জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব স্পষ্ট করল যে প্রকল্প
১০ নভেম্বর ২০১৭সুইডেনের উত্তরে কনট্রোল সেন্টারে জলবায়ু গবেষকরা গোটা মিশনের উপর সরাসরি নজর রাখছেন৷ পরীক্ষার এলাকা স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা আছে৷ পাইলট গেওফিজিকা বিমানটিকে হুবহু পূর্বনির্ধারিত রুট অনুযায়ী উড়িয়ে নিয়ে যাবেন৷ একমাত্র এভাবেই নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া সম্ভব৷ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে গ্লোরিয়া পৃথিবীতে তথ্য পাঠাবে৷
প্রায় ১০ বছর ধরে গবেষকদল এই মুহূর্তের জন্য কাজ করে গেছে৷ প্রায় ১ কোটি ইউরো মূল্যের গবেষণা প্রকল্পে সাফল্যের প্রথম স্বাদ পেয়ে উত্তেজনা কিছুটা কমলো৷
গেওফিজিকা বিমানটিকে উড়ালের আগে প্রস্তুত করা হচ্ছে৷ কিন্তু আবহাওয়া আরও খারাপ হয়েছে৷ মেরু অঞ্চলের এক ঝড় গোটা মিশন বানচাল করে দিতে পারে৷ উত্তর মেরু অঞ্চলে আবহাওয়ার এমন তারতম্য সামাল দেওয়া বিশেষ করে বিমানের টায়ারের জন্য মোটেই সহজ নয়৷ গ্লোরিয়া কি স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ঠিকমতো কাজ করে মূল্যবান তথ্য পাঠাতে পারবে? জলবায়ু গবেষক মার্টিন রিসে বলেন, ‘‘বিমান আকাশে উড়লে সবার, বিশেষ করে সহকর্মীদের উত্তেজনা বেড়ে যায়৷ কারণ অনেক ভুল হতে পারে৷ উড়াল ঠিকমতো পূর্ণ হলে সবাই তাই নিশ্চিন্ত বোধ করেন৷''
রাতে প্রায় ৪ ঘণ্টার উড়ালের পর বিমানটি ফিরে এলো৷ কিন্তু ঠিক তখনই ঘটলো সেই ভয়ঙ্কর কাণ্ড৷ টায়ার ফেটে যাওয়ায় বিমানটি রানওয়েতে পিছলে গেলো৷ গবেষকদের মনে গভীর উৎকণ্ঠা৷ সংবেদনশীল পরিমাপের যন্ত্রটির কি কোনো ক্ষতি হলো? পাইলট এই অবস্থায় মাথা ঠান্ডা করে রুটিন মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলেন৷ ফলে কোনো বিপর্যয় ঘটলো না৷ তবে অবিলম্বে ক্ষতির মাত্রা পরখ করতে হবে৷ মার্টিন রিসে বলেন, ‘‘অতি সংবেদনশীল পরিমাপের যন্ত্রটির কারণে আমাদের জন্য বিমানের ল্যান্ডিং ছিল ভয়ঙ্কর এক সময়৷ টায়ার ফেটে যাবার পর বিমানটি সামান্য ঘুরে গিয়েছিল৷ তখন কিছু ভেঙে যাবার একটা আশঙ্কা ছিল৷ যদিও আমরা যন্ত্রটি ভালোভাবে লাগিয়েছিলাম, যাতে কোনো ক্ষতি না হয়৷ তেমনটা ঘটলে এক ধাক্কায় আরও কয়েক বছর পিছিয়ে যেতাম৷ শেষ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক থাকায় আমরা নিশ্চিন্ত হলাম৷''
গবেষকরা অত্যন্ত মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করেছেন৷ গ্লোরিয়া বায়ুমণ্ডলের প্রক্রিয়া এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণ আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে৷ ফলে হয়ত কয়েক সপ্তাহ আগেই আবহাওয়ার নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাষ পাওয়া যাবে৷