1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে প্রশ্ন

২৪ মে ২০১৭

চলতি মাসে তিনটি জঙ্গিবিরোধী অভিযানে র‌্যাব-পুলিশের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ প্রশ্ন উঠেছে, গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে৷ বিশ্লেষকরা বলছেন, অভিযানে সাফল্যের কৃতিত্ব নিতে কোনো অনাকাঙ্খিত প্রতিযোগিতা হচ্ছে কিনা তা-ও দেখা দরকার৷

https://p.dw.com/p/2dViq
Bangladesch Polizei in Auseinandersetzung mit mutmaßlichen Islamisten
ছবি: Getty Images/AFP/Str

বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জে মঙ্গলবার গভীর রাতে শুরু হওয়া র‌্যাবের জঙ্গিবিরোধী অভিযান বুধবার সকাল ১১টার দিকে শেষ হয়েছে৷ চাঁপাইনবাবগঞ্জের র‌্যাব-৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলমের দাবি, তারা নব্য জেএমবি'র তিন সদস্যকে আটক করেছেন৷ তাদের কাছে ৪টি বিদেশি পিস্তল, একটি খেলনা পিস্তল, ১২ রাউন্ড গুলি, তিনটি ম্যাগাজিন, একটি কার্তুজ ও তিন কেজি গানপাউডার উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি৷ এর আগে আরো একজনকে আটক করে র‌্যাব৷

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল ও গোমস্তাপুর উপজেলায় এই অভিযানে চারটি বাড়ি ঘেরাও করা হয়৷ এর মধ্যে তিনটিতে র‌্যাব কোনো বোমা বিস্ফোরক, আগোনয়াস্ত্র বা নাশকতামূল্য কাজে ব্যবহারযোগ্য কিছু পায়নি৷

এর আগে গত ২০ ও ২১ মে নরসিংদির একটি বাড়ি ঘিরে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালায় র‌্যাব৷ ওই অভিযানে সাত জনকে আটক করা হলেও পরে তিন জনকে ছেড়ে দেয়া হয়৷ অভিযানে কোনো ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র বা বোমা বিস্ফোরক উদ্ধার হয়নি৷ আটকদের স্বজনরা দাবি করেছেন, তারা মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষক৷ র‌্যাব অবশ্য এখনো আটকরা জঙ্গি কিনা তা তদন্ত করে দেখছে৷

আর ১২ মে রাজশাহীর গোদাগাড়ি এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে জেলা পুলিশ এক জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায়৷ সেখানে মাটির দেয়াল দেয়া ঘরে অবস্থানরত জঙ্গিদের অবস্থা জানতে পুলিশ কোনোরকম নিরাপত্তা ছাড়াই ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ জন কর্মীকে দেয়ালে পানি দেয়ার কাজে নিয়োজিত করে৷ আর জঙ্গিরা তখন বাইরে এসে আব্দুল মতিন নামে এক ফায়ার সার্ভিস কর্মীকৈ কুপিয়ে হত্যা করে৷ এই ঘটনা নিয়ে পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগের তদন্ত চলছে৷

সম্প্রতি কয়েকটি জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গোয়েন্দা তথ্যের ঘাটতি স্পষ্ট: নূর খান

গত বছরের ১ জুলাই হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম টিম গঠন করা হয়৷ আর অভিযানের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষিত টিম সোয়াট কাজ করছে৷ এই টিমগুলো হোলি আর্টিজানের পর জঙ্গিবিরোধী অভিযানে সাফল্য পায়৷ চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নরসিংদী ও রাজশাহীতে তাদের কাজে লাগানো হয়নি৷

গত মার্চে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলকার আতিয়ামহলে অভিযান চলাকালেই ২৫ মার্চ পাশের জনবহুল এলাকায় জঙ্গিরা দু' দফা হামলা চালালে পাঁচজন নিহত হন৷ তাদের মধ্যে র‌্যাব পুলিশের কর্মকর্তাও রয়েছেন৷ এখানেও গোয়েন্দা তথ্যের ঘাটতি এবং অভিযানে দীর্ঘ সময় নেয়ার সমালোচনা  হয়৷

মানবাধিকার কর্মী এবং জঙ্গিবাদ বিষয়ক গবেষক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সম্প্রতি কয়েকটি জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গোয়েন্দা তথ্যের ঘাটতি স্পষ্ট৷ আমার মনে হয়, সঠিক গোয়েন্দা তথ্য ছাড়াই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন বিভাগ নিজেদের মধ্যে অনাকাঙ্খিত প্রতিযোগিতার কারণে এই ধরণের অভিযান চালাচ্ছে৷’’

এটা অবশ্যই গোয়েন্দা ব্যর্থতা: আব্দুর রশীদ

তিনি বলেন, ‘‘এর ফলে জনমনে জঙ্গিবিরোধী অভিযান নিয়ে আস্থার সংকট হতে পারে৷ সাধারণ মানুষ বিপদে পড়তে পারেন৷ নরসিংদীতে যদি আটকদের পরিবারের সদস্যরা এবং সংবাদ মাধ্যম এগিয়ে না আসতো, তাহলে ঘটনা দু:খজনক হতে পারত৷’’

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল আব্দুর রশীদ (অব.) ডয়চে ভেলেক বলেন, ‘‘এটা অবশ্যই গোয়েন্দা ব্যর্থতা৷ জঙ্গিবিরোধী অভিযান সঠিক এবং সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে না হলে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হতে পারে৷ আর একটা অভিযান অনেক জনবল নিয়োগ ও অনেক খরচেরও ব্যাপার৷’’

তবে মেজর জেনারেল আব্দুর রশীদ (অব.) আরো বলেন, ‘‘এটা কৌশলও হতে পারে যে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে যাদের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা পাওয় যাবে, তাদের আটক রাখা হবে৷ বাকিদের ছেড়ে দেয়া হবে৷ কিন্তু সেটা বারবার হতে পারে না৷’’

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...