1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘গন্ডোয়ানাল্যান্ড’-এর ‘মিসিং লিংক’ পাওয়া গেল

১৭ নভেম্বর ২০১১

গন্ডোয়ানা বা ‘গন্ডোয়ানাল্যান্ড’ আদতে একটি প্রাচীন বৃহদমহাদেশের নাম৷ দক্ষিণ গোলার্ধের অধিকাংশ ভূভাগই এক সময় ঐ মহাদেশের অন্তর্গত ছিল৷ সম্প্রতি শোনা গেল, অস্ট্রেলিয়ায় নাকি গন্ডোয়ানার একটি অংশ পাওয়া গেছে৷ বিশ্বাস হচ্ছে না?

https://p.dw.com/p/13CP6
প্রাগৈতিহাসিক যুগে কেমন ছিল গন্ডোয়ানাল্যান্ড?ছবি: CC/Namibnat

ভারত মহাসাগরের তলদেশে বেশ কয়েক বছর যাবত গবেষণা চালাচ্ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা৷ পৃথিবী কীভাবে তৈরি হচ্ছে, কীভাবে মহাদেশগুলির ভাগ হয়েছে – এসবই ছিল তাঁদের গবেষণায়৷ বৃহস্পতিবার, হঠাৎ করেই মিললো এক নতুন সত্যের সন্ধান৷

অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের পশ্চিম দিকে, সাগরতলের প্রায় ১,৬০০ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত দু-দুটি দ্বীপের মাটি-পাথর পরীক্ষা করে স্তম্ভিত তাঁরা৷ সেই মাটিতে যে জীবাশ্ম পাওয়া গেছে – তাতে রয়েছে উভচর এবং ঘোলা জলে বসবাসকারী জীবজন্তুর ছাপ৷ অর্থাৎ, দ্বীপ দুটো এক সময় সমুদ্রতলের ওপরে অবস্থান করতো, সমুদ্রগভীরের অগ্ন্যুৎপাতের কারণে এদের সৃষ্টি হয়নি কোনোভাবেই! একথা বেশ স্পষ্ট করেই জানালেন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ জো উইটেকার৷ বললেন, ‘‘চমকপ্রদ এই আবিষ্কারের ফলে এবার আমরা জানতে পারবো ৮০ থেকে ১৩০ মিলিয়ন বছর আগে ঠিক কীভাবে গন্ডোয়ানাল্যান্ড ভেঙে অস্ট্রেলিয়া, অ্যান্টার্কটিকা এবং ভারতবর্ষ সৃষ্টি হয়েছিল৷''

Panama Landbrücke FLASH-Galerie
ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অস্ট্রেলিয়া একসময় ‘ইউরেশিয়া'-তে গিয়ে আছড়ে পড়ে

বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রাগৈতিহাসিক কালে তিনটি মহা-মহাদেশের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়৷ এরা হলো – লাউরেশিয়া, গন্ডোয়ানা এবং প্যানজিয়া৷ তাঁদের কথায়, প্রায় ৫০ মিলিয়ন বছর আগে ‘আঙ্গারাল্যান্ড' আর ‘গন্ডোয়ানাল্যান্ড'-এর মধ্যবর্তী ‘টেথিস' সাগরের তলদেশে নিমজ্জিত ছিল বাংলাদেশসহ গোটা ভারতীয় উপমহাদেশ৷ আর একসময়, এই ‘আঙ্গারাল্যান্ড' এবং ‘গন্ডোয়ানাল্যান্ড'-এর সংঘর্ষের ফলে ভূ-ত্বক সৃষ্টিকারী ভূসঞ্চালনের মাধ্যমে সাগরের বুক চিরে জেগে ওঠে বিশ্বের কনিষ্ঠতম পর্বতমালা হিমালয়৷

এমনকি আজও সাগরতলের মহাদেশীয় প্লেটের বিরামহীন ধাক্কাধাক্কির ফলে পৃথিবীপৃষ্ঠে প্রত্যক্ষ হয় ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, জলোচ্ছ্বাস অথবা সুনামির মতো ঘটনা৷ অথচ এরপরও, ‘‘আমরা কিন্তু এতোদিন ভারত মহাসাগরের পূর্ব দিককার সৃষ্টি রহস্যের অনেক কিছুই জানতাম না৷ তাই আশা করছি এবার, ঐ প্লেটগুলি সম্পর্কে অবশেষে আমরা আরো জানতে পারবো৷ বুঝতে পারবো ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কীভাবে অস্ট্রেলিয়া একসময় ‘ইউরেশিয়া'-তে গিয়ে আছড়ে পড়েছিল৷'' জানান জো উইটেকার৷

Flash-Gallery Australien Red rock
মহাদেশীয় প্লেটের বিরামহীন ধাক্কাধাক্কির ফলে পৃথিবীপৃষ্ঠে আজও প্রত্যক্ষ ভূমিকম্প অথবা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতছবি: AP

তিনি বলেন, ‘‘সমুদ্রগর্ভের প্রায় ২,০০০ মিটার (৬,৬০০ ফুট) নীচ থেকে যে সমস্ত ‘স্যান্ডস্টোন' আর ‘গ্র্যানাইট' উঠে এসেছে, আমাদের ধারণা তা অন্ততপক্ষে এক বিলিয়ন বছরের পুরোনো৷ তাই এবার অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম তীরের মাটির সঙ্গে এগুলোর একটা তুলনা করে দেখতে হবে – ঠিক কবে ‘গন্ডোয়ানাল্যান্ড' থেকে ভেঙে বেরিয়ে আসে মহাদেশটি৷ সেটাই হবে আমাদের পরবর্তী গবেষণার মূল বিষয়৷''

প্রসঙ্গত, গন্ডোয়ানা কথাটির উৎপত্তি সংস্কৃত শব্দ ‘গন্দবন' থেকে৷ আকারে ‘গন্ডোয়ানাল্যান্ড' ছিল আধুনিককালের দক্ষিণ গোলার্ধসহ কুমেরু, দক্ষিণ অ্যামেরিকা, আফ্রিকা, মাদাগাস্কার, অস্ট্রেলিয়া, আরব উপদ্বীপ এবং ভারতীয় উপমহাদেশ নিয়ে এক বৃহতাকার মহাদেশ৷

প্রতিবেদন: দেবারতি গুহ

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান