জলবায়ু সমস্যা যৌথভাবে সমাধানের আহ্বান জানাবে বাংলাদেশ
২২ সেপ্টেম্বর ২০০৯এরপর ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে জাতিসংঘের ৬৪তম সাধারণ অধিবেশন৷ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এবং জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে সোমবারই যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷
বুধবার দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমন্ত্রণে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী৷ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের ভিত্তিতে প্রথম দশটি দেশের সরকার প্রধানের সম্মানে ওবামার এই আয়োজন৷ ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফর এবং তাঁর আলোচনা বিষয় আমরা কথা বলেছি নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে৷
ডয়চে ভেলে: জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে কি বলবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিনিধি দল?
ড. একে আব্দুল মোমেন: এবারে জাতিসংঘে দু দুটি বড় সম্মেলন হচ্ছে৷ একটি হচ্ছে জলবায়ু সম্মেলন, যেটা অনুষ্ঠিত হবে আজ ২২ সেপ্টেম্বর৷ তারপর ২৩ তারিখ থেকে ৬৪তম সাধারণ অধিবেশন শুরু হবে৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সম্মেলন দুটিতে জলবায়ু নিয়ে আলোচনা করবেন৷ বাংলাদেশ যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে একটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ দেশ সেই বিষয়টি আলোকপাত করবেন৷ তিনি এই সমস্যা যৌথভাবে সমাধান করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাবেন৷ কারণ যদি দরিদ্র দেশগুলো জলবায়ু সমস্যা অত্যন্ত বেশী রকম আঘাত পায় এবং তা বড় ধরণের আকার ধারণ করে তাহলে উন্নত দেশগুলো বেজায় মুশকিলে পড়বে৷ তিনি তাঁর বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট ওবামা, মহাসচিব বান কি মুন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর এ বিষয়ক সাম্প্রতিক পদক্ষেপের জন্য সাধুবাদ জানাবেন৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনৈতিক মন্দার বিষয়টি তাঁর আলোচনায় উপস্থাপন করে, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মত দেশগুলোর জন্য এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইন কানুন অনেক শিথিল করার জন্য তিনি আহ্বান জানাবেন৷
ডয়চে ভেলে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সাক্ষাৎকালে কি বিষয়ে কথা হতে পারে?
ড. একে আব্দুল মোমেন: ঐ সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে বলবেন যে বাংলাদেশ বিশ্বের শান্তি স্থাপনের জন্য দীর্ঘদিন যাবত জাতিসংঘ শান্তি মিশনে সৈন্য পাঠাচ্ছে৷ আমাদের সেনাবাহিনীর সদস্যরা জাতিসংঘ শান্তি মিশনে দ্বিতীয় এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা এক নম্বর অবস্থানে আছেন৷ আমাদের সদস্যরা সেখানে ভালো কাজ করছেন৷ তার সঙ্গে আরেকটি অত্যন্ত আবশ্যকীয় যে বিষয়টি তা হচ্ছে, দীর্ঘ মেয়াদে শান্তি রক্ষা, সেই ক্ষেত্রে অথ্যাৎ নারী ক্ষমতায়ন, জনগণের ক্ষমতায়ন এবং অংশিদারিত্ব গড়ে তোলায় বাংলাদেশ বিশেষ অবদান রাখতে পারে৷ আমাদের দেশের সামাজিক বিভিন্ন কর্মসূচী. বিভিন্ন এনজিও এ সকল ক্ষেত্রে কাজ করছে৷ আমাদের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে এ সকল ক্ষেত্রে৷ এই অভিজ্ঞতা দিয়ে আমরা বিশ্ববাসীকে সাহায্য করতে পারি৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তি মিশনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জোড় অবস্থান প্রয়োজন বলে উল্লেখ করবেন৷
ডয়চে ভেলে: জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের নারী সৈনিক পাঠানোর প্রস্তাবের ব্যাপারটি এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে, এটি কি আলোচিত হবে?
ড. একে আব্দুল মোমেন: এ বিষয়ে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি৷ আমরা এই জন্য কিছু অঙ্গীকারও পেয়েছি৷ আমাদের সেনাবাহিনীর নারী সদস্য এবং মহিলা পুলিশ সদস্য মিশনে নেয়ার বিষয়ে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ৷ আমার সঙ্গে পিস মিশনের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, আমরা আশা করি অদূর ভবিষ্যতে আমরা তাদেরকে শান্তি মিশনে পাঠাবো৷
সাক্ষাৎকার গ্রহণ: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়