জার্মান নির্বাচনে চ্যান্সেলর প্রার্থী পরিচিতি: ওলাফ শলৎস
১২ সেপ্টেম্বর ২০২১শলৎসের অভিজ্ঞতা নিয়ে কারও কোনো সন্দেহ নেই৷ সংকট মোকাবিলায় সক্ষম হিসেবেও তিনি পরিচিত৷ তারপরও অনেকে মনে করছেন, কী যেন নেই৷
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জার্মান নির্বাচনের এক বছরেরও বেশি সময় আগে গতবছর এসপিডির চ্যান্সেলর প্রার্থী হিসেবে শলৎসের মনোনয়ন সবাইকে বেশ অবাক করেছিল৷ কারণ তার মাত্র কয়েকমাস আগেই তিনি দলের প্রধানের পদে লড়ে হেরেছিলেন৷
তবে শলৎস নিজের প্রতি বিশ্বাস ধরে রেখে নিরলসভাবে সরকারে কাজ করে গেছেন৷ নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারেও তিনি অনেক ঝড় মোকাবিলা করেছেন৷
করোনা সংকটের সময় তিনি উজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছেন৷ অর্থমন্ত্রী হিসেবে অর্থনীতি ও ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিকদের সহায়তায় জরুরি তহবিল বিতরণের দায়িত্বে ছিলেন তিনি৷
২০০৩ সালে তৎকালীন এসপিডি সরকার ‘অ্যাজেন্ডা ২০১০’ নামে একটি শ্রমবাজার সংস্কারের প্রস্তাব এনেছিল৷ বেকার ভাতার নিয়ম আরো কঠোর করার কথা বলায় প্রস্তাবটি নিয়ে সেই সময় বেশ বিতর্ক হয়েছিল৷ সেসময় দলের মহাসচিব ছিলেন শলৎস৷ ফলে প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন জোগাড়ের কাজটি ছিল তার৷ এ ব্যাপারে পরে শলৎস বলেছিলেন, ‘‘প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন জোগাড়ের কাজটি ছিল আমার৷ আমাকে বেশ নির্দয় ভাব দেখাতে হয়েছিল৷’’
তিনি বলেছিলেন, সেই সময় তার প্রথম কাজ ছিল নিজের মতামতের কথা না ভেবে তখনকার চ্যান্সেলর ও দলের প্রধান গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার ও এসপিডির প্রতি ‘পুরো আনুগত্য’ দেখানো৷ ‘‘আমি নিজেকে নয় দলকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম৷’’
কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি৷ আঙ্গেলা ম্যার্কেলের খ্রিস্টীয় গণতন্ত্রী দল সিডিইউর কাছে চ্যান্সেলরশিপ হারিয়েছিল এসপিডি৷ ওলাফ শলৎসেরও এমন এক ছবি দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, যা থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লেগেছে৷
যে বিষয়ে যতটুকু বলা প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই কথা বলতে পছন্দ করেন শলৎস৷ এখন পর্যন্ত এসপিডির মহাসচিব পদ ছাড়াও রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও হামবুর্গের মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি৷
এসপিডির রক্ষণশীল অংশের সদস্য বলে শলৎসকে বিবেচনা করা হয়৷ আবার এটাও ঠিক, তিনি বাম নাকি ডানপন্থি, তা বোঝা কঠিন৷ এসপিডির যুবদলের ডেপুটি লিডার হিসেবে তার অনেক বক্তব্য ক্যাপিটালিজমের কট্টর সমালোচনা বলে বিবেচিত হয়েছিল৷
১৯৭৫ সালে হাইস্কুলে পড়ার সময় এসপিডিতে যোগ দিয়েছিলেন শলৎস৷ ১৯৯৮ সালে জার্মান সংসদেনির্বাচিত হন তিনি৷ হামবুর্গে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন৷ ব্যবসায়িক আইন বিষয়ে তার পারদর্শিতা ছিল৷ সে কারণে অর্থনীতি ও ব্যবসা কীভাবে চলে সে সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতা ভালো ছিল৷ সেই অভিজ্ঞতা সরকারি কাজে লাগিয়েছেন শলৎস৷
২০১৯ সালে এসপিডির প্রধান পদে লড়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে তার চেয়ে রাজনীতিতে অভিজ্ঞদের কাছে হেরে গিয়েছিলেন শলৎস৷ তারপরও দমে না গিয়ে অর্থমন্ত্রী ও ডেপুটি চ্যান্সেলর হিসেবে নিবিড়ভাবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন৷
তার পুরস্কার হিসেবে চ্যান্সেলর পদে তাকে বেছে নিয়েছে এসপিডি৷ এক বছর আগে এই মনোনয়ন পাওয়ার পর তার জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে৷ এছাড়া তার কারণেই এসপিডি দলেরও জনপ্রিয়তা বাড়ছে৷
সাবিনে কিনকার্ৎস/জেডএইচ