জাতিসংঘে চীন-জার্মানি তীব্র বিরোধ
৯ অক্টোবর ২০২০এক দিকে জার্মানি, অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্যসহ ৩৯টি দেশ। অন্য দিকে চীন এবং তার সমর্থনকারী কিউবা, পাকিস্তান সহ আফ্রিকার এবং আরবের একাধিক রাষ্ট্র। জাতিসংঘে তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ল বিশ্বের দুই অর্ধ। বিতর্কের কেন্দ্রে চীন।
গত মঙ্গলবার জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব পেশ করেছে জার্মানি। সেখানে চীনের বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে অনাচার থেকে শুরু করে তিব্বতে চীনের আগ্রাসন, হংকংয়ের বর্তমান পরিস্থিতি, চীনের মূল ভূখণ্ডে নাগরিকের অধিকার হরণ-- বিবিধ বিষয়ে শি জিনপিংকে আক্রমণ করেছে জার্মানি। তবে চীনকে এই সমস্ত বিষয়ে এই প্রথম আক্রমণ করছে না জার্মানি। মাত্র কয়েক দিন আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আয়োজিত এক বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্টের সামনেই এই সমস্ত প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। কিন্তু মঙ্গলবারের ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়।
মঙ্গলবার জাতিসংঘে জার্মানি যে প্রস্তাব পেশ করেছে তাতে সই করেছে বিশ্বের ৩৯টি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। যার মধ্যে অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্য আছে। রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অধিকাংশ দেশ। এর আগে চীনের বিরুদ্ধে এতগুলি দেশ একজোট হয়নি।
স্বাভাবিক ভাবেই জার্মানির পদক্ষেপে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয় চীন। ফলে জাতিসংঘে নিজেদের সমর্থন আদায়ে নেমে পড়ে তাঁরা। সঙ্গে পেয়ে যায় পাকিস্তান, কিউবা সহ একাধিক আরব এবং আফ্রিকার দেশকে। এরপর তীব্র ভাষায় জার্মানিকে আক্রমণ করেন জাতিসংঘে চীনের প্রতিনিধি। তিনি বলেন, জার্মানি যা প্রস্তাব পেশ করেছে, তা ভিত্তিহীন। চীন তার নাগরিকদের সঙ্গে অন্যায় ব্যবহার করে না। জার্মানি যা বলছে, তা একান্তই চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে চীন কারও কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নয়।
উইঘুর মুসলিম, হংকং এবং তাইওয়ান নিয়ে গত কিছু দিন ধরে যথেষ্ট বিড়ম্বনায় চীন। একের পর এক দেশ এ বিষয়ে চীনের বিরোধিতা করছে। হংকংয়ে বিশেষ আইন বলবৎ করে প্রায় গোটা বিশ্বের বিরাগভাজন হয়েছেন শি জিনপিং। তাইওয়ান নিয়ে দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে চলে এসেছে। সম্প্রতি তাইওয়ান দিবস নিয়ে তাইওয়ানের সরকার ভারতের বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। তা নিয়েও তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে চীন। বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। ভারত বরাবর চীনের 'এক চীন' নীতি মেনে চলেছে। ভারত যেন এমন কিছু না করে, যাতে সেই নীতির সঙ্গে আপস করা হয়। ভারতের পত্রপত্রিকা যেন এক চীন নীতি মেনে চলে। ভারত জবাবে জানিয়েছে, দেশের সমস্ত পত্রপত্রিকা স্বাধীন ভাবে কাজ করে। সেখানে হস্তক্ষেপ করার অধিকার সরকারের নেই।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, পিটিআই)