গ্রিস-তুরস্কে শক্তিশালী ভূমিকম্প
২১ জুলাই ২০১৭গ্রিসের কস দ্বীপে ধ্বংসস্তূপে কেউ আটকা পড়েছে কিনা, খুঁজে বেড়াচ্ছেন উদ্ধারকারীরা৷ শুক্রবারের এই ভূমিকম্পে দু'জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১২০ জন৷ ৬ দশমিক ৭ মাত্রার এ ভূমিকম্পে অন্তত একটি ভবন ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে৷ দ্বীপটির বন্দর এবং বন্দরের প্রবেশমুখে ১৪ শতকের একটি দুর্গ এবং একটি মসজিদ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
গ্রিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিহতদের একজন সুইডেন এবং একজন তুরস্কের নাগরিক৷ রাতেও ব্যস্ত থাকে এমন একটি এলাকায় ভূমিকম্পের ফলে খসে পড়া দেয়ালের টুকরোর আঘাতে তাঁরা ঘটনাস্থলেই মারা যান৷
ভূমিকম্পে ছোট একটি সুনামি সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয়দের সতর্ক করেছে প্যারিস-ভিত্তিক ইউরোপিয়ান-ম্যাডিটারিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার বা ইএমএসসি৷ সতর্কতা থাকা অবস্থায় কাউকে সমুদ্রসৈকতে না যাওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি৷ এদিকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে উঠে এসেছে দ্বীপটির পানিতে ডুবে রাস্তার চিত্র৷
স্থানীয় সময় রাত দেড়টায় আঘাত হানে ভূমিকম্প৷ ইউএস জিওলজিকাল সার্ভে বা ইউএসজিএস বলছে, তুরস্কের বোদ্রুম শহর থেকে ১০ দশমিক ৩ কিলোমিটার (৬ দশমিক ৪ মাইল) দক্ষিণে এবং কস শহর থেকে ১৬ দশমিক ২ কিলোমিটার পূর্বে ছিল এর উৎপত্তিস্থল৷
মা ও বোনকে নিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে ঘুরতে এসেছেন ২০ বছরের লরেন ড্যাফি৷ বার্তাসংস্থা এপিকে তিনি জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পর হোটেল আটলান্টিস জুড়ে ছিলো ভাঙা কাঁচের টুকরো৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই তার তাদের হোটেল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়৷
তিনি বলেন, ‘‘আমরা হোটেলে আমাদের রুমে ঘুমাচ্ছিলাম৷ হঠাৎ আমাদের ঘুম ভাঙলো প্রচণ্ড কাঁপুনিতে৷ সবাই চিৎকার করছিল এবং হোটেল থেকে সবাইকে বেরিয়ে যেতে বলা হচ্ছিল৷''
জার্মানির বার্লিনার কুরিয়ারের সাংবাদিক মাইকেল হয়েন টুইটারে পর্যটকদের বাইরে খোলা আকাশের নীচে রাত কাটানোর কয়েকটি ছবি দিয়েছেন৷ সাথে জুড়ে দিয়েছেন মন্তব্যও, ‘‘রাতে ক্যাম্প করার জন্য এর চেয়েও খারাপ জায়গা আছে৷''
তুরস্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মূল ভূমিকম্পের পর অন্তত ২০টি আফটারশক হয়েছে৷
বোদ্রুম এবং আশেপাশের এলাকা থেকে পাওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে স্থানীয় এবং পর্যটকরা খসে পড়া কংক্রিটের টুকরো থেকে বাঁচতে ভবন থেকে বেরিয়ে আসছেন৷
‘‘শহরের কিছু কিছু অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে, এটিই এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা,'' এনটিভি টেলিভিশনকে জানিয়েছেন বোদ্রুম শহরের মেয়র মেহমেত কোসাডন৷
বোদ্রুমে কারো মারা যাওয়ার খবর এখনও পাওয়া যায়নি৷ তবে ভয়ে জানালা থেকে লাফিয়ে পড়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ মুগলা প্রদেশের গভর্নর৷
বোদ্রুমের কাছাকাছি এক বাড়িতে থাকেন অবসরে যাওয়া তুর্কি নাগরিক দিলবার আরিকান৷ তিনি বলেন, ‘‘বিছানা খুব জোরে কাঁপছিল৷ রান্নাঘর এবং বারান্দায় কিছু বোতল পড়ে ভেঙে গেল৷ আমি চিৎকার করে উঠেছিলাম৷ আমার একা ছিলাম, তাই আমার খুব ভয় লাগছিল৷''
তুরস্ক এবং গ্রিসের সীমান্ত এলাকায় প্রায়ই ভূমিকম্প হয়৷ জুন মাসে লেসবস দ্বীপে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়৷ এতে মারা যান এক নারী৷
এডিকে/ডিজি (রয়টার্স, এপি, এএফপি)