জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ধূম্রজাল
৬ ডিসেম্বর ২০১৩এরই মধ্যে জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদার বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে৷ জাতীয় পার্টির ৭ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপদেষ্টা এরশাদের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন বলা হলেও জমা দিয়েছেন মাত্র ৪ জন৷ রওশন এরশাদ , জিয়াউদ্দিন বাবলু এবং আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এখনো এরশাদের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেননি৷ আর যে ৪ জন এরশাদের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন তাদের পদত্যাগ পত্র নাকি এরশাদ রাষ্ট্রপতির কাছে নিয়ে যাবেন৷ রাষ্ট্রপতি এখন দেশে নেই৷ কিন্তু যার কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠালে সংবিধান অনিুযায়ী পদত্যাগ হবে সেই প্রধানমন্ত্রী দেশে থাকলেও পদত্যাগ পত্র তাঁর কাছে পাঠানো হচ্ছেনা৷ ফলে ধীরে ধীরে আসল ঘটনা বোঝা যাচ্ছে৷ বোঝা যাচ্ছে দর কষাকষির বিষয়টি৷
নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী এবং জাতীয় পার্টির মহাসচিব রহুল আমীন হাওলাদার তা আরো পরিষ্কার করলেন৷ তিনি এরশাদের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেয়ার একদিন পর শুক্রবার বললেন, নির্বাচন নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে৷ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার, নির্বাচন বর্জন এবং মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের 'চূড়ান্ত' ঘোষণা দেয়ার পরও সরকারের সঙ্গে কি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'সরকার তো সরকারই , সরকারের সঙ্গে আলোচনা হতেই পারে, যোগাযোগ হতেই পারে এতে দোষের কিছু নেই৷ দেশের মানুষ একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়৷ জাতীয় পার্টিও চায়৷ সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করাই যায়৷' তিনি আরো বলেন, 'আমরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের সঙ্গে দেশ পরিচালনা করেছি তাই পদত্যাগটা যেন সৌজন্যমূলক হয়৷ তবে এমন কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না, যা বিবেক বর্জিত এবং দেশের মানুষের স্বার্থ ক্ষুন্ন করে৷'
রুহুল আমীন হাওলাদার প্রকাশ না করলেও জানা গেছে সরকারের দু'জন মন্ত্রী এখন জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ জাতীয় পার্টি এরশাদের বিরুদ্ধে মঞ্জুর হত্যা এবং জনতা টাওয়ার মামলা প্রত্যাহার ও নির্বাচনের তারিখ কিছুটা পেছানোর দাবি তুলেছে৷ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৃহস্পতিবার রওশন এরশাদসহ জাপার ৩ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী দেখা করতে গিয়েও একই কথা বলেন৷ জানা গেছে এখন এইসব বিষয় নিয়েই জাতীয় পার্টি সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি করছে৷ নির্বাচনের তারিখ পেছানো না হলেও মামলার ব্যাপারে সরকার এরশাদকে আশ্বস্ত করছে৷ তবে তা মামলা প্রত্যাহার করে না অন্যকোন উপায়ে সে বিষয়টি জানা যায়নি৷ তবে এরশাদ মামলার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অবস্থান নিয়েছেন৷
এদিকে নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, জাতীয় পার্টি না থাকলেও নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই হবে৷ তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি একেক সময় একেক কথা বলে৷ তারা নির্বাচনে ফিরে আসবে কিনা তা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়৷ নির্বাচন পেছানোর কোন সম্ভাবনা নেই৷ আর রাজনৈতিক কর্মসূচি রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করা হবে৷ তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের প্রশ্নই ওঠেনা৷ শেখ হানিাকে প্রধানমন্ত্রী রেখেই নির্বাচন হবে৷
অন্যদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ প্রতিদিনের মত শুক্রবারও অল্প সময়ের জন্য সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন৷ তিনি জানান সংবাদ মাধ্যমে যেভাবে এসেছে বুধবার রাতে তিনি সেভাবে আত্মহত্যার কথা বলেননি৷ তিনি বলেছেন তাকে আটক করে তার কাছ থেকে মিথ্যা বিবৃতিতে সই নেয়া হতে পারে৷ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি এখনো নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তে অটল আছেন৷ আবারো বলেছেন সময় মত মন্ত্রীদের পদত্যাপত্র রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে৷