জার্মানিতে অভিবাসীদের বাসায়ও জার্মান বলতে হবে!
৮ ডিসেম্বর ২০১৪জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের দল সিডিইউ-র বাভারিয়া রাজ্যের সঙ্গী দল সিএসইউ৷ তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘মানুষ (অভিবাসী) যাঁরা এখানে (জার্মানিতে) স্থায়ীভাবে থাকতে চায় তাঁদের প্রকাশ্যে এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জার্মান ভাষায় কথা বলতে হবে৷''
বিষয়টি নিয়ে জার্মানিতে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে৷ সিএসইউ দলের মহাসচিব বলছেন, তাঁদের দাবির পেছনে অনেকের সমর্থন রয়েছে৷ তবে ম্যার্কেলের সিডিইউ দলের মহাসচিব বলেছেন, ‘‘আমি ঘরে লাতিন, ক্লিঙ্গন নাকি হেসিয়ান ভাষায় কথা বলব, সেটা নিয়ে রাজনীতিবিদদের মাথা ঘামানোর কিছু নেই৷''
এদিকে সাধারণ মানুষ প্রতিক্রিয়া জানাতে সামাজিক মাধ্যম বেছে নিয়েছে৷ টুইটারে #YallaCSU ব্যবহার করে তাঁরা টুইট করছেন৷ মজার ব্যাপার হচ্ছে, Yalla শব্দটি এসেছে আরবি ভাষা থেকে, যার অর্থ ‘চল যাই'!
দাবির প্রস্তাবক সিএসইউ দল বাভারিয়া রাজ্যে রাজনীতি করে৷ সেই রাজ্যের লোকেদের বলা জার্মান ভাষায় যে আঞ্চলিকতার টান রয়েছে, তা নিয়ে জার্মানিতে আগে থেকেই অনেক আলোচনা রয়েছে৷ সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘ডি সাইট' টুইটারে একটি জার্মান অভিধানের ছবি দিয়ে প্রশ্ন করেছে, ‘‘বাভারিয়ান ভাষাও কি জার্মান?''
একই রকম আরেকটি টুইট,
অনেক সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারী সিএসইউ-র দাবির বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করতে গিয়ে হাস্যরসের শরণাপন্ন হয়েছেন৷ যেমন এমিলি সেন্ট. ডেনি লিখেছেন, ‘‘প্রিয় সিএসইউ, আমি শুধুমাত্র তিনটি জার্মান শব্দ জানি৷ তাহলে কি আমি বড়দিন পালন করতে শ্বশুরবাড়ি যেতে পারব?''
জার্মানিতে বসবাসকারী ক্যানাডার এক নাগরিক মনে করেন, অভিবাসীদের নিয়ে রাজনীতি এবং তাঁদের নিয়ে জার্মানদের মনে যে ভয়, সেটা দূর করার একটা উপায় হতে পারে এই – আরও কম সময়ে বিদেশিদের নাগরিকত্ব দেয়া৷
এদিকে, ড. আনিয়া কে. পেটারস বিশ্ববাসীকে আশ্বস্ত করতে একটি টুইট করেছেন,
সিএসইউ-র দাবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো আরেকটি টুইট:
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট বলছে, জার্মানির সামাজিক সুরক্ষা কাঠামোয় বিদেশি অভিবাসীরা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন৷ অর্থাৎ বিদেশিরা রাষ্ট্র থেকে যে সব আর্থিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন, তার তুলনায় অনেক বেশি কর দেন৷ শুধু ২০১২ সালেই বিদেশিরা জার্মানির সামাজিক সুরক্ষা তহবিলে প্রায় ২,২০০ কোটি ইউরো জমা দিয়েছেন৷ অর্থাৎ রাষ্ট্রের কাছ থেকে তাঁরা যে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন, সেই তুলনায় কর ও সামাজিক তহবিলে প্রদেয় অর্থ বাবদ তাঁরা মাথাপিছু প্রতি বছর প্রায় ৩,৩০০ ইউরো বেশি জমা দিয়েছেন৷
সংকলন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ