জার্মান শিল্পীর চোখে ‘রাজনীতি ও উসকানি’
শিল্পী জাক টিলি থ্রি-ডি ক্যারিকেচারের জন্য বিখ্যাত৷ বিশাল সব বিদ্রুপাত্মক ছবি জন্ম নেয় তার এবং তার সতীর্থদের ত্রি-মাত্রিক শিল্পদক্ষতায়৷ জার্মান এই শিল্পীর ছবির প্রদর্শনী চলছে ড্যুসেলডর্ফ শহরে৷ দেখুন ছবিঘরে...
মাস্টার অব থ্রি-ডি ক্যারিকেচার
জাক টিলির ছবি আঁকার মাধ্যম ত্রি-মাত্রিক প্রযুক্তি৷ এর মাধ্যমে যে ছবিগুলো হয় তাতে এক বা দু’জন ব্যক্তি শুধু নয়, তাদের ব্যক্তিত্ব, পরিপার্শ্ব এবং দর্শনও ফুটে ওঠে৷
ব্রেক্সিট-দৈত্য
জাক টিলি ড্যুসেলডর্ফের প্রদর্শনীর শিরোনাম দিয়েছেন, ‘‘রাজনীতি এবং উসকানি’’৷ ডাব্লল এক্সএল, অর্থাৎ খুব বড় আকারের ক্যারিকেচারের মেলা বসেছে সেখানে৷ মূলত এবারের কার্নিভাল শোভাযাত্রার চরিত্রগুলোর থ্রি-ডি ভার্সনই স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে৷ এই ছবিতে ব্রেক্সিটের কুশীলব দেখানো হয়েছে দৈত্যের মতো করে৷
বড় হও, ট্রাম্প
২০১৫ সালের জলবায়ু সম্মেলনে প্যারিস চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ান ডনাল্ড ট্রাম্প৷ তাকে তাই শিশু বানিয়ে ডায়পার পরিয়ে দিয়েছেন টিলি৷ নিয়ে ২০১৭ সালে হামবুর্গে জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে পরিবেশবাদীদের বিক্ষোভ মিছিলেও দেখা গেছে সাত মিটার উচ্চতার এই শিল্পকর্ম৷
‘গ্রেট’ গ্রেটা
সুইডেনের কিশোরী পরিবেশবাদী গ্রেটা ট্যুনবার্গের সমর্থক জাক টিলি৷ ২০১৯ সালে তাকে নিয়ে এই ক্যারিকেচারটি এমনভাবে এঁকেছেন যাতে দেখেই বোঝা যায় আগের প্রজন্মের ওপর রেগেমেগে তাদের কান ধরে বলছেন, ‘‘পরিবেশ বিপর্যয় রুখতে এবার একটা কিছু করো!’’
ম্যার্কেল এবং শরণার্থীর স্রোত
এটি আঁকা হয়েছিল ২০১৬ সালে৷ সিরিয়া থেকে ১০ লাখের মতো শরণার্থী এসে জার্মানির রাজনীতিতে তখন তোলপাড়ের জন্ম দিয়েছে৷ তাদের স্বাগত জানিয়ে ম্যার্কেল তখন মহাবিপদে৷ ছবিতে তাই জার্মান চ্যান্সেলর শরণার্থীদের স্রোতে উল্টাতে থাকা নৌকার যাত্রী৷ প্রায় উল্টে যাওয়া নৌকাতেও কিন্তু অবিচল তিনি!
শুঁয়োপোকা খায় গণতন্ত্র
এই ছবিতে ফুটে উঠেছে কিছু দেশে গণতন্ত্রের দুরবস্থা৷ গণতন্ত্র এখানে একটা সবুজ পাতা আর তা খেয়ে শেষ করছে পুটিন, এর্দোয়ান, অর্বান, কাচিনস্কি এবং ট্রাম্পের শুঁয়োপোকা৷
ব্লন্ড ইজ দ্য নিউ ব্রাউন
জার্মানিতে ধূসর হচ্ছে ডানপন্থি দল বা ভাবাদর্শের রং৷ জাক টিলি সবসময়ই ডানপন্থিদের সমালোচনামুখর৷ এই ছবিতে বিশ্বের বড় এবং আলোচিত ডানপন্থিদের তুলে ধরেছেন ‘ব্লন্ড ইজ দ্য নিউ ব্রাউন’ নামে৷ হিটলারের পাশে তাই সগর্বে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে নেদারল্যান্ডসের গ্যের্ড ভিল্ডার্স, ফ্রান্সের লঁ পেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডনাল্ড ট্রাম্পকে৷ তিনজনেরই সোনালি চুল৷
বিদ্রুপ অমর
২০১৫ সালে ফ্রান্সের বিদ্রুপ ম্যাগাজিন শার্লি হেবদো-তে হামলার পর সবার মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে৷ জার্মানিতে কার্নিভাল শোভাযাত্রায় বিদ্রুপাত্মক ছবি, প্ল্যাকার্ড কমতে থাকে৷ ভীত জনগণ অভয় এবং হামলাকারীদের উদ্দেশ্যে তাই জাক টিলির বার্তা, ‘‘বিদ্রুপকে হত্যা করা যায় না৷’’