শিশুদের প্রাণহানি নিয়ে উদ্বেগ
২৪ জুলাই ২০১৪মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং জাতিসংঘের শীর্ষ কূটনীতিকরা ইসরায়েল এবং হামাস জঙ্গিদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে৷ তবে এই উদ্যোগের মধ্যেই গত রাতে গাজায় ইসরায়েলি বিমান এবং গোলা হামলায় প্রাণ হারিয়েছে আরো ২১ ব্যক্তি৷
এদিকে কাতারে নির্বাসিত হামাস নেতা খালেদ মেশাল গাজার উপর আট বছর ধরে চলা ইসরায়েলি অবরোধ পুরোপুরি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন৷ আর এই দাবি পূরণ ছাড়া কোনো যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে না হামাস, জানান তিনি৷
ফিলিস্তিনের চিকিৎসকদের বরাতে ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফির খবর বলা হয়েছে, গাজায় নিহত ২১ জনের মধ্যে একই পরিবারের ছয় সদস্য রয়েছেন৷ সেখানে ১৭ দিন ধরে চলা রক্তপাতে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭১৮৷ অন্যদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার গাজায় প্রাণ হারিয়েছে সে দেশের তিনি সেনা৷ ফলে সব মিলিয়ে ইসরায়েলি সেনা নিহতের সংখ্যা এখন ৩২৷
এছাড়া গাজা থেকে ছোড়া রকেটে দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি গ্রিনহাউসের এক থাই শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছে৷
‘ভয়াবহ পরিস্থিতি,' বললেন আমোস
জাতিসংঘের মানব কল্যাণ এবং জরুরী ত্রাণ বিষয়ক আন্ডারসেক্রেটারি ভ্যালেরি আমোস টোকিওতে এক বৈঠকে গাজার পরিস্থিতিকে ‘ভয়ানক, ভয়াবহ' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘গত কয়েকদিনের সংঘাতে বেশি কিছু শিশু প্রাণ হারিয়েছে৷''
জাতিসংঘের প্রকাশিত হিসেবে অনুযায়ী, গাজায় নিহতদের মধ্যে ৭৪ শতাংশই বেসামরিক নাগরিক৷ এদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১২০ এর বেশি৷
যুদ্ধবিরতির চেষ্টা
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু অবশ্য বেসামরিক প্রাণহানির জন্য হামাসের কৌশলকে দায়ী করেছেন৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি তাঁর সঙ্গে দু'ঘণ্টা বৈঠক করেছেন৷ তবে বৈঠকের পর যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো পক্ষ থেকেই তেমন কোন ইঙ্গিত আসেনি৷
জেরুসালেমে কেরি জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন৷ তারা দু'জনই জানিয়েছেন, হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চলছে৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্যালেস্টাইনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গেও বৈঠকে অংশ নেন৷ অন্যদিকে, বান সম্ভবত সৌদি বাদশাহ আব্দুল্লাহ-র সঙ্গে কথা বলেছেন৷
এদিকে, গাজায় সুড়ঙ্গের একটি নেটওয়ার্ক উন্মুক্ত এবং ধ্বংসের পর ইসরায়েলি সেনারা এখন পরবর্তী অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোশে ইয়ালন৷
তবে তেল আভিভ অভিমুখে বিমান চলাচলের উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল মার্কিন এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এফএএ, তা বৃহস্পতিবার প্রত্যাহার করা হয়েছে৷ গাজা থেকে রকেট হামলার আশঙ্কায় বিমান চলাচলের উপর এই সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল মার্কিন কর্তৃপক্ষ৷ অবশ্য তারা নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নিলেও অন্যান্য অনেক আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা এখনও ইসরায়েলকে এড়িয়ে চলছে৷
এআই / এসবি (এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)