‘গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে’
১ জানুয়ারি ২০১৯একইসঙ্গে তাঁরা নির্বাচন নিয়ে তাঁদের মূল্যায়ন তুলে ধরেন৷ সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির বলেন, ‘‘আজকে যদি নির্বাচনের পরে কোনো সহিংসতা হতো, বা বাচ্চারা বই নিতে যেতে না পারতো, তাহলে একটা প্রশ্ন উঠত৷ তা কিন্তু হয়নি৷''
ঢাকা বিশ্ববিদ্যা্লয়ের পপুলেশন্স সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমার বিবেচনায় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে৷ এর কতগুলো দিক অবশ্য রয়েছে৷ নির্বাচনে প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে কাজ করেছে কিনা তা দেখার বিষয়৷ আমি যখন ভোট দিতে যাই, সেখানে বিরোধী দলের পোলিং এজেন্ট দেখিনি৷ সতের জন প্রার্থী৷ মাত্র দুই জন উপস্থিত ছিলেন পোলিং এজেন্ট৷''
তবে তিনি মনে করেন, এর মাধ্যমে পুরো বাংলাদেশকে সরলীকরণ করা হয়তো যাবে না৷ এ বিষয়ে ডিবিসি'র প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘জনগণ যখন দেখে একটি দলের নেতৃবৃন্দ বলেন, তারা নির্বাচনে যাবেন কিনা বা শেষ পর্যন্ত থাকবেন কিনা, এসব নিয়ে যখন দ্বন্দ্ব, তখনই তাঁদের কর্মী, এজেন্ট পাওয়া যায় না৷''
<iframe src="https://www.facebook.com/plugins/video.php?href=https%3A%2F%2Fwww.facebook.com%2Fdw.bengali%2Fvideos%2F819770235081658%2F&show_text=0&width=560" width="560" height="315" style="border:none;overflow:hidden" scrolling="no" frameborder="0" allowTransparency="true" allowFullScreen="true"></iframe>
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সাইফুল আলম চৌধুরী মনে করেন, যতগুলো অনিয়মের অভিযোগ এসেছে বা ছবি প্রচারিত হয়েছে, সেগুলো মিডিয়া যথাযথভাবে কাজ করতে পেরেছে বলেই হয়েছে৷
সাইফুল বলেন, ‘‘মিডিয়া যদি রোল প্লে না করতে পারতো, তাহলে এই বিষয়গুলো আসত না৷ ভোটাররা তাঁদের ভোট দিতে পেরেছেন৷ বাংলাদেশের ইতিহাসে বিজিত দল কখনো বলেনি, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে৷ আবার বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়নি৷ ৪০ হাজার কেন্দ্রের মধ্যে ২২টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করতে হয়েছে৷''
তিনি মনে করেন, নেতৃত্বের সংকটের কারণেই ভুগেছে ঐক্যফ্রন্ট৷ আগামী সরকারের কাছে গনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো শক্তিশালী করা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা ও অবাধ তথ্য প্রবাহের সুযোগ তৈরির প্রত্যাশা করেন বক্তারা৷ মোহাম্মদ জমির বলেন, ‘‘নিরাপত্তা বলয়, চলাচলের সুবিধা, সব জায়গায় দায়বদ্ধতা থাকবে, এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে৷''
বক্তারা সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের উদ্দেশ্যে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন৷
মোহাম্মদ জমির বলেন, “সাধারণ নাগরিক হিসাবে আমি আশা করব, সুশাসন প্রক্রিয়া, স্বচ্ছ প্রক্রিয়া ও দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হবে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে৷”
সংসদকে আরো কার্যকর করতে কোনো সংসদ সদস্যের উপস্থিতি ৯০ দিনে কমপক্ষে একদিন থেকে কমিয়ে ৩০ দিনে একদিন করার পরামর্শ দেন তিনি৷
তথ্য অধিকার আইনের প্রয়োগ বাড়িয়ে সাবেক এই প্রধান তথ্য কমিশনার বলেন, “যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন- তার নিজের, স্ত্রী, সন্তান, স্বামী, ভাই, বাবা-মায়ের সম্পত্তির হিসাব অনলাইনে থাকবে। তাহলে তিনি সম্পদ অর্জন করছেন কীভাবে এবং আয় কর দিচ্ছেন কি না, এসব বিষয় বেরিয়ে আসবে।”
মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনৈতিক-সামাজিক কাঠামা সামগ্রিকভাবে সব উন্নয়নের মাত্রায় এগিয়েছে৷ এখন মানুষের মনে সুশাসন ও দুর্নীতিমুক্ত একটা ব্যবস্থাপনা তৈরি করা এবং গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে, যার মধ্য দিয়ে আমাদের এই আলোচনা করতে হবে না, নির্বাচন কমিশন ভালো, না তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভালো৷”
কোনো ব্যক্তি নয়, দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন অধ্যাপক মঈনুল ইসলাম৷ তিনি বলেন, ‘‘এমপিরা কোনো ব্যক্তির তোষামোদ করবেন না৷ সত্য কথাগুলো অকপটে বলতে হবে৷ সংসদে জনগণের কথাগুলো বলতে হবে৷”
প্রার্থী মনোনয়নে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড ঠিক করার আহ্বানও জানান তিনি৷
‘‘জনগণের প্রয়োজনগুলো, তাদের চাহিদাগুলো এবং প্রতিষ্ঠানগুলো ফাংশনিং করছে কি না- সে জিনিসগুলোর সুসমালোচনা করতে হবে৷’’