1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঘরে ফেরা হলো না রোহিঙ্গাদের

২২ আগস্ট ২০১৯

টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রয়েছেন ডয়চে ভেলের আরাফাতুল ইসলাম, নাওমি কনরাড ও স্টেফান জিমেক৷ সেখান থেকে প্রত্যাবাসন, বাড়তি সেনাপাহারার বিস্তারিত তুলে ধরছেন তারা৷

https://p.dw.com/p/3OIlH
Repräsentanten aus Bangladesch China und Myanmar bei einer Pressekonferenz in Teknaf
ছবি: DW/A. Islam

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন (ইউএনএইচসিআর) আর বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের যৌথ প্রচেষ্টায় একটি তালিকার ভিত্তিতে ২২ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো শুরু করার কথা৷ ২২ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা থেকে মিয়ানমার সরকার ৩ হাজার ৫৪০ জনকে বাছাই করে৷ বাছাই করা রোহিঙ্গাদের কাছে জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা যখন জানতে চান তারা মিয়ানমারে ফিরে যাবেন কিনা, কেউই ‘হ্যাঁ’ বলেননি৷ এই তালিকা কর্তৃপক্ষ প্রকাশ না করলেও ডয়চে ভেলে তা পেয়েছে এবং স্থানীয় ক্যাম্প ইনচার্জ অফিসার সেই তালিকার যথার্থতা সম্পর্কে নিশ্চিত করেছেন৷

তালিকার খবর ছড়ানোর পর থেকেই টেকনাফের ক্যাম্পের ২৬টি অঞ্চলের রোহিঙ্গাদের মাঝে ভয় ও আতঙ্ক দেখা দেয়৷ সেই ক্যাম্পের মোট ৩ হাজার ৯১ জনের নাম আছে সেই তালিকায়৷ জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বারবার জানিয়েছে,  জোর করে, ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো রোহিঙ্গাকেই প্রত্যাবর্তন করা হবে না৷ কিন্তু স্বেচ্ছায় মিয়ানমার ফিরে যেতে ইচ্ছুক এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ স্বেচ্ছায় যেতে ইচ্ছুক এমন শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের জন্য তৈরি ছিল পাঁচটি বাস৷ কিন্তু সেই বাসগুলিতে একজনও যাত্রী ছিল না৷

তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা৷ ক্যাম্প ইনচার্জ অফিসার দায় চাপিয়েছেন ক্যাম্প চেয়ারম্যানের ওপর৷ চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দায় অস্বীকার করেন৷

টেকনাফ ক্যাম্পে ২১ আগস্ট রাত থেকে বাড়তে থাকে নিরাপত্তাবাহিনীর উপস্থিতি৷ ফলে আতঙ্ক বাড়তে শুরু করে৷ অথচ সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য শরণার্থীদের ওপর কোনো রকমের জোরজুলুম চালায়নি৷ এমনকি প্রত্যাবাসন নিয়ে কোনো মন্তব্যও করেনি তারা৷ সেনাবাহিনী ছাড়াও সেখানে মোতায়েন ছিল ব়্যাব, বর্ডার গার্ড, পুলিশ৷ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সামরিক পাহারার কারণে অনেক শরণার্থী তাদের ক্যাম্পে তালা মেরে পালিয়ে গেছেন বলেও জানা গেছে৷ এছাড়া দুই রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ২১ আগস্ট রাতে মাদকপাচারের অভিযোগে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলে পুলিশ৷ তবে সব মিলিয়ে টেকনাফ ক্যাম্পে আতঙ্ক, ভয়ের ছায়া বাড়লেও কোনো শরণার্থীকে ফেরাতে না পারায় পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক রয়েছে৷

স্থানীয় এক শরণার্থী ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমাদের বলা হচ্ছে যে আমরা চাইলে ফিরে যেতে পারব, কিন্তু মিয়ানমার আমাদের নাগরিকত্বের বিষয়ে এখনো কিছুই পরিষ্কার করে বলেনি, সেখানে এখনো লড়াই হচ্ছে৷ যতদিন পর্যন্ত আমাদের নাগরিকত্বের বিষয়টি পরিষ্কার না হবে, ততদিন পর্যন্ত আমরা যাব না৷''

আতঙ্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘মিয়ানমারে পরিবেশ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে কেউ যাবে বলে মনে হয় না৷ গতকাল এখানে একসাথে অনেক পুলিশ-সেনা দেখে কিছু মানুষ ভয় পেয়েছেন৷ আতঙ্কের কারণে পালিয়ে কোথায় গেছেন তারা জানি না৷ কিন্তু আমরা জানি যে সরকার আমাদের জোর করে ফেরত পাঠাবে না, কিন্তু সেটা সবাইকে আমরা বোঝাতে পারছি না৷''

২২ আগস্ট সকাল দশটা ছাব্বিশ মিনিটে একটি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন দপ্তর (আরআরআরসি)-র কর্মকর্তারা৷ সাথে ছিলেন দুজন চীনা কূটনীতিক ও মিয়ানমারের এক কূটনীতিক৷ মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে মিয়ানমারের প্রতিনিধি তা এড়িয়ে যান৷

উল্লেখ্য, তিন হাজার ৫৪০ জনের এই তালিকায় বেশির ভাগ মানুষই তুলনামূলকভাবে নতুন ক্যাম্পগুলিতে অবস্থান করছেন৷ এর মধ্যে রয়েছে ক্যাম্প নং ২৪, ২৬ ও ২৭৷

শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, কোনো শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো যায়নি৷

এসএস/কেএম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান