গর্ভকালীন অবস্থায় কিছু ভুল ধারণা
বাংলাদেশ ও ভারতে গর্ভাবস্থায় নারীদের ডাক্তারের চেয়েও বেশি শুনতে হয় দাদি-নানি, মা-শ্বাশুড়ি ও আত্মীয় স্বজনের কথা৷ নানা ধরনের কুসংস্কারের মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাঁদের৷ এ নিয়েই আজকের ছবিঘর৷
দু’জনের জন্য খেতে হবে
সবচেয়ে বেশি যে ধারণাটা প্রচলিত তা হলো – তুমি এখন আর একা নও৷ তাই দু’জনের সমান খেতে হবে৷ অথচ বাস্তবতা হলো, শিশু তো একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষ না৷ মা যা খায় সেই নির্যাস সে গ্রহণ করে৷ হ্যাঁ গর্ভাবস্থায় ক্ষুধা বেড়ে যায়, সেটা হরমোনের কারণে৷ একজন গর্ভবতী নারীর দিনে ৩০০ ক্যালোরি খাবার খাওয়া যথেষ্ট৷
দুধ, দই খেলে বাচ্চা হবে ফর্সা
বাংলাদেশ ও ভারতে মানুষ ভীষণ বর্ণবাদী৷ বাচ্চা কালো না ফর্সা হবে এটা তাদের ভীষণ চিন্তার বিষয়৷ তাই, দুধ, দইয়ের মতো সাদা খাবার বাচ্চার রং ফর্সা করবে – এমনটাই ধারণা করা হয়৷ অথচ বাচ্চা রঙ কেমন হবে তা নির্ভর করে বাবা-মায়ের জিনের উপর৷
ঘি খেলে প্রসব সহজ হয়
বিশেষজ্ঞদের মত, আপনি যা খাবেন তা পরিপাকতন্ত্রের মধ্য দিয়ে যাবে, প্রজনন তন্ত্রে প্রবেশ করবে না৷ তাই ঘি যতই খান তা ‘লুব্রিকেন্ট’ বা পিচ্ছিল পদার্থের কাজ করবে না৷
যৌন সম্পর্ক করা উচিত নয়
বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, গর্ভাবস্থায় একজন নারী যৌন মিলনের ততটাই আনন্দ নিতে পারেন, যতটা গর্ভধারণের আগে নিতে পারতেন৷ যৌন মিলনের ফলে শিশুর শরীরে কোনো খারাপ প্রভাব পড়ে না৷ বরং প্রসব সহজ করার ক্ষেত্রে যোনির একধরনের ব্যয়াম হয় এর মাধ্যমে৷
সুন্দর শিশুর ছবি দেখা
শিশুর বাবা-মায়ের জিনই ঠিক করবে সে কার মতো দেখতে হবে৷ তাই যতই সুন্দর সুন্দর বাচ্চার ছবি টাঙিয়ে রাখুন কোনো লাভ নেই৷
সিঁড়ি ভেঙো না
গর্ভধারণ কোনো অসুখ নয় যে সারাদিন আপনাকে শুয়ে বসে কাটাতে হবে৷ তাই আগে যেমন জীবন কাটাতেন তার ছন্দপতন যেন না হয়৷ আপনি যদি নিয়মিত ব্যয়াম করে থাকেন, এক্ষেত্রে সেটা শরীরের জন্য আরও ভালো৷
পেটের আকৃতি দেখে বলা ছেলে না মেয়ে
এটারও কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই৷ হ্যাঁ আপনার যদি পরীক্ষা-নীরিক্ষা করার এবং সময় কাটানোর ইচ্ছে থাকে, তাহলে অবশ্য ভিন্ন কথা!
মায়ের চেহারা দেখে বলা
বাংলায় একটা কথা আছে, ছেলের মা সুন্দরী, মেয়ের মা বান্দরী৷ অর্থাৎ পেটে ছেলে থাকলে মায়ের চেহারা খুব সুন্দর হয়ে যায়৷ আর যদি মেয়ে থাকে তাহলে নাকি খুব খারাপ হয় চেহারা৷ এর বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই৷ কেননা এটা হরমোনের ওপর নির্ভর করে৷
স্বাস্থ্যবান শিশুর জন্য প্রচুর খাওয়া
শিশু যাতে স্বাস্থ্যবান হয়, একথা ভেবে প্রচুর ঘি আর চিনি খাচ্ছেন? বাচ্চা হয়ত মোটা সোটা হবে, কিন্তু সেই সাথে ডায়বেটিসের সম্ভাবনাও দেখা দিতে পারে৷