গ্রেটা বললেন, কী সাহস আপনাদের!
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব নিয়ে প্রায় সবার মনে সংশয় কেটে গেলেও সরকারি পর্যায়ে তার মোকাবিলা করার যথেষ্ট উদ্যোগ এখনো দেখা যাচ্ছে না৷ চুক্তি, ঘোষণাপত্র, সদিচ্ছার মতো আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই গোটা প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে৷ অনেক রাজনৈতিক নেতা অর্থনৈতিক স্বার্থের দোহাই দিয়েও পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্ব কমিয়ে দেখাচ্ছেন৷ ঠিক এই মনোভাবের বিরুদ্ধেই আবার গর্জে উঠলেন সুইডেনের কিশোরী গ্রেটা টুনব্যার্গ৷ মোট ১৫ জন তরুণ জলবায়ু অ্যাকটিভিস্ট তাঁদের বক্তব্য রাখেন৷
সোমবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনে আবেগভরা ভাষণ দেন টুনব্যার্গ৷ বিশ্বনেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘আমরাবিশাল মাত্রায় বিলুপ্তির পথে চলতে শুরু করেছি৷ আর আপনারা শুধু টাকাপয়সা আর অনন্তকাল ধরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির রূপকথার কাহিনি শুনিয়ে চলেছেন৷ কী সাহস আপনাদের!'' রাজনৈতিক নেতাদের ব্যর্থতার অভিযোগ করে গ্রেটা আরও বলেন, ‘‘আমাদের কাছে আপনারা ব্যর্থ হচ্ছেন৷ কিন্তু তরুণ প্রজন্ম আপনাদের বিশ্বাসঘাতকতা বুঝতে পারছে৷''
উপস্থিত রাজনৈতিক ও শিল্পজগতের নেতারা গ্রেটা টুনব্যার্গের আবেগময় ভাষণ শুনে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেবেন কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন প্রক্রিয়ায় মানুষের ভূমিকা মানতে অস্বীকার করে চলেছেন, তার ফলে প্যারিস চুক্তি রূপায়নের উদ্যোগ ধাক্কা খাচ্ছে৷ সোমবার ট্রাম্প কোনো ঘোষণা ছাড়াই ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে সঙ্গে নিয়ে কিছু সময়ের জন্য সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছিলেন৷ তিনি জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের অংশবিশেষ শোনেন৷ জলবায়ু সম্মেলন সম্পর্কে আগ্রহ দেখিয়ে ট্রাম্প বলেন, তিনি পরিষ্কার বাতাস ও পরিষ্কার পানিতে বিশ্বাস করেন৷
জার্মান চ্যান্সেলর ম্যার্কেল তাঁর ভাষণে বলেন, মানুষের কারণেই যে জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ তাঁর মতে, আন্তর্জাতিক সমাজকে গোটা বিশ্বের বিজ্ঞানী ও তরুণতরুণীদের বার্তা শোনা উচিত৷ তিনি এ প্রসঙ্গে জার্মান সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলি তুলে ধরেন৷ এর আওতায় ২০২৮ সালের মধ্যে কয়লার ব্যবহার বন্ধ করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে৷ জার্মানি এছাড়া ‘সবুজ জলবায়ু তহবিল'-এ ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার চাঁদা দেবে বলে জানিয়েছে৷ অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলিকে জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব মোকাবিলা করতে সাহায্য করতে এই তহবিল সৃষ্টি করা হয়েছে৷
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস সম্মেলনের ফলাফল সম্পর্কে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন৷ তিনি আগেই বিশ্বনেতাদের উদ্দেশ্যে ‘সুন্দর ভাষণের বদলে স্পষ্ট পদক্ষেপ' ঘোষণার আহ্বান করেছিলেন৷ গুতেরেস বলেন, শিল্পোন্নত বিশ্বের কয়েকটি দেশ সহ মোট ৭৭টি দেশ ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন সম্পূর্ণ বন্ধ করতে স্পষ্ট উদ্যোগের অঙ্গীকার করেছে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)