1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জলবায়ু সম্মেলনে বেসরকারী সংগঠনগুলোর খসড়া চুক্তি প্রস্তাব

১৪ জুন ২০০৯

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে জার্মানির বন শহরে হয়ে গেলো আন্তর্জাতিক সম্মেলন৷ এবারের সম্মেলনে কেবল সরকারী প্রতিনিধিরাই নয়, এর বাইরে বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থাগুলো বিশেষ ভূমিকা রেখেছে৷

https://p.dw.com/p/I9FO
ছবি: AP Graphics

কোপেনহেগেন-এ যে সম্মেলন হতে যাচ্ছে সেখানে কার্বন নির্গমন কমানোর জন্য বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যাতে একটি চুক্তির মধ্যে আসে সেজন্য চেষ্টা চলছে৷ তবে এই চুক্তিটি কি ধরণের হবে, কোন বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে সেটি এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি৷ এনিয়ে চলছে বিস্তর দেন-দরবার৷ জাতিসংঘ, দেশগুলোর সরকার ছাড়াও এক্ষেত্রে বেসরকারী সংগঠনগুলো বেশ ভূমিকা রেখে চলেছে৷ এবারের বন সম্মেলনে বেসরকারী সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে একটি খসড়া চুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে দেশগুলোর জন্য৷ এই খসড়া চুক্তির পেছনে রয়েছে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর ন্যাচার বা ডব্লিউ ডব্লিউ এফ, গ্রিনপিস, ইন্ডিএ্যাক্ট, জার্মান ওয়াচ, দ্য ডেভিড সুজুকি ফাউন্ডেশন, ন্যাশনাল ইকোলজিক্যাল সেন্টার অব ইউক্রেন এর মত সংগঠনগুলো৷ সারা বিশ্ব থেকে বিশেষজ্ঞদের তারা কাজে লাগিয়েছে এই খসড়া চুক্তি প্রণয়নের জন্য৷ এই প্রথমবারের মত বেসরকারি সংগঠনগুলোর বন সম্মেলনে আসা ১৯২টি দেশের প্রতিনিধিদের সামনে এই ধরণের কোন চুক্তির প্রস্তাবনা উপস্থাপন করলো৷ এতে বিভিন্ন দেশ পরিবেশগত যে ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা করেছে সেগুলোর সঙ্গে আসল বৈজ্ঞানিক তথ্যের পার্থক্য কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছে৷ এ কথা বলেছেন সম্মেলনে গ্রিনপিস প্রতিনিধি দলের প্রধান মার্টিন কাইজার৷ তিনি বলেন, গ্রিনপিস সহ পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো এই বিষয়টি প্রমাণ করতে চায় যে চলতি বছরের শেষে কোপেনহেগেনে একটি জলবায়ু চুক্তিতে আসা সম্ভব৷ এই প্রস্তাবে কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ প্রথম হচ্ছে, শিল্পোন্নত দেশগুলোকে কমপক্ষে ৪০ শতাংশ কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনতে হবে৷ দ্বিতীয়ত, যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে একটি কার্বন মুক্ত অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে উন্নত দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দেবে৷

Yvo de Boer
ইউএনএফসিসির নির্বাহী পরিচালক ইভো ডি বোয়ের (ফাইল ফটো)ছবি: UNFCCC

১৬০ পৃষ্ঠা দীর্ঘ এই খসড়া চুক্তি করার ক্ষেত্রে দেখা গেছে ১৯২টি দেশের জন্য একটি বিষয়ে একমত হওয়া কতটা কঠিন৷ তবুও চেষ্টা থেমে নেই৷ পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর কথা হলো, পৃথিবীকে যদি বাঁচাতে হয় তাহলে দেশগুলোকে একটি ঐকমত্যে আসতেই হবে৷ এ ব্যাপারে মার্টিন কাইজারের কথা হলো, আমাদের সামনে যে ঝুঁকি রয়েছে সে দৃষ্টিকোণ থেকে যদি দেখা হয় তাহলে আমাদের প্রস্তাবিত খসড়া চুক্তির একটি সম্ভাবনা রয়েছে৷ যদি আমরা উল্লেখযোগ্যভাবে কার্বন নির্গমন কমাতে না পারি তাহলে আগামী ৩০ বছরের মধ্যে পৃথিবীর প্রবাল প্রাচীরগুলো হারিয়ে যাবে৷ আগামী ৫০ বছরের মধ্যে আমাজন নদীর কোন অস্তিত্ব থাকবে না৷ তাই রাজনৈতিক নানা খেলা সত্ত্বেও কিছু সত্য বিষয় রয়েছে আমাদের প্রস্তাবিত খসড়া চুক্তিতে৷ যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এবং এখন পর্যন্ত যেটি দেখা যায়নি তা হলো একটি চুক্তি করার ব্যাপারে দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক সদিচ্ছা৷ তবে আমরা কাজ চালিয়ে যাবো৷

বেসরকারী সংগঠনগুলো তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলেও এবারো বন সম্মেলন থেকে তেমন কোন আশানুরূপ ফলাফল দেখা যায়নি৷ জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ বা ইউএনএফসিসির নির্বাহী পরিচালক ইভো ডি বোয়ের জানিয়েছেন আগামী কোপেনহেগেন সম্মেলনে কোন চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌছানোর সম্ভাবনা কম৷ এবারের বন সম্মেলনে আলোচনার গতি প্রকৃতি দেখেই এই মন্তব্য করেছেন তিনি৷ বোয়ের জানান, ২০২০ সালের মধ্যে যে পরিমাণ কার্বন নির্গমন কমানোর জন্য বিজ্ঞানীরা চাপ দিয়ে আসছেন সেই পরিমাণ কার্বন নির্গমন কমাতে এখনো রাজি হয়নি শিল্পোন্নত দেশগুলো৷ তাই আগামী কোপেনহেগেন সম্মেলনে কোন চূড়ান্ত চুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী নন জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন দপ্তরের এই শীর্ষ কর্মকর্তা৷

এদিকে আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ গোটা বিশ্বের ২০ কোটি লোক পরিবেশ উদ্বাস্তুতে পরিণত হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন৷ বনের জলবায়ু সম্মেলনে সংগঠনটির এই আশংকার কথা জানিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়৷ ২৩টি দেশের ২৩০০ পরিবেশ উদ্বাস্তুর সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে৷

প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারুক