চীনে নববর্ষে ভ্রমণ-ভোগান্তি!
১৩৮ কোটি জনগণের দেশ চীনে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার বিষয়টা রীতিমতো ঝক্কির হয়ে উঠেছে৷ সম্প্রতি চীনা নববর্ষের ছুটিতে ভোগান্তি চরমে ওঠে৷ তারই কিছু দৃশ্য...
বাড়ি ফিরছেন ৩০ কোটি লোক
চীনা নববর্ষ বা ঐতিহ্যবাহী বসন্ত উৎসবটি পরিবারের সঙ্গে কাটাতে প্রতি বছর বাড়ি ফেরেন ৩০ কোটির মতো মানুষ৷ একসঙ্গে এই ৩০ কোটি লোকের যাতায়াত সামাল দিতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয় চীনা প্রশাসনকে৷
৪০ দিনের উৎসবের ফাঁদে
চীনের ঐতিহ্যবাহী বসন্ত উৎসব চলে ৪০ দিন ধরে৷ ২১ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই উৎসব চলবে ১ মার্চ পর্যন্ত৷ এই ৪০ দিনের মধ্যে ৩০ কোটি মানুষ তাদের পরিবারের কাছে উৎসব উদযাপন করতে ফিরবে৷
সরকারি ছুটি ৭ দিন
চন্দ্রমাসের হিসাব অনুযায়ী, ৫ ফেব্রুয়ারি এবার চীনা নতুন বছর শুরু হবে৷ এ উপলক্ষে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ছুটি শুরু হয়েছে৷ ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে৷ এর বাইরে অনেক প্রতিষ্ঠান নিজেদের সুবিধামতো ছুটি দেয় কর্মীদের৷
ট্রেন স্টেশনে এত লোক!
চীনে যাতায়াতের জন সবচেয়ে জনপ্রিয় দ্রুতগতির বুলেট ট্রেন৷ এসব ট্রেনে চেপে বাড়ি ফিরতে কিংবা বেড়াতে যেতে প্রতিদিন গড়ে ১ কোটি লোক বিভিন্ন প্রদেশের বড় স্টেশনগুলোতে ভিড় জমাচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ৷
ট্রেনে যাত্রা নয়
সস্তা ও দ্রুতগামী বলে বুলেট ট্রেনের স্টেশনগুলোতে যে ভিড় থাকে, তা টপকে নিরাপদ ভ্রমণ দুরূহ হয়ে পড়ে৷ তাই চীনের ভ্রমণ বিষয়ক কয়েকটি সংস্থা ভ্রমণকারীদের আগাম টিকেট কেটে বিমানে ভ্রমণের পরামর্শ দিয়েছে৷ এতে ভ্রমণ সস্তা হবে৷ তবে চন্দ্রবর্ষ নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত ছুটির ঘোষণা আসে না, তাই সংকট থেকেই যায়৷
বিপর্যয়
২০১৬ সালে এমনই এক উৎসবের সময় প্রবল তুষারপাতের কারণে রাতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়৷ সেই সময় গুয়াংজু রেলস্টেশন ও তার আশেপাশের খোলা আকাশের নীচে তীব্র তুষারপাতের সময় সারারাত বসে থাকতে হয় ১ লাখের বেশি মানুষকে৷ এমন বিপর্যয়ের কারণে সবাইকে এবার আগাম সতর্কতা দেওয়া হয়েছে৷
আড়াই ঘণ্টা আগে স্টেশনে
যদি কোনোমতে ট্রেনের একটি টিকেট পেয়ে যান তবে অবশ্যই আড়াই ঘণ্টা আগে স্টেশনে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন৷ ভারী ব্যাগ নিয়ে যাতায়াত করবেন না৷ একান্ত প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া অনেক ব্যাগ নিয়ে ভ্রমণ করবেন না৷ এসব পরামর্শ দিয়েছে ট্র্যাভেল চায়না গাইড৷
প্রয়োজনীয় খাবার সঙ্গে রাখুন
ভ্রমণ-বিপর্যয় কখন কীভাবে আসতে পারে সে বিষয়ে কোনো ধারণাই থাকছে না৷ গত ২১ জানুয়ারি থেকে যাতায়াত শুরু হয়েছে৷ এ সময়েই লক্ষ্য করা গেছে, স্টেশনের খাবারের দোকানগুলো খাবার সরবরাহ করে কুল পাচ্ছে না৷ তাই প্রয়োজনীয় খাবার নিয়ে ওঠার পরামর্শও পাওয়া যাচ্ছে ভ্রমণ নির্দেশনামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে৷
নিরবচ্ছিন্ন পুলিশি সেবা
এদিকে রীতিমতো ক্লান্ত হয়ে পড়ছে পুলিশ বাহিনী৷ ট্রেন, বাস স্টেশন ও এয়ারপোর্টে নিরাপত্তা ও যাত্রীদের লাইন ঠিক করতেই জীবনপাত দশা৷ বেইজিং, গুয়াংজু, সিচুয়ানের মতো প্রধান স্টেশনগুলোতে অতিরিক্ত ১০ থেকে ২৫ হাজার করে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷ ১ মার্চ পর্যন্ত এই পুলিশ বাড়তি দায়িত্ব পালন করবে৷