1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বহিষ্কৃত এক তরুণের গল্প

সোয়েন প্যোলে/আরবি৪ নভেম্বর ২০১৩

খুব ভোরে পুলিশ বাহিনী আনোয়ার ও তার পরিবারকে নিতে আসে৷ কয়েক বছর আগের ঘটনা এটা৷ আনোয়ারের বয়স তখন ১৫৷ তারপর আর কী? বাবার সঙ্গে তাকেও ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয় সিরিয়ায়৷

https://p.dw.com/p/1AAhO
Afghanische Flüchtlinge stehen am 22.12.2012 in München (Bayern) bei einer Kundgebung zusammen während im Vordergrung ein Schild zu sehen ist, das als Piktogramm einen Polizisten, einen Mann mit Handschellen und ein Flugzeug zeigt. Mehrere Duzend Afghanen und weitere Demonstranten haben am Max-Joseph-Platz gegen ihre Abschiebung demonstriert. Foto: Tobias Hase/dpa
ছবি: picture-alliance/dpa

দামাস্কাসে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়৷ এক মাসেরও বেশি জেলে রাখা হয় আনোয়ারকে৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সে জানায়, ‘‘আমাকে আটক করা হয়৷ এরপর নিয়মিত নির্যাতনও করা হতো৷''

বহু দেশেই মানবাধিকার পরিস্থিতি খারাপ

২০১১ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি আনোয়ার ও তার বাবাকে জার্মানি থেকে বহিষ্কার করে সিরিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ যদিও বিদেশ দপ্তর সিরিয়ার মানবাধিকার পরিস্থিতি সমস্যাজনক বলে কয়েক বছর ধরেই জানিয়ে আসছে৷ ২০০৯ সালেই জানা যায় যে, সিরিয়ায় ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া বেশ কয়েকজনকে সাথে সাথে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷

প্রতিবছর বেশ কয়েক হাজার মানুষকে জার্মানি থেকে বহিষ্কার করা হয়৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে এখন পর্যন্ত ৬৬৩২ জনকে জার্মানি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে৷

Protest gegen Abschiebung von Vietnamesen
২০১৩ সালে এখন পর্যন্ত ৬৬৩২ জনকে জার্মানি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে (ফাইল ফটো)ছবি: picture alliance/dpa

মানবাধিকার সংগঠন ‘প্রোআসু্ল'-এর ব্যার্নড মেসোভিচ জানান, বহিষ্কারের বেশিরভাগ ঘটনাই তেমন সাড়া না জাগালেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনে৷ এর কারণ ভারপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ এক একটি দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভালোভাবে খবর রাখেন না৷ তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘ঐসব দেশের পরিস্থিতি সঠিকভাবে খতিয়ে দেখা হয়৷ অভিবাসী ও শরণার্থী বিষয়ক ফেডারেল দপ্তরের বিশ্লেষণ ও বিদেশ দপ্তরের রিপোর্টের মাধ্যমে এসব খবর পাওয়া যায়৷''

বহিষ্কৃতদের ভাগ্য নিয়ে মাথা ঘামানো হয় না

কিন্তু ব্যার্নড মেসোভিচ সমালোচনা করে বলেন, বহিষ্কৃত মানুষদের ভাগ্যে কী ঘটলো, তা নিয়ে আর মাথা ঘামানো হয় না৷ আইডিয়াটা এইরকম: ‘‘আমরা একটি দেশের নাগরিকদের তাদের স্বদেশেই ফেরত পাঠিয়ে দেই৷ তারপর সেই দেশেরই তাদের দেখাশোনা করার কথা৷''

অতীতে দেখা গেছে বহিষ্কার করার পর খুব কম ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীদের ভাগ্য নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হয়েছে৷ এর উত্তরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়৷ এর কোনো প্রয়োজন নেই৷ কেননা, স্বদেশে অত্যাচার ও অমানবিক আচরণের কোনো ভয় না থাকলেই কেবল বহিষ্কার করা হয়৷ জার্মান আইন অনুযায়ী কাউকে এমন কোনো দেশে পাঠানো হবে না, যেখানে মৃত্যু ও নির্যাতনের আশঙ্কা রয়েছে৷ এই আইনের আওতায় ২০১২ সালে ৮৩৭৬ জনের বহিষ্কার নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ এদের মধ্যে রয়েছেন সিরিয়া, আফগানিস্তান ও ইরাক থেকে আসা মানুষরা৷

বহিষ্কারের শিকার রোমা জনগোষ্ঠীও

২০১৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে বিশেষ করে সার্বিয়া, ম্যাসেডোনিয়া ও কসোভো থেকে আসা লোকজনকে বহিষ্কার করা হচ্ছে৷ এদের মধ্যে অধিকাংশই রোমা জনগোষ্ঠীর মানুষ৷ স্বদেশে তাদের আবস্থা খুবই সঙ্গিন৷ বলেন নর্থরাইনওয়েস্টফালিয়ার শরণার্থী পরিষদের মারিয়া হ্যুগেল৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘এরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ৷ তাদের দুর্দশার ব্যাপারে উচ্চবাচ্য করা হয় না৷ অথচ সেখানে প্রতিদিন মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে৷''

Die 2010 aus Deutschland abgeschobene Familie Kovaqi mit ihren 6 Kindern in ihrer 1-Raum-Wohnung in einem von Roma bewohnten Wohngebiet in Plementina bei Pristina im Kosovo, fotografiert am 17.12.2011. Foto: Jens Kalaene
বহিষ্কারের শিকার রোমা জনগোষ্ঠীওছবি: picture-alliance/ZB

ইউরোপীয় নীতিমালা অনুযায়ী, জার্মানিতে আসা শরণার্থীদের অনেকের ব্যাপারে জার্মানিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না বরং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত যে দেশটিতে তারা প্রথম পা রাখেন সে দেশে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ তাই কোনোরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই সেসব দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয় শরণার্থীদের৷ ২০১২ সালে ৩,০৩৭ জনকে জার্মানি থেকে ইইউভুক্ত অন্যান্য দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ সাধারণত ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিকে নিরাপদ বলে ধরে নেওয়া হয়৷ কিন্তু গ্রিসকে এখন নিরাপদ বা স্থিতিশীল দেশ বলা যায় না৷ জার্মান কর্তৃপক্ষ শরণার্থীদের গ্রিসে পাঠানো আপাতত বন্ধ রেখেছে৷ বেশ কিছু কোর্ট ইটালি ও হাঙ্গেরিতে বহিষ্কার করা নিষিদ্ধ করেছে৷

জার্মানি থেকে সিরিয়ায় বহিষ্কার করাও এখন স্থগিত করা হয়েছে৷ জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রলায়ের তথ্য অনুযায়ী, বহিষ্কার করে সিরিয়ায় পাঠানোর ঘটনা সর্বশেষ ২০১১ সালে ঘটেছে৷ তার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে আনোয়ার ও তার বাবাকে সিরিয়ায় পাঠানো হয়৷ ইতোমধ্যে অবশ্য তুরস্ক ও বুলগেরিয়া হয়ে অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়ে দু'জন আবার জার্মানিতে ফিরে এসেছে৷ অবশেষে জার্মানিতে শরণার্থী হিসাবে স্বীকৃতিও পেয়েছে তারা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য