জামাইকায় মাদক চক্রের সঙ্গে চলছে বন্দুকযুদ্ধ
২৭ মে ২০১০কারও কাছে তিনি রবিন হুড, কারও কাছে সন্ত্রাসী আর কারও কাছে পরিচিত বিশ্বের অন্যতম মাদক সম্রাট৷ পুরো নাম ক্রিস্টোফার ‘ডিউডাস' কোক৷ বিয়াল্লিশ বছরের এই ব্যক্তিটিকে ধরতে ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র জামাইকায় গত কয়েকদিন ধরে চলছে অভিযান৷
এক কথায় যদি বলা হয় কিংস্টন রণক্ষেত্র, তাহলে মোটেই ভুল হবে না৷ রাস্তায় রাস্তায় চলছে সাঁজোয়া যান৷ দফায় দফায় বন্দুকের আওয়াজ৷ সন্দেহভাজন বলে যাকে মনে হচ্ছে, তারই দেহতল্লাশি চালানো হচ্ছে৷ তাছাড়া খানাতল্লাশি তো চলছেই৷ একবারে প্রয়োজন না পড়লে কোন মানুষই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না৷ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে স্কুল কলেজ৷ বন্ধ রয়েছে দোকানপাট৷ সরকারী অফিস আদালতও বন্ধ৷ এমনি এক শহরবাসীর কথায়.. ‘কোন কিছু খোলা নয়, সব বন্ধ৷ সকলে রয়েছে ঘরের মধ্যে৷'
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিছু দিন আগে তাদের কাছে কোক-কে হস্তান্তর করার জন্য অনুরোধ জানায় জামাইকার প্রতি৷ ফলত: এই অভিযান৷ রাজধানী কিংস্টনে মাদক ব্যবসায়ী চক্রের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর চলছে বন্দুক যুদ্ধ৷ অবশ্য এরই মধ্যে জারী করা হয়েছে জরুরী অবস্থা৷ বুধবার পর্যন্ত এই অভিযানে সরকারী বাহিনীর তিন সদস্যসহ অন্তত ৪৯ জন প্রাণ হারিয়েছে বলেই সংবাদ৷
ঘরে ঘরে তল্লাশি সবচেয়ে বেশি হচ্ছে কোক বাহিনীর গ্যারিসন বলে পরিচিত টিভোলি গার্ডেন নামের একটি আবাসিক এলাকায়৷ ঘিরে রাখা এই স্থানে মানুষের মধ্যে চরম খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে৷ দেশের রেডক্রস সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়ে বলেছে, অনুমতি দিন, আমরা সেখানে বুভুক্ষ মানুষকে খাবার পৌঁছে দেবো৷ টিভোলি গার্ডেন থেকে প্রায় ৫০০ ব্যক্তিকে আটক করা হলেও কোক-কে কিন্তু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ সেনাবাহিনীর গুলিতে যারা নিহত হয়েছেন তাদের অধিকাংশই তরুণ৷ বলা হয় কোক বাহিনীর মূল শক্তিই হচ্ছে তরুণ সম্প্রদায়৷ কিন্তু যারা নিহত হয়েছেন তারা কি আদতেই কোকের অনুসারী? কোন কোন মহলের মতে তারা অধিকাংশই সাধারণ মানুষ৷
এখন বিপজ্জনক জামাইকা - এই কথাটাকে সামনে এনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের সে দেশ ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছে৷ জামাইকার আয়ের প্রধান উৎস পর্যটন৷ আর চলমান এই অভিযানের কারণে এই পর্যটন ব্যবসায় ধ্বস নামছে বলেই অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী