1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জামায়াত নিষিদ্ধ হবে কি?

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন আবার সরগরম৷ এ সময়েই সামহয়্যার ইন ব্লগে এক ব্লগার তুলে ধরেছেন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন৷ জামায়াতে ইসলামী কি নিষিদ্ধ হবে বাংলাদেশে?

https://p.dw.com/p/1BH02
ছবি: Reuters/Andrew Biraj

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন-এর এই পোস্টের শিরোনাম, ‘‘জামায়াত নিষিদ্ধ হবে; হবে না৷'' লেখায় বিষয়টি নিয়ে জনমনে বিদ্যমান সংশয়টাও উঠে এসেছে৷ লেখার শুরুটা এরকম, ‘‘জাওয়াহিরির বিবৃতি, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি নেতা ছিনতাই এবং এক শ্রেণির রাজনৈতিক নেতার স্মিত হাসি – গত কদিন ধরে এসবই এ দেশের মানুষ বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে দেখেছে৷ একটির সাথে অন্যটির যে সম্পর্ক আছে তাও প্রতীয়মান হচ্ছে৷ সাধারণ মানুষের এসব নীরবে দেখে যাওয়া আর ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের অপেক্ষা করা ছাড়া আর কি-ই বা করার আছে? আমাদের তো এই সব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উপরেই ভরসা করতে হয়, কেননা তারাই এ দেশের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা৷ আমরা বলতে পারি, দাবি জানাতে পারি বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব তাদেরই৷''

তারপর মোঃ গালিব মেহেদী খাঁনের লেখায় উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, চেতনা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে রাজনীতিবিদদের স্বার্থের খেলায় ব্যস্ত থাকার বিবরণ৷ এক শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধার সমালোচনাও করেছেন তিনি৷ গালিব মেহেদী লিখেছেন, ‘‘জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া বীর সেনানীরাই আজ যখন দলীয় আদর্শের কাছে বিক্রি হয়ে যান, তখন সাধারণ মানুষের ভরসার জায়গাটাইবা থাকে কোথায়! এটা ঠিক, হজব্রত পালন করলেই যেমন একজন মানুষ চিরস্থায়ী পবিত্রতা অর্জনে সক্ষম হন না, গঙ্গা স্নানে যেমন ভবিষ্যতের পাপ মোচন হয় না, তেমনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া মানেই চিরকালের দেশপ্রেমিক নন৷ জাতির এই মহানায়কদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করেই বলছি; সকল মুক্তিযোদ্ধাই যে চিরকাল আদর্শের ধারক বাহক হয়ে দেশমাতার সূর্যসন্তান হিসেবে নিজের আদর্শ ধরে রাখতে সক্ষম হবেন এমন কোনো কথা নেই৷ আদর্শের যুদ্ধ প্রতিদিনের, প্রতিক্ষণের৷ আর তার স্খলনও ঘটতে পারে যে কোনো মুহূর্তেই৷ যে কোনো প্রলোভনে৷ তার একাধিক প্রমাণ অনেক মুক্তিযোদ্ধা দেখিয়েছেনও৷ তথাপিও এ মহান বীর সেনানীদের কাছে সাধারণের আকাঙ্ক্ষা একটু বেশিই৷ আর তা যখন অপূর্ণ থেকে যায় তখন তারা আশাহত হয় বৈকি! দেশের বড় দুটি দলেই রয়েছে স্বাধীনতার অগ্রপথিকেরা৷ দুর্ভাগ্যজনক হলেও একটি দলে তাঁরা শুধু ব্যবহৃতই হয়েছেন; দলকে ব্যবহার করে দেশ গড়ার সুযোগ পাননি৷ বিনিময়ে তাঁদের যেটুকু যা প্রাপ্তি তা তাঁদের কতটা সম্মানিত করেছে বা আদৌ সম্মানিত করেছে, না অসম্মানই বেশি করেছে সে প্রশ্নের উত্তরের ভার পাঠকের৷ অন্যটিতেও যাঁরা আছেন মুখে যা-ই বলুন না কেন মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়নে তাঁরা যে বদ্ধপরিকর সেটাও প্রশ্ন সাপেক্ষ৷''

Bangladesch Proteste nach Ghulam Azam Urteil 15.07.2013
‘জামায়াত একটি সন্ত্রাসী সংগঠন’ছবি: Reuters

সামহয়্যার ইন-এর এই ব্লগার জামায়াত সম্পর্কে লিখেছেন, ‘‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হচ্ছে জামায়াত-শিবির একটি সন্ত্রাসী সংগঠন৷ আদালতের রায়ের ধারাবিহকতায় নির্বাচন কমিশন জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করে৷ সর্বশেষ আন্তর্জাতিক তথ্য ও মতামত সরবরাহকারী ওপেন সোর্স সংস্থা আইএইচএসের ‘আইএইচএস জেনস ২০১৩ গ্লোবাল টেরোরিজম অ্যান্ড ইনসারজেন্সি অ্যাটাক ইনডেক্স'-এর তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে শিবির৷''

কিন্তু তারপরই গালিব মেহেদী খাঁন আক্ষেপ করে লিখেছেন, ‘‘এত কিছুর পরও জামায়াত অংশ নিচ্ছে উপজেলা নির্বাচনে৷ কোথাও কোথাও জয়লাভও করছে৷ তারা হরতাল আহ্বান করছে, তা পালিতও হচ্ছে৷ সরকার খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে জামায়াত নিষিদ্ধ করছে না৷ আবার বিরোধী দলকে জামায়াতকে না ছাড়লে তাদের সাথে কোনো আলোচনা নয় বলে শাসাচ্ছে৷ ভাবখানা এমন যে, বিএনপিই জামায়াত নিষিদ্ধের পথে একমাত্র বাধা! আওয়ামী লীগের উল্টো কথাটি বলছে বিএনপি৷ তারা বলছে সরকার কেন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করছে না? এখানে তারা অকপট; তারা সরকারের ঘাড়ে বন্ধুক রেখে নিজেদের সাফসুতরো করার চেষ্টা করছে৷ তারা জানে জামায়াত নিষিদ্ধ হলে নামে উনিশের স্থলে আঠার দলীয় জোট হবে, বাস্তবে উনিশ উনিশই রবে৷ নামে নয় বেনামে জামায়াত বিএনপির পাশেই থাকবে৷ কাজেই তারা জোর গলায়ই বলতে পারছে, সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করুক৷''

Bangladesch Proteste Jamaat-e-Islami
‘আওয়ামী লীগ যদি ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জামায়াতকে নিয়ে খেলতে চায় তা তাদের জন্য বুমেরাং হতে বাধ্য’ছবি: Reuters

এ পর্যায়ে বিএনপির এই রাজনৈতিক কৌশলের দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি লিখেছেন, ‘‘এটা কি দায়িত্বশীল রাজনীতি?? দেশ কি তাদের খেলার বস্তু? ইচ্ছেমত খেলে যাবেন! দেশকে ঝুঁকিতে ফেলে এই কূটকৌশলের খেলা খেলার অধিকার তাদের কে দিল? জামায়াত শিবির যদি সন্ত্রাসী সংগঠন হয় তাহলে জামায়াত শিবিরকে যারা ক্রমাগত আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে, তাদের সমূলে উৎখাতে আজ যারা দ্বিধান্বিত, সামান্য ভোটের হিসেব-নিকেশে নিত্য যারা গলদঘর্ম, তারা কি তাহলে শ্বেত সন্ত্রাসী নয়?''

তবে মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন মনে করেন জামায়াতকে নিয়ে খেললে আওয়ামী লীগও ভুল করবে৷ তাঁর মতে, ‘‘আওয়ামী লীগ যদি এবার ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জামায়াতকে নিয়ে কোনো খেলা খেলতে চায় তা তাদের জন্য বুমেরাং হতে বাধ্য৷ এটা নিশ্চয়ই তারা উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন৷ রাজনীতিবিদগণ দেশের স্বার্থকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে স্থান দিতে সক্ষম হবেন এটাই কাম্য৷ যারা ব্যর্থ হবেন তারা প্রত্যাখ্যাত হবেন৷ সে ক্ষেত্রে বিদেশি শক্তির জোর, জঙ্গি কার্যকলাপ কোনো কিছুর সাহায্যেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ অর্জনে সক্ষম হবেন না৷ শেষ বিচারে সাধারণের সমর্থন থাকতেই হয়৷ আর সে সমর্থন জনস্বার্থে গৃহীত কার্যকলাপের উপরেই নির্ভর করে এটা আওয়ামী লীগের অন্তত বোঝা উচিত৷''

সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: জাহিদুল হক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য