1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাতিসংঘের নতুন সংস্থা ‘ইউএন ওম্যান’

২২ জুলাই ২০১০

নারীদের আরো অধিকার দিতে, সমাজ জীবনে আরো সক্রিয় করতে জাতিসংঘ আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল তাদের৷ জাতিসংঘের মহিলাদের নিয়ে চারটি কর্মসূচিকে ‘ইউ এন ওম্যান’- এর আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/ORMR
নারীদের আরো অধিকার দিতে, আরো সক্রিয় করতে এগিয়ে জাতিসংঘছবি: UN

ইউ এন ওম্যান- এর ফলে বিশ্বের মহিলাদের সাহায্য করতে আরো অনেক বেশি অর্থ সংগ্রহ করা এবং অর্থ বিনিয়োগ করা সহজ হবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে৷

জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মসূচীর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কাজের মধ্যে সাধারণত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া অন্যতম৷ এ মাসের দুই তারিখে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব পাশ করা হয়৷ সে প্রস্তাব অনুযায়ী মহিলাদের নিয়ে জাতিসংঘের চারটি কর্মসূচি ‘ইউএন ওম্যান'- এর আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে৷ আগের কর্মসূচিগুলোর চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে কাজ করতে সক্ষম হবে ইউএন ওম্যান৷ জেনেভায় জাতিসংঘের মুখপাত্র কোরিন মোমাল ভানিয়ান বেশ গর্বের সঙ্গে জানান, ‘‘ এটা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের একটি সংবাদ৷ এর মধ্যে দিয়ে জাতিসংঘের প্রতিটি মহিলাই তাদের বক্তব্য, তাদের মতামত প্রকাশের সুযোগ পাবে৷ আমরা আশা করছি ‘ইউএন ওম্যান'-এর জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে তা দিয়ে নারী-পুরুষের সমানাধিকার বাস্তবায়নে সক্ষম হবে৷ এক কথায় সত্যিই এটা আমাদের জন্য একটি সুসংবাদ৷''

Gaza Palästinenser Mädchen als Zuschauer bei Sport
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বে যত নিরক্ষর মানুষ রয়েছে তার দুই-তৃতীয়াংশই হচ্ছে মহিলাছবি: AP

শুধু মহিলাদের জন্য একটি সংস্থা, যে সংস্থাটি জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে কাজ করবে – এমন একটি সংস্থার জন্য অনেক দিন ধরেই পর্যবেক্ষকরা অপেক্ষা করছিলেন৷ গত ৬০ বছরে জাতিসংঘ যা চেষ্টা করেছে তা হল নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য দূর করা, সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করা৷

বেজিং প্ল্যাটফর্মের ব্যর্থতা

১৯৯৫ সালে বেজিং-এ মহিলাদের সমস্যা চিহ্নিত করতে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল৷ নাম দেওয়া হয়েছিল বেজিং প্ল্যাটফর্ম৷ গ্রহণ করা হয়েছিল বেশ কিছু পদক্ষেপ৷ কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে বেজিং প্ল্যাটফর্ম তার লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি৷ জাতিসংঘের দপ্তর, ইউনাইটেড নেশন্স রিসার্চ ইন্সটিটিউট ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট এ কাজ করছেন সাহরা রাজাভি৷ তিনি বললেন, ঠিক কীভাবে এবং কেন নারী পুরুষের সমানাধিকারের বিষয়টি মুখ থুবড়ে পড়েছে৷ রাজাভি জানালেন,‘‘ অনেকেই ভেবেছিলেন বেজিং-এ হয়তো এবার কিছু আদায় করা সম্ভব হবে৷ তারা ছিলেন প্রচণ্ড আশাবাদী৷ কিন্তু দেখা গেছে এর পর থেকেই রক্ষণশীল মনোভাবের মানুষরাই জিতেছে৷ তাদের উত্থানও হয়েছে আগের চেয়ে বেশি৷ অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থেকে শুরু করে সংস্কৃতিক জীবনেও তাদের দাপট লক্ষ্য করা গেছে৷ ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা অনেক বেশি সোচ্চার ছিল সবসময়ই৷ যাদের এই সাহায্যের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, সত্যিকার অর্থেই প্রয়োজন তাদের সেই সাহায্য গ্রহণে এই রক্ষণশীলরা বাধা দিয়েছে৷''

18.07.2006 projekt zukunft fragezeichen
এই ছবিটিকেই খুঁজছেন আপনি৷ ছবিটির তারিখ 22/07 এবং কোড:3393 পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় অথবা এসএমএস করুন 0088 0173 030 2205, ভারত: 0091 98309 97232 নম্বরে৷ এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জিততে পারেন আকর্ষণীয় সারপ্রাইজ গিফট …ছবি: DW-TV

পরিবর্তন আনবে ইউএন ওম্যান

তবে আশা করা হচ্ছে এবার ‘ইউএন ওম্যান' সবকিছু দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে৷ এটা খুবই জরুরি৷ কারণ, জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা বিশ্বে যত নিরক্ষর মানুষ রয়েছে তার দুই-তৃতীয়াংশই হচ্ছে মহিলা৷ মানবাধিকার লংঘনের শিকার যত মানুষ তার তিন চতুর্থাংশ নারী৷ অন্যদিকে মাত্র এক চতুর্থাংশ নারী উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, রাজনীতি এবং অর্থনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷ সাহরা রাজভি মনে করেন যে, নারী অধিকার নিয়ে যেসব মহিলা সোচ্চার, বেজিং প্ল্যাটফর্মের সময় তারা আবেগে উৎফুল্ল হয়ে উঠেছিলেন৷ রাজাভি বললেন,‘‘এখন যে কেউই বলতে পারে যে নারী স্বাধীনতায় অনেক কিছুই বেজিং প্ল্যাটফর্মে আদায় করা গেছে৷ বেজিং- এ যে সব পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে তার মোটামুটি অনেক কিছুই করা সম্ভব হয়েছে৷ সংসদে যাওয়ার জন্য, সাংসদ হওয়ার জন্য মহিলাদের বিভিন্ন কোটার ব্যবস্থা করা হয়েছে, এই কোটার মাধ্যমে বৈষম্যও দূর করা সম্ভব হয়েছে৷ প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে মহিলাদের আর কী চাই ? সবই তো দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু বাস্তব সত্য হল নারী-পুরুষের যে বৈষম্য তা যে বেড়েছে সেটা স্পষ্ট চোখে পড়ে৷ সাধারণ মানুষ তা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলে৷''

এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন ইউএন ওম্যানের প্রধান নির্বাচিত করবেন৷ ২০১১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ইউএন ওম্যান শুরু করবে তার কাজ৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক