1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পর্যবেক্ষণে বিএনপি

সমীর কুমার দে ঢাকা
৬ এপ্রিল ২০১৯

দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন গণফোরামের দুই নির্বাচিত সংসদ৷ ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক বিএনপি এই শপথকে কিভাবে দেখছে? ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাই বা কী?

https://p.dw.com/p/3GP0z
ছবি: bdnews24.com

ডয়চে ভেলের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির অন্যতম নীতিনির্ধারক স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘‘আমরা পর্যবেক্ষণ করছি, সময় হলেই সিদ্ধান্ত নেব৷'' তবে, দুই এমপির শপথে বিব্রত গণফোরাম৷

‘তারা দু'জনই দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নিয়েছেন’

দল ও জোটের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গত ৭ মার্চ প্রথমে শপথ নেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ৷ গণফোরাম থেকে মনোনয়ন নিয়ে মনসুর মৌলভীবাজার-২ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত হন৷ শপথ নেয়ার দিন বিকালেই গণফোরাম থেকে মনসুরকে বহিষ্কার করা হয়৷ এরপর ২ এপ্রিল শপথ নেন সিলেট-২ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান৷ তাঁকেও বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে গণফোরাম৷ 

শপথ নেওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার মোকাব্বির খান ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে গেলে তাঁকে ধমক দিয়ে ‘গেট আউট' বলে সেখান থেকে বের করে দেয়া হয়৷ ওই দিন রাতে গণফোরাম সাধারন সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মোকাব্বির খানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে গণফোরাম৷ প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান এর শপথ নেয়ার বিষয়ে গণফোরাম সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কিছুই অবগত নয়৷ 

ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, ‘‘তারা দু'জনই দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নিয়েছেন৷ তাদের সংগঠন ও আদর্শবিরোধী কার্যকলাপে গণফোরাম মর্মাহত৷ আমরা গণফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্যরা খুব তাড়াতাড়ি বসে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো৷ মোকাব্বির খানকে দল থেকে অবশ্যই বহিষ্কার করা হবেঅ''

ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম প্রধান শরীক বিএনপি বিষয়টা কিভাবে দেখছে, জানতে চাইলে জনাব মন্টু বলেন, ‘‘আমি নিজে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে কথা বলেছি, তাঁকে পুরো বিষয় অবহিত করেছি৷ আমরা আশা করছি তারা ভুল বুঝবেন না৷ তবে সামনেই আমরা তাঁর সঙ্গে বসে বিষয়টা জানাব৷''

এদিকে, মোকাব্বির খানকে বহিষ্কার করা হলে তিনি তাঁর পক্ষে যে কয়জন নেতা আছেন তাদেরকে নিয়ে আলাদা গণফোরাম করবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমি ২৬ বছর ধরে গণফোরাম করি৷ আমাকে বহিষ্কার করা হলে আওয়ামী লীগে যোগদান করবো না৷ কারন তারা মুখে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বলে তবে নিজেরা সেটা ধারন করে না৷ আমি বঙ্গবন্ধুর মূল চেতনা ধারন করি৷ বিএনপিতেও যাবো না৷ আমি গণফোরামই করবো৷''

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই বিষয়ে বলেন, ‘‘আমাদের জোটের সিদ্ধান্ত এমপি হিসেবে শপথ না নেওয়ার৷ তারপরও দেখলাম গণফোরামের দুইজন এমপি তারা শপথ নিলেন৷ একজনের বিষয়ে গণফোরাম ব্যবস্থা নিয়েছে, অন্যজনের ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি৷ এদের ব্যাপারে তাদের দলের ভূমিকা কি হয় তা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি, সময় হলেই বিএনপি সিদ্ধান্ত নেবে৷''

এদিকে, বিএনপির নির্বাচিত ছয় সংসদ সদস্যের কারো কারো সংসদে যোগদানের আগ্রহ থাকলেও কামাল হোসেনের সর্বশেষ অবস্থানে তা কিছুটা চাপের মুখে পড়ল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷ কারণ গণফোরামের দু'জনের সংসদে যাওয়ার পথ ধরেই বিএনপির সংসদ সদস্যরাও যেতে আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন৷ তাদের সেই আগ্রহের সঙ্গেই তৈরি হয়েছে নানা আলোচনা৷ বিএনপির সংসদে যোগদানের সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তি নির্ভর করছে বলেও গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে বিএনপির ভেতরে-বাইরে৷ কেউ কেউ এমন গুঞ্জনের সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের যোগসূত্র থাকতে পারে বলেও সংশয় প্রকাশ করেছেন৷

তবে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইতিমধ্যে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘সংসদে যাওয়া নিয়ে বিএনপির মধ্যে কোনো আলোচনা নেই৷ কারণ আমরা ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছি৷'' 

‘আমাদের জোটের সিদ্ধান্ত এমপি হিসেবে শপথ না নেওয়ার’

তিনি বলেন, ‘‘ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্তের বাইরে সংসদে যোগদানকারীরা বেঈমান৷ তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে৷''

‘‘খালেদার প্যারোল বিবেচনা করবে সরকার''

উল্লেখ্য, শনিবার জামালপুরে একটি অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘‘প্যারোলে যদি কাউকে মুক্তি দিতে হয়, তাহলে সুনির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে আবেদন করতে হয়৷ কিন্তু খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির ব্যাপারে কোনও আবেদন পায়নি সরকার৷ খালেদা জিয়া প্যারোলের আবেদন করলে বিষয়টি বিবেচনা করবে সরকার৷''