ম্যার্কেলের সেরা সময় শেষ?
৫ জানুয়ারি ২০১৮সরকারি প্রচারমাধ্যম এআরডি ও দৈনিক পত্রিকা ‘ডি ভেল্ট'-এর এক জরিপে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে৷ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত জরিপের ফলাফলে বলা হয়, ৬৭ শতাংশ জার্মান মনে করেন, এক সময় ম্যার্কেল যে মাপের ছিলেন, এখন তিনি আর সেরকম নেই৷ অবশ্য জার্মান ভোটাররা ম্যার্কেলের উপর থেকে পুরোপুরি বিশ্বাস হারাননি৷ তাই তো জরিপে অংশ নেয়া ৬৫ শতাংশ মানুষ এখনও মনে করেন, ম্যার্কেল ‘একজন ভালো চ্যান্সেলর'৷
জরিপে বড় একটি সমস্যার কথাও উঠে এসেছে৷ সেটি হচ্ছে, ম্যার্কেলের খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দল বা সিডিইউতে এখনও ম্যার্কেলের বিকল্প গড়ে ওঠেনি৷ তিন-চতুর্থাংশ জার্মান মনে করছেন, সিডিইউতে একজন ‘নতুন নেতা' দরকার৷
এখনও সরকার গঠিত হয়নি
গতবছরের ২৪ সেপ্টেম্বর জার্মানিতে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ কিন্তু এখনও সরকার গঠন সম্ভব হয়নি৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানিতে আর কোনো সময় সরকার গঠনে এতদিন অপেক্ষা করতে হয়নি৷ এ নিয়ে জরিপে অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের হতাশা প্রকাশ করেছেন৷
নির্বাচনে ম্যার্কেলের দল সিডিইউ ও বাভারিয়া রাজ্যে তাঁদের সঙ্গী দল সিএসইউ ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট পায়৷ ফলে সরকার গঠন করতে তাদের জোটসঙ্গীর প্রয়োজন৷ সেই লক্ষ্যে ব্যবসাবান্ধব দল এফডিপি এবং সবুজ দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছিল তারা৷ কিন্তু সেটি ফলপ্রসু না হওয়ায় আলোচনা ভেস্তে যায়৷ সমস্যার শুরু হয় সেখানেই৷ এরপর জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ারের উদ্যোগে সিডিইউ-সিএসইউ ও নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া সামাজিক গণতন্ত্রী বা এসপিডি দলের মধ্যে একটি জোট গড়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে৷ আগামী রবিবার এই দুই দলের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনার প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হবে৷ এটাকে বলা হচ্ছে ‘এক্সপ্লোরেটরি টক'৷ এই পর্যায়ের আলোচনার পর আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দুই দলের মধ্যে জোট গঠনে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে৷
আলোচনা সফল করার লক্ষ্যে দুই দলের শীর্ষনেতারা ইতিমধ্যে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন৷ সেটি হচ্ছে, দুই দলের আলোচকরা আলোচনার বিষয়ে গণমাধ্যমে কোনো কথা বলবেন না৷ জার্মান গণমাধ্যম ‘ডেয়ার স্পিগেল' এমন সিদ্ধান্তের তথ্য প্রকাশ করেছে৷
উল্লেখ্য, এফডিপি ও সবুজ দলের সঙ্গে সিডিইউ-র আলোচনা চলার সময় আলোচকদের মধ্যে কেউ কেউ আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছিলেন৷ এতে আলোচনায় অংশ নেয়া দলগুলোর মধ্যে অবিশ্বাসের জন্ম নিয়েছিল৷ আলোচনা সফল না হওয়ার জন্য এই বিষয়টিকেও অনেকাংশ দায়ী করা হয়৷
ফলে এবারের আলোচনার সময় যেন সেই অবস্থার পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য এবার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলার সিদ্ধান্তে একমত হয়েছেন শীর্ষ নেতারা৷
জেডএইচ/এসিবি (ডিডাব্লিউ, রয়টার্স)