গাজার উপর ইসরায়েলি হামলা
৮ জুলাই ২০১৪২০১২ সালের অস্ত্রবিরতির পর গাজা থেকে ইসরায়েলের দক্ষিণে রকেট বৃষ্টি কার্যত বন্ধ ছিল৷ কিন্তু হামাস-নিয়ন্ত্রিত বিচ্ছিন্ন এই ভূখণ্ড থেকে আবার হামলা শুরু হয়েছে৷ শুধু সোমবারই ৮০টিরও বেশি হামলার কথা বলছে ইসরায়েলি বাহিনী৷ ফলে গত দুই মাসে হামলার সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেল৷ এই অবস্থায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকার মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছে৷ তাদেরকে বিশেষ সুরক্ষিত এলাকার আশেপাশে থাকার ডাক দেওয়া হয়েছে৷ ‘আয়রন ডোম' নামের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা ১২টি রকেট ধ্বংস করতে পেরেছে৷
সেইসঙ্গে শুরু হয়ে গেছে গাজার উপর হামলা৷ আকাশ ও সমুদ্রপথে প্রায় ৫০টি লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী৷ ফিলিস্তিনি সূত্র অনুযায়ী, মঙ্গলবার ভোরের দিকে প্রায় ৩০টি এলাকার উপর হামলা চালানো হয়৷ এর মধ্যে হামাসের দুই সদস্যের বাড়িও ছিল বলে জানা গেছে৷ মোট ন'জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে৷ ফিলিস্তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী একটি বাড়ির বাসিন্দাদের টেলিফোন করে আগাম সতর্ক করে দিয়েছিলেন এক ইসরায়েলি অফিসার৷ ফলে তারা সময়মতো বাড়ি ছেলে চলে যায়৷
উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে, এমন আশঙ্কায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সরাসরি গাজায় প্রবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ এক সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘অপারেশন প্রোটেক্টিভ এজ' নামের অভিযানের আওতায় বিষয়টি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা হচ্ছে৷ মোটকথা হামাস-এর হামলার ক্ষমতা কার্যত ধ্বংস করে দিতে বদ্ধপরিকর ইসরায়েল৷ ফলে এবারের অভিযান বহুদিন ধরে চলতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে সেনাবাহিনী৷ প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু-র নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার সাতজন সদস্য গভীর রাতে বৈঠক করেছেন৷ সম্প্রতি এই নিয়ে ৫ বার ‘সিকিউরিটি ক্যাবিনেট'-এর বৈঠক বসলো৷
হামাসের সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েলি হামলার জবাবে ‘ভূমিকম্প' ঘটানোর হুমকি দিয়েছে৷ তাদের মতে, বাড়িঘরের উপর হামলার মাধ্যমে সহ্যের সীমা অতিক্রম করেছে ইসরায়েল৷ ফলে হামাস আরও দূরপাল্লার রকেট হামলার হুমকি দিয়েছে৷ তাদের কাছে প্রায় ১০,০০০ রকেট রয়েছে বলে মনে করে ইসরায়েলি বাহিনী৷ কিছু রকেট এমনকি তেল আভিভ ছাড়িয়ে আরও দূর পর্যন্ত যেতে পারে৷
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ফাতাহ ও হামাস সমর্থিত এক জাতীয় ঐক্য সরকার গঠন করার পর যখন কিছুটা শান্তির আশা দেখা দিচ্ছিলো, ঠিক তখনই তিনজন ইসরায়েলি তরুণের অপহরণ ও হত্যা নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি করে৷ ইসরায়েল সরাসরি হামাসকেই এই ঘটনার জন্য দায়ী করে৷ এক ফিলিস্তিনি কিশোরকেও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়৷ গাজার এক সুড়ঙ্গের মধ্যে ধস নেমে সাতজন হামাস যোদ্ধার মৃত্যু হয়৷ হামাস ইসরায়েলি বিমান হামলাকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করে৷ তার পর থেকেই গাজা থেকে রকেট হামলা শুরু হয়েছে৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, ডিপিএ, এপি)