চরম গরমের মোকাবিলায় ইউরোপ
২২ এপ্রিল ২০২৪সম্প্রতি প্রকাশিত ইউরোপিয়ান স্টেট অফ দ্য ক্লাইমেট রিপোর্টে বলা হয়, গত বছর ইউরোপে আবহাওয়ার চরম দিকগুলি দেখা গেছে৷ বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা ও ইইউ'র কপারনরিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (সিথ্রিএস) মিলে যৌথভাবে এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে৷
এই সিথ্রিএস-এর পরিচালক কার্লো বুয়োনতেমপো বলেন, ‘‘২০২৩ সালে ইউরোপের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল দেখি আমরা, দেখি সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাত, সবচেয়ে উষ্ণ প্রবাহ ও ব্যাপক বন্যা৷
ইউরোপের ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ তিনটি বছরই ২০২০ সালের পরের সময়ে৷ সবচেয়ে বেশি গরম পড়ে যে দশটি বছরে, তাও ২০০৭ সালের পরেই৷
চরম আবহাওয়ার প্রভাব যেমন
ইন্টারন্যাশনাল ডিজাস্টার ডেটাবেস জানাচ্ছে, গত বছর বন্যায় প্রাণ হারান ৪০জন, ঝড়ে মারা যান ৬৩জন ও ৪৪জনের মৃত্যু হয় দাবানলের কারণে৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ইউরোর ক্ষতি হয়৷ এর ৮০ শতাংশের জন্য দায়ী সর্বগ্রাসী বন্যা৷
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সেক্রেটারি জেনারেল সেলেস্তে সাওলো বলেন, ‘‘এই প্রজন্মের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জলবায়ু সংকট৷ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার খরচ হয়তো বেশি, কিন্তু মোকাবিলা না করার দাম আরো অনেক চড়া৷''
২০২৩ সালের জুলাই মাসে, দক্ষিণ ইউরোপের প্রায় ৪১ শতাংশ এলাকার মানুষের মধ্যে কড়া, অতি কড়া ও চরম ‘হিট স্ট্রেস' পরিলক্ষিত হয়৷ মানুষের শরীরে দাবদাহের প্রভাবকে বলে ‘হিট স্ট্রেস'৷
দীর্ঘ সময় ধরে ‘হিট স্ট্রেস'-এর মধ্য দিয়ে গেলে, তা শরীরে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে৷ তবুও, সাধারণ মানুষ ও অনেক ক্ষেত্রে, স্বাস্থকর্মীদের মধ্যেও এই বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেন না৷
আশার আলো যেখানে
চরম আবহাওয়ায় নজির গড়লেও ইউরোপ পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির দিকে এগোচ্ছে৷ গত বছর রেকর্ড গড়ে ৪৩শতাংশ বিদ্যুৎ সৃষ্টি হয় পুনর্ব্যবহারযোগ্য উৎস থেকে৷ ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ২২ শতাংশ৷ সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে জল বিদ্যুৎ ও বাতাস থেকে নেওয়া শক্তিও৷
অর্থাৎ, টানা দু'বছর ধরে ইউরোপে কয়লা বা জীবাশ্ম জ্বালানির চেয়ে বেশি শক্তি উৎপাদন হয়েছে পরিবেশবান্ধব উৎস থেকে৷ কিন্তু কার্বন নির্গমন বাড়ায় বাড়ছে পৃথিবীর তাপমাত্রাও৷
কিন্তু এল নিনো আবহাওয়ার অবসান বলছে যে হয়তো এই বছরে আগের বছরের মতো এতটা চরম আবহাওয়ার সম্মুখীন নাও হতে পারে ইউরোপ৷
জিনেট চুইংক/এসএস