বাংলাদেশের রাজনীতি
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪শেখ মেহেদী মির্জা আমার ব্লগে লিখেছেন,‘‘ছাত্রলীগ দেখি ঘরের খাইয়া নিজের কাম ফালাইয়া কেবল গণজাগরণ মঞ্চ আর ইমরানের চরিত্রহনন কইরা বেড়ায়৷ কেন? ইমরান বেইমানি করছে? কার সাথে করছে? সরকারের পক্ষ থেইকা এই আন্দোলন যখন থামাইয়া দিতে কইছে, সে থামাইছে না, এইটাই তার দোষ? তাইলে কী এই আন্দোলন সরকারের সৃষ্টি করা ছিল?''
তার প্রশ্ন হলো – ‘‘ছাত্রলীগের মতো এতো পুরনো ঐতিহাসিক সংগঠন থাকতে ইমরানদের জন্ম হয় কেন? কারণ একটাই, ছাত্রলীগ এখন আর জন-মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে পারছে না, ভালো-মন্দ সব কিছুতেই সরকারের গুণগান গেয়ে যাচ্ছে৷ এমন লেজুড়বৃত্তি করা একটা সংগঠন দিয়ে তো আর জনমানুষের আকাঙ্খা পূরণ হতে পারে না৷''
আপিল বিভাগের বিষয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘সাঈদীর রায়ের বেলায় আদালত নিরপেক্ষ কইয়া চিল্লাইয়া সরকাররে ডিফেন্ড করতাছো, গুড৷ কিন্তু, এই মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবীরা কী নিরপেক্ষ? না, তারা সরকারের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটায়৷ তাইলে তারা আদালতের কাছে সাঈদীর ফাঁসির রায় বহাল রাখার ব্যাপারে আন্তরিক ভাবে ফাইট করছে তো? নাকি সরকারের গ্রীন সিগনালে ‘ফাঁসি না হলেও চলবে' – মার্কা ফাইট করছে?''
সবশেষে লিখেছেন, ‘‘একাত্তর নিয়া বেইমানির ফল ভালো হয় না৷ ২ লাখ ধর্ষিতা নারী আর ৩০ লাখ শহিদের আত্মা থেকে নিসৃত অভিশাপ, পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের বোবা গোঙ্গানি আমি জানি ভালো থাকতে দেবে না তোমায়৷ তুমি ভালো রাজনীতি করো ভালো কথা, কিন্তু রাজনীতির মারপ্যাঁচে একাত্তরকে ধর্ষণ করার জবাব একদিন তোমায় দিতেই হবে, খুব শক্ত সে জবাব৷''
সামহয়্যার ইন ব্লগে আহমেদ রশীদ বিএনপি ও জামায়াতের সম্পর্কে চিড় ধরেছে বলে উল্লেখ করেছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘ বিএনপির ওপর ক্ষুব্ধ জামায়াত, অবিশ্বাস বাড়ছে৷'' রশীদ লিখেছেন, ‘‘যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলে সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের পর সন্দেহ আর অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ছে বিএনপি-জামায়াত জোটে৷ দলীয় নায়েবে আমির সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দেয়ার পর থেকে জোটবন্ধু বিএনপি ও তার নেতাদের আচরণে ক্ষুব্ধ জামায়াত-শিবির৷ বিএনপি নেতাদের আচরণে ক্ষুব্ধ জোটের জামায়াতপন্থি ইসলামি দলগুলোও৷ জামায়াত-শিবির ও তাদের মদদপুষ্ট দলগুলো বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলছে, বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার নয়৷ বরং রায়ের পর থেকে টিভি-টকশোতে বিএনপির যাঁরাই মুখ খুলেছেন তাঁরাই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বলেছেন, সাঈদীর রায় সরকারের সঙ্গে জামায়াতের আঁতাতের ফসল৷ জামায়াত নেতারা আরও বলছেন, বিএনপির মধ্যে থাকা জামায়াতবিরোধী কিছু নেতার চেষ্টাই হচ্ছে খালেদা জিয়ার কাছে প্রমাণ করা যে, সরকারের সঙ্গে জামায়াতের গোপন সমঝোতা আছে৷ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া যদি ‘ঘরের শত্রু বিভীষণদের' কথা শুনেন তাহলে তাঁকে পস্তাতে হবে বলে অনেক জামায়াত নেতা মন্তব্য করেছেন৷''
তিনি আরো লিখেছেন, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যায় জামায়াতের একজন কর্মপরিষদ সদস্য সেলফোনে বলছিলেন, বিএনপির কয়েকজন নেতা জোট ভাঙার জন্য এ সব কথা বলেন৷ এতে করে জামায়াতের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ছে৷''
ইমরুল কায়েস একই ব্লগে লিখেছেন,‘‘জনগণের যে অধিকারের জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল তা আজ পদে পদে পদদলিত৷ চেতনা আজ শুধু ব্যক্তি কেন্দ্রিক ক্ষমতার জন্য উন্মোচিত৷ দেশে মাত্র একজন দেশপ্রেমিক আছেন বাকি সবাই টাকায় বিকোয়৷ সত্যি সেলুকাস!''
রানা সোহেল লিখেছেন,‘‘সরকারি জোটে ১৪ দল, বিরোধী জোটে ২০ দল৷ নতুন আরেকটা জোট হচ্ছে, সেই জোটে ১১ দল৷ এইসব জোটের বাইরেও নিশ্চই আরো কিছু রাজনৈতিক দল আছে৷ জোটের বাইরের দলগুলোর কথা যদি বাদও দেই, তিন জোটে মোট দলের সংখ্যা ১৪+২০+১১=৪৫! দেশে কতটা রাজনৈতিক দল আছে তাতে আমার কোনো সমস্যা থাকার কথা না, নেই ও৷ কিন্তু রাজনীতি ব্যাপারটা যদি মানুষের জন্য হয়, আর সেই মানুষই যদি রাজনৈতিক দলের নাম না জানে তাহলে ‘এমন দল লইয়া আমরা কি করিবো'!''
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ