গুলিবিদ্ধ স্লোভাক প্রধানমন্ত্রীর অস্ত্রোপচার
১৬ মে ২০২৪তবে তার বিপদ এখনো কাটেনি। তাকে লক্ষ্য করে পাঁচটি গুলি ছোড়া হয়। ফিকোর অফিস জানিয়েছে, তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।
সরকার জানিয়েছে, ''হ্যান্ডলোভাতে সরকারি বৈঠকের পর স্লোভাক রিপাবলিকের প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোকে হত্যার চেষ্টা করা হয়।''
স্থানীয় ব্রডকাস্টার টিএ৩ জানিয়েছে, পাঁচটি গুলি ছোড়া হয়েছিল, তার মধ্যে একটি ফিকোর পেটে লেগেছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ফিকোর দেহরক্ষীরা তাকে গাড়ির ভিতর ঢুকিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং পুলিশ হামলাকারীকে চিহ্নিত করছে।
বার্তাসংস্থা এএফপি-কে হাসপাতালের ডিরেক্টর জানিয়েছেন, ''ফিকোকে ভাসকুলার সার্জারি ক্লিনিকে চিকিৎসা করা হচ্ছে।''
অস্ত্রোপচার ভালো হয়েছে
উপ-প্রধানমন্ত্রী টমাস টারাবা বিবিসি-কে বলেছেন, ''ফিকোর অস্ত্রোপচার ভালো হয়েছে।'' তিনি জানিয়েছেন, ''আমি ভয়ংকর কষ্টের মধ্যে আছি। সৌভাগ্যক্রমে অপারেশন ভালো হয়েছে। আমার মনে হয়, তিনি বেঁচে যাবেন। এই মুহূর্তে তার জীবনের ঝুঁকি নেই বলেই মনে হয়।''
স্লোভাক মিডিয়া জানিয়েছে, অপারেশনের পর ফিকো জ্ঞান ফিরে পেয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় স্লোভাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট কালিনাক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ''প্রধানমন্ত্রী জীবনের জন্য যুদ্ধ করছেন। তার অবস্থা সংকটজনক।''
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই আক্রমণের পিছনে রাজনৈতিক কারণ আছে।
গুলিচালনা নিয়ে যা জানা গেছে
ব্রাতিস্লাভা থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরের ছোট শহর হ্যান্ডলোভাতে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় হাউস অফ কালচারে প্রধানমন্ত্রী তার সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ''আমি তার সঙ্গে হাত মেলাতে যাচ্ছিলাম। এমন সময় পাঁচবার গুলির আওয়াজ শুনি। দেখি তিনি পড়ে গেছেন। ভয়ংকর ঘটনা।''
আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ''হামলাকারী গোড়া থেকেই ওখানে দাঁড়িয়েছিল। সে অপেক্ষা করছিল।''
অভিযুক্ত স্লোভাক সোসাইটি অফ রাইটারসের সদস্য এবং তার তিনটি কবিতার বই আছে।
পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার জানিয়েছেন, ''পার্লামেন্টের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি হয়ে গেছে।''
বুধবার সন্ধ্যায় সবচেয়ে বড় বিরোধী দলের সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ছিল। কিন্তু তারা তা বাতিল করে দেয়।
বিশ্বনেতাদের নিন্দা
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেছেন, ''সভ্য সমাজে এই ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এটা গণতন্ত্রের উপর আঘাত।''
জার্মানির চ্যান্সেলর শলৎস বলেছেন, ''ইউরোপীয় রাজনীতিতে সহিংসতার কোনো স্থান নেই।'' হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বলেছেন, ''আমি শোকাহত। এটা একটা জঘন্য আক্রমণ।''
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ফিকোকে তাদের শুভকামনা জানিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন এই ঘটনার নিন্দা করে বলেছেন, ''মার্কিন দূতাবাস স্লোভাক সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তারা যে কোনো সাহায্য করতে প্রস্তুত।''
কে এই ফিকো?
ফিকোই সবচেয়ে বেশিদিন স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদে আছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন।
তার দল ডাইরেকশন- সোস্যাল ডেমোক্রেসি ২৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। তিনি তারপর ভয়েস-সোস্যাল ডেমোক্রেসি এবং রাশিয়াপন্থি স্লোভাক ন্যাশনাল পার্টির সঙ্গে জোট করেন।
গত তিন দশক ধরে ফিকো ইউরোপের মূল ধারার রাজনীতি ও জাতীয়তাবাদী অবস্থানের মধ্যে ঘোরাফেরাকরেছেন। স্লোভাকিয়া যখন ইউরোকে গ্রহণ করছে, তখন তিনি তাকে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত বলে স্বাগত জানান। আবার সম্প্রতি নির্বাচনী প্রচারে তিনি অতি-বাম ও অতি-দক্ষিণপন্থিদের সমর্থন পাওয়ার জন্য ইউক্রেন, ইইউ, ন্যাটোর বিরোধিতা করেছেন।
জিএইচ/এসজি(রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)