে যাবেন৷'' ''
বর্তমান সরকারের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও উল্লেখ করেন খালেদা জিয়া৷ বিএনপি চেয়ারপার্সন সবাইকে ঢাকা যাত্রা শেষে সমাবেশে মিলিত হয়ে সরকারের ‘প্রহসনের' নির্বাচনকে ‘না' বলতে এবং গণতন্ত্র ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনকে ‘হ্যাঁ' বলার আহ্বান জানান৷ খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘এ দেশে আমরা গণতন্ত্র এনেছি, আবারো গণতন্ত্র আনব এবং ইনশাল্লাহ সেদিন বেশি দূরে নয়, বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত৷
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘জননিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে'' সমাবেশের অনুমতি না দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷
বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক শামিমুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ডিএমপি কমিশনারের কাছে তাঁরা দু'টি চিঠি দিয়েছেন৷ একটি চিঠিতে ২৯ ডিসেম্বর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জমায়েতে খালেদা জিয়া ও দলীয় নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং অপর চিঠিতে মাইক ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হয়েছে৷ কিন্তু অনুমতি না দেয়া দুঃখজনক৷
কর্মসূচিতে যোগ দিতে সারা দেশ থেকে দল-মত, শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সক্ষম নাগরিকদের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা হাতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন খালেদা জিয়া৷ কর্মসূচিতে বাধা না দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া আগে বলেছিলেন, জনতার এই অভিযাত্রায় বাধা দেবেন না৷ যানবাহন, হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ করবেন না৷ নির্যাতন, গ্রেপ্তার, হয়রানির অপচেষ্টা করবেন না৷ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে বাধা এলে জনগণ তা মোকাবিলা করবে৷
প্রসঙ্গত, পাঁচ দফা টানা অবরোধের পর খালেদা জিয়া গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি' কর্মসূচি ঘোষণা করেন৷ ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে ‘প্রহসনের ভোট' আখ্যায়িত করে তা প্রতিহতের জন্য সবাইকে রবিবার ঢাকায় সমবেত হতে বলেন তিনি৷ পরদিন বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল নয়া পল্টনে সমাবেশের অনুমতি ও সহযোগিতা চেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে আবেদন করে৷ সমাবেশ করতে বাধা দিলে পরিণতি ভাল হবে না বলে সরকারকে সতর্কও করেন খালেদা জিয়া৷ এদিকে টানা হরতাল অবরোধে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ও ব্যাপক নাশকতার পর বিরোধী দলের এই নতুন কর্মসূচি নিয়ে জনমনে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়৷ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে যৌথ অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, যাতে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গণ গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ৷ বিভিন্ন স্থানে বাস-লঞ্চ বন্ধ রেখে নেতাকর্মীদের ঢাকা আসার পথে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন বিএনপি নেতারা৷
ঢাকামুখী যান চলাচল বন্ধ
শুক্রবার দুপুরের পর থেকে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে ঢাকামুখী যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে৷ কেউ যাতে কর্মসূচিতে যোগ দিতে না পারে সে কারণে সরকারের নির্দেশে ঢাকার দিকে কোনো যানবাহন যাচ্ছে না, বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা৷ এমনকি বরিশাল থেকে লঞ্চও ঢাকার দিকে যাচ্ছে না৷ তারপরও বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে সমাবেশে যোগ দিতে রওনা দিয়েছেন বলে বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন৷