জার্মান ফুটবলে যৌন সহিংসতা
জার্মানিতে ফুটবল খেলা দেখতে গিয়ে নারীরা বাজে মন্তব্য, যৌন হয়রানি এমনকি ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন৷ নারী ফুটবল ভক্তদের একটি নেটওয়ার্ক জানিয়েছে এমন সব ঘটনার কথা৷
বাজে অভিজ্ঞতা
লেনা বহু বছর ধরে মাঠে গিয়ে খেলা দেখেন৷ চলতি মাসে খেলা দেখতে গিয়ে যৌন হয়রানির শিকার হন তিনি৷ তার সাথে সাথে বন্ধু-বান্ধবী ছাড়া কেউ কোন প্রতিবাদ করেনি৷ বরং তার দিকে আঙ্গুল উচিয়ে হাসাহাসি করছিলো অনেকে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে লেখার পর লেনার অভিজ্ঞতা সত্যি কিনা তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন৷
জরিপ নেই
কত নারী ফুটবল খেলা দেখতে গিয়ে এ ধরণের যৌন হয়রানি বা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তার নথিভুক্ত কোন সংখ্যা নেই৷ তবে লেনা জানিয়েছেন, তার বান্ধবীদের প্রত্যেকেরই এমন বাজে অভিজ্ঞতা আছে৷
পুলিশের নথিতে যৌন হয়রানির ঘটনা নেই
জার্মান পুলিশ অফিস ফর স্পোর্টস অপারেশনস জেডআইএস এর ক্রিমিনাল রেকর্ডে কেবল ভাংচুর, মারামারি এ ধরনের ঘটনার উল্লেখ আছে, কিন্তু যৌন সহিংসতার কোন ঘটনার উল্লেখ নেই৷
যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে নেটওয়ার্ক
যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে একটি নেটওয়ার্কে অনেকেই ফুটবল খেলা দেখতে গিয়ে যৌন সহিংসতার ঘটনার কথা জানিয়েছেন৷ কেবল ফুটবল ভক্তরাই নন, নারী কর্মীরাও জানিয়েছেন তাদের সঙ্গেও ঘটেছে যৌন হয়রানির ঘটনা৷ নেটওয়ার্কের সদস্য গ্রাবেনহোর্স্ট জানালেন, ধর্ষণের ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে ফুটবল স্টেডিয়ামে৷
সরকারি পরিসংখ্যান
জার্মান সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি তিনজন নারীর একজন তার জীবনে যৌন হয়রানির শিকার হন৷
২০১৮ সালে ধর্ষণের ঘটনা
২০১৮ সালের এপ্রিলে মিউনিখ থেকে ট্রেনে ফিরছিলো ম্যোনশেনগ্লাদবাখ ক্লাবের অন্তত ৭৫০ ভক্ত৷ ট্রেনে যৌন হয়রানির ঘটনা শুনে মাঝপথেই পুলিশ সেই ট্রেনের টয়লেট থেকে ১৯ বছরের এক নারীকে উদ্ধার করেছিল, যিনি জানিয়েছেন ধর্ষণ করা হয়েছিল তাকে৷ দোষী ব্যক্তিকে আদালত তিন বছর ৮ মাসের কারাদণ্ড দিলেও আপিলে মুক্তি পায় সে, কারণে মেয়েটি যেহেতু তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ হতে অনিচ্ছুক ছিলো না৷
নিরাপত্তাহীনতা
ওই ঘটনার পর যৌন সহিংসতার শিকার অনেক নারী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন৷ তাদের অনেকেরই ধারণা পুলিশের কাছে গেলেও কোন বিচার হবে না৷
খোলাখুলি কথা বলা
যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে যে নেটওয়ার্কটি কাজ করছে তারা একটি গাইডলাইন তৈরি করেছে এ ধরনের সমস্যায় পড়লে নারীরা কি করবে সে বিষয়ে৷ এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে তারা তাৎক্ষণিক সাহায্য চাইতে পারে৷ তবে এ বিষয়ে নারীদের খোলাখুলি কথা বলার পরামর্শ দিয়েছে তারা৷
পদক্ষেপ
জার্মানির বেশ কয়েকটি এরই মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে৷ চালু করা হয়েছে নারীদের সাহায্যের জন্য হেল্পলাইন, আলাদা বসার জায়গা৷
সবাইকে কথা বলতে হবে
যৌন সহিংসতার শিকার নারীরা যখন অনলাইনে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন. অনেক বাজে মন্তব্য করা হয়৷ তাই নারী অধিকার কর্মীরা বলছেন কেবল ভুক্তভোগীরাই নন, সবাইকে এ বিষয়ে সোচ্চার হতে হবে৷