চীনের বিরুদ্ধে একজোট হচ্ছে চার দেশ?
১০ মার্চ ২০২১প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং-এর শাসনকালে চীন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিজস্ব ক্ষমতা জাহির করার যে ‘বেপরোয়া’ মনোভাব দেখিয়ে চলেছে, তার ফলে উদ্বিগ্ন একাধিক দেশ৷ চীনকে চাপে রাখতে অ্যামেরিকা ও আঞ্চলিক শক্তিধর দেশগুলির মধ্যে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ছে৷ ২০০৭ সালে গঠিত ‘কোয়াড’ বা চতুর্দেশীয় এক কাঠামোর আওতায় ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া অ্যামেরিকার সঙ্গে নিয়মিত সামরিক মহড়া চালিয়ে এসেছে৷ এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেই কাঠামোকে আরও মজবুত করতে এই প্রথম চার দেশের শীর্ষ বৈঠকের উদ্যোগ নিচ্ছেন৷ শুক্রবার তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে ভারচুয়াল পদ্ধতিতে আলোচনা করবেন৷
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, প্রেসিডেন্ট হবার পর জো বাইডেন যে সব আন্তর্জাতিক জোটকে সবার আগে গুরুত্ব দিচ্ছেন, তার মধ্যে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্তি প্রশাসনের অগ্রাধিকার স্পষ্ট করে দিচ্ছে৷ চলতি বছরেই চার নেতার মুখোমুখি বৈঠকের ইঙ্গিত দিচ্ছে মার্কিন প্রশাসন৷ অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী মরিসন বলেন, বাইডেনের শীর্ষ বৈঠকের উদ্যোগের ফলে এই সহযোগিতা নতুন মাত্রা পাবে৷ তাঁর মতে, এর মাধ্যমে সার্বভৌম ও স্বাধীন ‘ইন্ডো-প্যাসিফিক’ অঞ্চলের প্রতি এই চারটি দেশের সমর্থনের বার্তা আরও জোরালো হবে৷ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ও একই সুরে বিবৃতি প্রকাশ করেছে৷
চীনের বেড়ে চলা আগ্রাসী মনোভাব আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পেলেও অ্যাজেন্ডায় করোনা সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়ও স্থান পাবে৷ অর্থাৎ শুধু চীনের বিরুদ্ধে একজোট হতেই এমন সহযোগিতার কাঠামো সৃষ্টি করা হয়েছে, এমন অভিযোগ খণ্ডন করতে চায় এই চার দেশ৷ ফেব্রুয়ারি মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনায়ও সরাসরি চীনের বিরুদ্ধে কোনো মন্তব্য করা হয় নি৷ তবে বেইজিং এমন জোট সম্পর্কে অস্বস্তি গোপন করছে না৷ ভারতের উপকূলের কাছে চার দেশের বিশাল যৌথ সামরিক মহড়ার কড়া সমালোচনা করেছে চীন৷
ভারত-চীন নিয়ন্ত্রণ রেখায় লাগাতার উত্তেজনা ও সংঘর্ষ থেকে শুরু করে পূর্ব ও চীন সাগরের উপর অধিকার কায়েম করতে চীনের একতরফা পদক্ষেপের মতো ‘বেপরোয়া' পদক্ষেপ সম্পর্কে গোটা অঞ্চলে অস্বস্তি বাড়ছে৷ চীনের শিনচিয়াং প্রদেশে উইগুর জনগোষ্ঠীর উপর নিপীড়ন এবং হংকং-এর মানুষের অধিকার সংকুচিত করার উদ্যোগও সমালোচনার মুখে পড়ছে৷ সম্প্রতি তাইওয়ানের প্রতি চীনের মনোভাব আরও কড়া হয়ে ওঠায় সামরিক হস্তক্ষেপের আশঙ্কা করছে কিছু মহল৷ চীনের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া মনোভাব চালিয়ে যাবার ইঙ্গিত দিয়েছেন বাইডেন৷ তবে যেখানে সম্ভব সহযোগিতার সুযোগও কাজে লাগাতে চায় ওয়াশিংটন৷
এসবি/কেএম (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)