ঘুমোনোর আগে আজও জার্মান কচিকাঁচাদের রূপকথার গল্প চাই
৩১ জুলাই ২০১১একটি জার্মান বাড়ি কিংবা বাসায় সাধারণত পাওয়া যায়: বসবার ঘর, খাবার ঘর, রান্নার ঘর ছাড়াও বাবা-মায়ের শোবার ঘর আর ছোটদের শোবার ঘর৷ সন্ধ্যার পর পর রাতের খাওয়া শেষ হলে ছোটদের শুতে যাওয়ার কথা, নিজের টেডি বেয়ারটিকে আঁকড়ে৷ কিন্তু তার আগে তাদের শেষ আবদার, ‘‘গল্প বলো৷'' ‘শিশু এবং পরিবার' শীর্ষক একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, অত্যাধুনিক জার্মানিতেও চার থেকে ছয় বছরের শিশুদের ৯০ শতাংশ বাবা কি মা'র কাছ থেকে একটি ‘গুড নাইট গল্প' না শুনে চোখ বোজে না৷ এমনকি চার বছরের কম বয়সি বাচ্চাদের মধ্যে ৭১ শতাংশের একই আবদার - কিংবা দাবি৷ এবং তার পিছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য৷
৭ থেকে ১২ বছরের ছেলেমেয়েদের ৬০ শতাংশ ঘুমনোর আগে একটি গল্প শুনতে চায়৷ বাবা-মায়েদের নিজেদের শৈশবে শোনা গল্প ছাড়াও, ছোটদের গল্পের বই-ক্যাসেটের তো অভাব নেই৷ তা'তে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেলেও, আরো পুরনো কিছু জার্মান ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে৷ যেমন গল্পের বদলে গান: বাবা-মা সুর ধরবেন, ছোটরা তা'তে যোগ দেবে৷ অথবা রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে সকলে মিলে একটি সংক্ষিপ্ত প্রার্থনায় অংশ নেওয়া - এটি একটি আধা-ধর্মীয়, আধা-পারিবারিক প্রথা৷ এ'সবের শিকড় যেন ধীরে ধীরে আলগা হয়ে এসেছে৷ তবে তারা একেবারে যে অন্তর্হিত হয়েছে, এমন নয়৷ চার থেকে ছয় বছরের শিশুদের ৩৬ শতাংশ ‘‘আবেন্ডলিড'' প্রথাটির সঙ্গে পরিচিত৷ বাবা-মায়েদের ২৫ শতাংশ আজও ছোটদের ঘুমোতে যাওয়ার আগে তাদের সঙ্গে একটি ছোট্ট প্রার্থনা বলেন৷ ছোটরা একটু বড়ো হলেই সে প্রবণতা কমে যায়, যেমন ৭ থেকে ১২ বছরের ছেলেমেয়েদের মাত্র ২০ শতাংশ ‘‘আবেন্ডগেবেট'' বা সান্ধ্য প্রার্থনার প্রথাটি চেনে৷
এভাবেই হয়তো দেশ বদলায়, যুগ বদলায়৷ বদলায় না শুধু শৈশব৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক