1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জলবায়ু পরিবর্তনে উদ্বাস্তু বাড়ছে বাংলাদেশে

৩০ অক্টোবর ২০২১

বিশ্বব্যাংকের হিসাবে ২০৫০ সাল নাগাদ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার এক কোটি ৩৩ লাখ মানুষ বাসস্থান হারাবেন৷ এই ধকল মোকাবিলায় কোপ-২৬ এ উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে তহবিলের প্রতিশ্রুতি আদায়ে আশাবাদী সরকার৷

https://p.dw.com/p/42Nv2
বিজ্ঞানীদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ১৭ শতাংশ পানিতে তলিয়ে যেতে পারে৷ ছবি: Fabeha Monir/DW

পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সম্প্রতি এক ভার্চুয়াল সেমিনারে বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের এক কোটি মানুষ এরইমধ্যে জলবায়ু উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছেন৷ সমূদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি, নদীর পানির লবণাক্ততা বাড়া, নদী ভাঙ্গন এবং ঝড়, জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে যাওয়ার অভিঘাতে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে৷’’

বিশ্বব্যাংকের হিসাব জানাচ্ছে, বাংলাদেশে এখন প্রতিবছর চার লাখ মানুষ গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসছেন স্থায়ীভাবে৷ এই সংখ্যা প্রতিদিন দুই হাজারের মতো৷ তাদের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগ জলবায়ু উদ্বাস্তু৷

বাংলাদেশের দক্ষিণের জেলা বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) আহ্বায়ক নুর আলম শেখ বলেন, ‘‘লবনাক্ততা বাড়ছে৷ বাড়ছে নদী ভাঙন৷ যা প্রাণ ও প্রকৃতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে৷ কৃষি নির্ভর এলাকার মানুষ কাজ হারিয়ে শহরে যাচ্ছেন কাজের খোঁজে৷ কেউ যাচ্ছেন একা আবার কেউ সপরিবারে৷ তারা শুধু ঢাকা নয় অন্য শহরেও যাচ্ছেন কাজের খোঁজে৷’’

‘যারা জলবাযুর এই ক্ষতির জন্য দায়ী তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে’

তিনি বলেন, ‘‘শুধু গরিব মানুষ নন, ধনীরাও এর শিকার হচ্ছেন৷ খাবার পানির সংকট সবাইকে বিপর্যস্ত করছে৷ লবণ পানির কারণে এই এলাকায় প্রতি তিনজনে একজন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন৷ জলবায়ু উদ্বাস্তু হয়ে মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন৷’’

এমন বাস্তবতায় রোববার স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে শুরু হতে যাওয়া কপ সম্মেলনে বাংলাদেশ জলবায়ু তহবিলের ওপর জোর দেবে৷

বাংলাদেশের প্রতিবেদন
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হবে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬ এ৷ তাতে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ অর্থ বছরে জলবায়ু সংশ্লিষ্ট খাতে বাংলাদেশের বরাদ্দের পরিমাণ দুই হাজার ১৮৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা৷ তবে করোনার কারণে আগের চেয়ে এই বরাদ্দ কমেছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মেকাবিলায় বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে৷ জলবায়ু এবং এর তহবিল নিয়ে কাজ করছে ২৫টি মন্ত্রণালয়৷

বাংলাদশে এ পর্যন্ত গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি থেকে ৪৩টি প্রকল্পে ১৬ কোটি মার্কিন ডলার অনুদান পেয়েছে৷ গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড থেকে নয় কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ক্লাইমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড থেকে ১১ কোটি ডলার অর্থ পেয়েছে৷ এর বাইরে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন উৎস থেকে ১০৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার অনুদান পেয়েছে৷ আর সরকার প্রতি বছর জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনে ১০০ কোটি ডলার ব্যয় করছে রাজস্ব খাত থেকে৷

বাংলাদেশের বস্তিতে জলবায়ু শরণার্থীর সংখ্যা বাড়ছে

তহবিলের উপর জোর দেয়া হবে
খ্যাতিমান পরিবেশবিদ ও জলবায়ু গবেষক ড. আতিক রহমান মনে করেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সঠিক পথেই আছে৷ বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও নিজেদের উদ্যোগে প্রভাব মোকাবিলার চেষ্টা করছে৷ খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কাজ করছে,কৃষি উৎপাদন বাড়াচ্ছে৷ কারিগরি দিকেও কাজ হচ্ছে৷ বাংলাদেশ তার উৎপাদনের সাথে রপ্তানি বাড়াচ্ছে৷

তিনি বলেন, ‘‘যারা জলবাযুর এই ক্ষতির জন্য দায়ী তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে৷ ফান্ড দিতে হবে৷ এই জায়গায় আমাদের শক্ত অবস্থান নিতে হবে৷ এটা বাংলাদেশের একার কাজ নয়৷ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে করতে হবে৷’’

আমরা ফান্ড ভালো পাবো বলে আশা করি: মো. সাহাবুদ্দিন

তার মতে এজন্য সরকার, এনজিও ও সাধারণ মানুষকে একযোগে কাজ করতে হবে৷

বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরির্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘‘এবার আমরা ফান্ড ভালো পাবো বলে আশা করি৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছেন৷ যারা পরিবেশের ক্ষতি করছে সেই দেশগুলোর প্রতি বছর এক লাখ মিলিয়ন ডলার করে দেয়ার কথা৷ এইবার আশা করছি তারা এটা দিতে সম্মত হবেন৷’’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে নিজস্ব অর্থায়নে কাজ করে যাচ্ছে৷ অনেক মানুষ জলবায়ু উদ্বাস্তু হচ্ছেন৷ এই সংখ্যা বাড়ছে৷ যারা ঘরবাড়ি হারাচ্ছেন, কৃষি জমি হারাচ্ছেন তাদের জন্য সরকার কাজ করছে৷ তাদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে৷’’

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ২০৫০ সাল নাগাদ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কিছু দেশের প্রবৃদ্ধি চার শতাংশ কমে যেতে পারে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান