1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্লগারের কারাদণ্ড

৮ মার্চ ২০১৪

মাত্র আধাবেলা শুনানি শেষে এক ব্লগারকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ভিয়েতনামের একটি আদালত৷ গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার ‘অপব্যবহারের' দায়ে অভিযুক্ত হওয়ায় তুরুং দু নাথকে এই শাস্তি দেয়া হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/1BLiD
ছবি: picture-alliance/dpa

নাথের আইনজীবী ট্রান ভ্যু হাই জানান, আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন তুরুং দু নাথ৷ কিন্তু ভিয়েতনামের ‘পেনাল কোড' বা দণ্ডবিধির ২৫৮ ধারায় ঐ ব্লগারকে অভিযুক্ত করা হয়৷ গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার অপব্যবহারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের স্বার্থ বিরোধী কিছু করা হলে এই ধারায় বিচার করা হয়৷ এই বিষয়ে হাই বলেন, ‘‘আমি প্রসিকিউশনের কাছে রাষ্ট্রের স্বার্থ বলতে কি বোঝানো হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলাম৷ তাঁরা উত্তরে বলেছেন, নাথের ব্লগে কমিউনিস্ট পার্টি তথা ক্ষমতাসীন দলের ভাবমূর্তি এবং নিয়মনীতিকে বিকৃত করা হয়েছে৷''

হাই অবশ্য জানান, ভিয়েতনামের সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রের মালিক জনগণ এবং জনগণের জন্যই রাষ্ট্র৷ সেখানে কমিউনিস্ট পার্টির স্বার্থের কথা কিছু বলা হয়নি৷ তিনি আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সেদেশের প্রেসিডেন্টের কাছে আপিল করা হবে বলে জানান৷

গত মে মাসে গ্রেপ্তার হওয়ার সময় নাথের বয়স ছিল ৪৯ বছর৷ ‘আরেক দৃষ্টিকোণ' শীর্ষক তাঁর ব্লগে ভিয়েতনামের শীর্ষ নেতাদের সমালোচনামূলক বেশ কয়েকটি নিবন্ধ রয়েছে৷

ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী নুইয়েন তান ডুং এবং কমিউনিস্ট পার্টি প্রধান নুইয়েন ফু ত্রং-এর পদত্যাগ দাবি করে ব্লগে এক নিবন্ধ প্রকাশের পরপরই গ্রেপ্তার হন তিনি৷ ডানাং-এর বাড়ি থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ৷

Vietnam Blogger Pham Viet Dao Archiv 2012
ভিয়েতনামের ব্লগার ফাম ভিয়েত দাও-কেও গ্রেপ্তার করা হয়ছবি: Reuters

২০১১ সালে সাংবাদিকতা ছেড়ে পুরোপুরি ব্লগার হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর আলোচনায় আসেন নাথ৷ গত মঙ্গলবার আদালতে যখন তাঁর বিচার চলছিল, তখন তাঁর মুক্তির দাবিতে অনলাইনে বিভিন্ন ছবি প্রকাশ করেন অ্যাক্টিভিস্টরা৷ এছাড়া নাথের সমর্থনে ডানাং-এর আদালত প্রাঙ্গনেও হাজির হন অনেক সাংবাদিক৷

মে নাম নামে ব্লগ লেখা এক ব্লগার জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ-কে বলেন, ‘‘শুনানি চলাকালে অসংখ্য পুলিশ আদালত চত্বর ঘিরে রেখেছিল৷ নাথের স্ত্রী এবং সন্তানদের ছাড়া অন্য কাউকে বিচারকক্ষে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি৷''

এই নারী ব্লগার বলেন, ‘‘যাঁরা ব্লগ কিংবা ফেসবুকে সরকারের নীতি এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের সমালোচনা করেন, তাঁদের জন্য নাথের শাস্তি এক সতর্ক বার্তা৷''

প্রসঙ্গত, ভিয়েতনামে প্রচলিত ‘আর্টিকেল ২৫৮'-কে ‘অস্পষ্ট বিধান' হিসেবে আখ্যা দিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷ এই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা মনে করে, বিধানটির মাধ্যমে কার্যত শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের সমালোচনাকারীদের নিয়মিত বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে৷ এধরনের কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসতে ভিয়েতনাম সরকারে প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়৷

উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকে ভিয়েতনামে অনলাইনে সরকারের সমালোচনামূলক লেখালেখি বেড়ে গেছে৷ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিচিত ভিয়েতনামে আর্থিক মন্দা দেখা দেওয়ায় এসব লেখালিখে বেড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ ব্লগাররা এই মন্দার পেছনে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী নুইয়েন তান ডুং-এর স্বজনপ্রীতি এবং অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন৷ তবে প্রধানমন্ত্রী এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৷

এআই/ডিজি (ডিপিএ, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য