1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চশমার বদলে অরগ্যানিক লেন্স?

১ জানুয়ারি ২০১৯

চল্লিশে চালশের সমস্যা ভুক্তভোগীমাত্রই টের পান৷ বয়সের সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়লে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ ইউরোপের বিজ্ঞানীরা এক সার্বিক সমাধানসূত্রের লক্ষ্যে কাজ করছেন৷

https://p.dw.com/p/3AqUc
ছবি: picture-alliance/dpa/V. Ankov

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চোখের ক্ষমতা কমে যায়৷ কৃত্রিম অরগ্যানিক লেন্স কি সেই সমস্যার সমাধান করতে পারবে?

মানুষের বয়স বাড়লে ‘প্রেসবায়োপিয়া' নামের এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়৷ চোখের লেন্স ধীরে ধীরে শক্ত হতে থাকায় সবকিছু দেখতে সমস্যা হয়৷ বিজ্ঞানীরা গোটা প্রক্রিয়াটা এখনো পুরোপুরি বুঝতে না পারলেও লেন্স তার নমনীয়তা এবং দূরত্ব অনুযায়ী ফোকাসের ক্ষমতা হারালেই এমনটা ঘটে বলে ধরে নেওয়া হয়৷ ভুক্তভোগী হিসেবে মারিয়া খেসুস ব্লাংকো মন্টেস বলেন, ‘‘৪০ বছর বয়স হবার পর আমার দৃষ্টিশক্তি অনেক খারাপ হয়ে যায়৷ বিশেষ করে কাছের জিনিস দেখতে সমস্যা হতো৷ আমি কিন্তু চশমা পরতে চাই নি৷ তাই এই হাসপাতালে চিকিৎসার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চেয়েছিলাম৷''

এখানকার আই সার্জেনরা মানুষের চোখের শক্ত হয়ে যাওয়া ক্রিস্টালাইন লেন্সের জায়গায় কৃত্রিম, মাল্টিফোকাল লেন্স বসিয়ে দিতে পারেন৷ তখন দূরের ও কাছের বস্তু স্পষ্টভাবে দেখা যায়৷ এই আইডিয়া অসাধারণ হলেও এই মাল্টিফোকাল লেন্স এখনো পুরোপুরি নিখুঁত হয়ে ওঠেনি৷ খিমেনেস-ডিয়াস হাসপাতালের ইগনাসিও খিমেনেস-আলফারো মোরোটে বলেন, ‘‘প্রেসবায়োপিয়ার জন্য আরো সমাধানসূত্র খোঁজা প্রয়োজন, যা মানুষের ক্রিস্টালাইন লেন্সের আচরণ অনুকরণ করতে পারে৷ আমরা যে লেন্স বসাচ্ছি, তা কাছের, মাঝের ও দূরের বস্তু দেখা সহজ করলেও ঠিক আসল প্রক্রিয়ার অনুকরণ করতে পারে না৷''

এক ইউরোপীয় গবেষণা প্রকল্পের আওতায় বিজ্ঞানীরা এই সমস্যার সমাধান করতে এমন যন্ত্রপাতি সৃষ্টি করেছেন, যার সাহায্যে অরগ্যানিক ইমপ্লান্ট স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় তার আকার বদলাতে পারে৷ প্রকল্পের গবেষক সুসানা মারকোস বলেন, ‘‘অ্যাকোমোডেটিভ লেন্স ভবিষ্যতের লেন্স হতে চলেছে বলে আমাদের বিশ্বাস, কারণ, সেটি মানুষের চোখের ক্রিস্টালাইন লেন্সের ক্ষমতা নকল করতে পারে৷''

লেজার যন্ত্রের সাহায্যে সার্জেন চোখের ভেতরের কাঠামো খতিয়ে দেখে এই মুহূর্তে সহজলভ্য বিকল্পগুলির মধ্য থেকে সবচেয়ে উপযুক্ত লেন্স বেছে নিতে পারেন৷ সুসানা মারকোস বলেন, ‘‘আমরা এমনকি ব্যক্তি অনুযায়ী ইনট্রাঅকুলার লেন্স তৈরি করার কথা ভাবছি, যা সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রত্যেক রোগীর নির্দিষ্ট চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন করা হবে৷''

চোখের ডিজিটাল মডেল থাকলে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পক্ষে ফ্লেক্সিবল বা নমনীয় ইমপ্লান্ট তৈরি করা সহজ হবে৷ একই আকারের হওয়ায় চোখের নিজস্ব ক্রিস্টালাইন লেন্সের জায়গায় সেটি হুবহু বসিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে৷ বায়োমেক্যানিক্স গবেষক আন্দ্রেস দে লা অস দুরান বলেন, ‘‘সেই সংযোগ ফ্লেক্সিবল লেন্সের মধ্যে পেশির শক্তি স্থানান্তরিত করতে সহায়ক হয়৷ ফলে সারফেস বা চোখের বাইরের অংশের আকার স্থির করা সম্ভব হয় এবং সেই অনুযায়ী ফোকাল পয়েন্টও বদলানো যায়৷''

গবেষকরা বলছেন, তাঁদের লেজার যন্ত্রগুলির আকার আরও কমিয়ে আনা সম্ভব৷ তখন হাসপাতালে তা ব্যবহার করা অনেক সহজ হয়ে পড়বে এবং চক্ষু বিশেষজ্ঞদের পক্ষে বয়স্ক রোগীদের চিকিৎসা করা অনেক সহজ হবে৷ ফিজিক্যাল অপটিক্স গবেষক কার্লস ডোরনসোরো বলেন, ‘‘অপারেশনের পর অনুভূতি কেমন হবে, এই প্রণালীর মাধ্যমে রোগীরা আগেভাগেই তা জানতে পারবেন বলে আমাদের আশা৷ ইন্ট্রাঅকুলার ইমপ্লান্ট তাঁদের দৃষ্টিশক্তি কীভাবে বদলে দেবে, তাঁরা তা দেখতে পারবেন৷ তার মাধ্যমে উপযুক্ত লেন্স বাছাইয়ের কাজ অনেক সহজ হয়ে পড়বে৷''