জলবায়ু পরিবর্তন
২৮ মার্চ ২০১২জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জাতিসংঘের ধারাবাহিক নানা বৈঠক ও কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ২০ থেকে ২২শে জুন অনুষ্ঠিত হবে রিও সম্মেলন৷ এর আগে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে অনুষ্ঠিত হলো জলবায়ু বিষয়ক বৈঠক৷ উপস্থিত ছিলেন ধরিত্রী বাঁচাতে বিশ্বের নানা প্রান্তে কর্মরত পরিবেশবাদী সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা৷
লন্ডন বৈঠকে উত্থাপিত জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের মোট সাতশ' কোটি মানুষের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ এখন শহর ও নগরীতে বাস করে৷ ২০৫০ সাল নাগাদ শহুরে মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ৷ এগুলোর মধ্যে এশিয়ার নগরীগুলোতেই শহুরে মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির ঘটনা ঘটবে ৬০ শতাংশেরও বেশি৷ ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের শিকার হওয়ার ক্ষেত্রে শহরের বাসিন্দাদের এক অসম হুমকির সম্মুখীন হতে হবে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন৷ অবশ্য পরিবেশ বিপর্যয়ের এমন হুমকির মুখে নিজেদের নিরাপত্তা বিধানে প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগও নগরীগুলোতেই গ্রহণ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ক্লাইমেট ইমপ্যাক্টস গ্রুপ এর প্রধান সিনথিয়া রোজেনসোয়াইগ৷
তাঁর মতে, একদিকে যেমন শহরগুলো বেশি ক্ষতির হুমকিতে, অন্যদিকে, জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণের দিক থেকেও তারা এগিয়ে রয়েছে৷ লন্ডন বৈঠকে আরো জানানো হয়েছে, ২১০০ সাল নাগাদ বিশ্বে খরা, উষ্ণতা, ঝড় এবং বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের হার বাড়তে থাকবে৷ এছাড়া এগুলো হবে দীর্ঘকালীন৷ আর বদ্বীপ এবং উপকূলীয় অঞ্চলের শহরগুলো হবে সমুদ্রতল আরো ফুলে ওঠার পরিণতির শিকার৷ ফলে সেসব জায়গায় ঘর-বাড়ি তলিয়ে যাবে৷ যোগ হবে পানীয় পানির অভাব৷
২০০৩ সালের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয়েছে, ইউরোপে সবচেয়ে উষ্ণ গ্রীষ্মকাল ছিল সেই বছর এবং এতে মারা গিয়েছিল প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ৷ পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, ২০৪০ সালের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মহাদেশের গ্রীষ্মকালগুলো হবে ২০০৩ সালের চেয়েও উষ্ণতর৷ তাই রূপ-রসে ভরা এই প্রকৃতি মাতার অভিশাপ থেকে বাঁচতে মানুষকে এখনই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে বলে সুপারিশ করেছেন লন্ডন বৈঠকে উপস্থিত পরিবেশবিদরা৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন