ছি ছি ছি, করোনা তুমি এত খারাপ!
১ এপ্রিল ২০২০নাটকের একটি দৃশ্য়ে দেখা যায়, দুজন সঙ্গীকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন খালেদ খান৷ আর সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন অভিনেতা তৌকির আহমেদ৷ সেই সময় পাশের এক সঙ্গীকে তৌকিরের দিকে ইটের টুকরা ছুড়তে বলেন খালেদ খান৷ এরপর নিজেই ঐ সঙ্গীকে বলেন ‘‘ছি ছি ছি, তুমি এত খারাপ, ইটা মেরেছ!’’ এই বলে তিনজনই হেসে ওঠেন৷
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনার তথ্য সংক্রান্ত ওয়েবসাইটটি দেখতে গিয়ে হঠাৎ খালেদ খানের ডায়ালগটি মনে পড়ে গেল৷ মনে হলো, করোনা ব্যাটাতো আচ্ছা খারাপ! শুধু বেছে বেছে ধনী দেশের লোকগুলোকে বেশি ধরছে সে! কারণ আক্রান্ত আর মৃতের সংখ্যার যে তালিকা জন হপকিনস নিয়মিত দিয়ে যাচ্ছে তাতে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর নামই সবার ওপরে দেখা যাচ্ছে৷
তার মানে কি করোনা ধনী-গরিবে বৈষম্য করছে! কিন্তু একটা ভাইরাসের পক্ষেতো তা সম্ভব নয়! তাহলে?
উত্তর সোজা এবং অনেকেই তা জানেন৷ ধনী দেশগুলোতে করোনা পরীক্ষার সুযোগ বেশি থাকায় করোনা ধরাও পড়ছে বেশি৷ এর মাধ্যমে করোনা আক্রান্ত মানুষ বাছাই করে তাদেরকে কোয়ারান্টিনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে যেন তারা অন্যদের মধ্যে তা ছড়াতে না পারেন৷
আর গরিব দেশে এত পরীক্ষার সুযোগ বা সামর্থ্য নেই৷ তাই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যাও কম৷
তাহলে বলা যায়, ধনীরা নিজেদের প্রয়োজনে করোনাকে ভয়াবহ হিসেবে তুলে ধরছে৷ আর গরিব দেশগুলোতে হয় করোনার প্রকৃত তথ্য জানা সম্ভব হচ্ছে না, নয়ত চেপে যাওয়া হচ্ছে৷ অর্থাৎ করোনার পরিচিতিটা আসলে ঠিক করছে মানুষ, করোনা নিজে নয়৷ তাই লেখার এই পর্যায়ে এসে শিরোনামে পরিবর্তন আনতে হচ্ছে৷ এখন বলতে হচ্ছে ‘‘ছি ছি ছি, মানুষ তুমি এত খারাপ!’’
এবার একটু সিরিয়াস কথায় আসি৷
সারা দুনিয়ার সবকিছুর উপর প্রভাব ফেলছে করোনা৷ জাতিসংঘের মহাসচিব থেকে শুরু করে বিশ্বের অনেক বড় নেতা করোনা সংকটকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় সংকট হিসেবে দেখছেন৷ ফলে তার মোকাবিলায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন তাঁরা৷
কোনো সংকট মোকাবিলার জন্য আর্থিক সক্ষমতা একটা বড় বিষয়৷ ধনী দেশগুলোর তা থাকায় তারা বেশি বেশি পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নিতে পারছে৷
কিন্তু গরিব দেশগুলোও যেন সেটা করে এবং করতে পারে সেই চেষ্টা করতে হবে৷ না হলে ভবিষ্যতে ধনী দেশগুলো পরিস্থিতি সামলে উঠতে পারলেও গরিব দেশে করোনার অস্তিত্ব থেকে গেলে ধনীরা আগের মতো স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে না৷ কারণ এই পৃথিবীতে গরিবদের বাঁচার জন্য ধনীদের যতটা প্রয়োজন, ধনীদের বাঁচার জন্য গরিবদের প্রয়োজনীয়তাও ঠিক ততটাই৷
দেখুন ২০ মার্চের প্রতিবেদন...