জলদস্যু দমনে দু'দিনের দুবাই বৈঠক
১৮ এপ্রিল ২০১১অন্য যে কোন বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বিশ্বব্যাপী সোমালি জলদস্যুদের হানা দেয়ার রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে৷ ২০১০ সালের প্রথম তিন মাসে জলদস্যুরা ৩৫টি জাহাজে হামলা করেছিল৷ অথচ এ বছরের একই সময়ে শুধুমাত্র সোমালিয়ার উপকূলেই ৯৭টি হামলা চালিয়েছে জলদস্যুরা৷ পণবন্দি হিসেবে ধরে নিয়ে গেছে ১৮টি জাহাজ এবং ঐসব জাহাজে থাকা ৩৪৪ জন নাবিককে৷ অপহরণ করেছে ছয় জন সমুদ্র অভিযাত্রীকেও৷ এছাড়া বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের জলসীমায় আরো ৪৫টি জাহাজের উপর চড়াও হয়েছে এবং ৪৫টি জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে তারা৷
জলদস্যুদের অপতৎপরতা রোধে ইতিমধ্যে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ঝুঁকিপূর্ণ জলসীমা পাহারা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক নৌসেনাদল৷ বাহরাইন ভিত্তিক যৌথ টাস্ক ফোর্স ১৫১ মোতায়েন রয়েছে ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে৷ আর এর এক মাস আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন শুরু করে জলদস্যু বিরোধী আটলান্টা অভিযান৷ ২০০৮ সাল থেকে ঐ অঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে সামরিক জোট ন্যাটো'র বিশেষ বাহিনী৷ এছাড়া রাশিয়া, চীন, ভারত এবং ইরান তাদের নিজস্ব নৌবহর মোতায়েন রেখেছে আক্রান্ত জলসীমায়৷
কিন্তু বিশাল সমুদ্র অঞ্চল পাহারা দেওয়া, জলদস্যুদের বিচারে জটিলতা এবং ঐ অঞ্চলে মোতায়েন করা বিভিন্ন দেশের নৌবহরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবসহ নানা হুমকির মুখে বিশ্ব সম্প্রদায়৷ এরকম অবস্থায় জলদস্যুদের কর্মকাণ্ড রুখে দাঁড়াতে দুই দিনের বৈঠকে বসেছেন অর্ধশতাধিক দেশের জাহাজ শিল্পের প্রতিনিধি, বিশেষজ্ঞ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা৷ সম্মেলনের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে, ‘‘বৈশ্বিক হুমকি, স্থানীয় উদ্যোগ: জলদস্যুতা রোধে একক অবস্থানের সন্ধান''৷
জলদস্যুতা রোধে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয় এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য জলদস্যুতার হুমকি নিয়ে দুবাই বৈঠকে আলোচনা হচ্ছে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে৷ তবে দুই দিনের বৈঠক শেষে দেশগুলো কতটা ঐকমত্যে পৌঁছতে পারবে এবং নাবিক ও জাহাজ মালিকদের রক্ষায় কী ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেদিকেই চেয়ে রয়েছে বিশ্ববাসী৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক