জার্মানিতে করোনায় আক্রান্ত চার
২৯ জানুয়ারি ২০২০সোমবার রাতে সংখ্যাটি ছিল এক। মঙ্গলবার রাতে তা এক লাফে পৌঁছে গেল চারে। জার্মানির বাভারিয়া অঞ্চলে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। উদ্বিগ্ন প্রশাসন। তবে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। সকলের শারীরিক অবস্থাই স্থিতিশীল।
মঙ্গলবার রাতে জার্মানির স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, আরও তিনজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মিউনিখের একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের সকলকেই আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য দফতরের ধারণা, এখনও পর্যন্ত একই জায়গা থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
সোমবার যে ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তাঁকে পরীক্ষা করার সময় জানা গিয়েছিল, অফিসে এক চীনা সহকর্মীর সান্নিধ্যে এসেছিলেন তিনি। সেই সহকর্মী সপ্তাহ কয়েক আগে চীনে গিয়েছিলেন কাজে। মঙ্গলবার রাতে আরও যে তিনজন আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাঁরাও ওই একই কোম্পানির কর্মী। তাঁরাও জানিয়েছেন, ওই চীনা সহকর্মীর সান্নিধ্যে এসেছিলেন তাঁরা। মালয়েশিয়ায় সাতজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন৷
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ওই চীনা কর্মীর সংস্পর্শে এসেছেন অন্তত ৪০ জন ব্যক্তি। বুধবার তাঁদের সকলকেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়েছে। সকলেই বাভারিয়ায় একটি গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির সংস্থায় কাজ করেন। চারজন আক্রান্ত হওয়ার পরে সংস্থাটিও রবিবার পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে।
চীনের অবস্থা এখনও ভয়াবহ। বুধবার সকাল পর্যন্ত ১৩২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আক্রান্ত ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ। যেখান থেকে প্রথম ভাইরাসটি ছড়িয়েছিল, সেই উহান প্রদেশ এখনও কার্যত লক ডাউন করে রাখা হয়েছে। রাজধানী বেজিং সহ সর্বত্র বন্ধের চেহারা। দোকানপাট খুলছে না বললেই চলে। তবে উহান থেকে এ বার বিদেশিদের বিমানে করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন৷ আগে উহানে ভারতীয় শিক্ষিকা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন৷ এ বার হয়েছেন ইউএই বা সংযুক্ত আরব আমিরশাহির এক নাগরিক৷ ভারত সহ প্রতিটি দেশই চীনকে বলেছে, তারা উহান থেকে নাগরিকদের নিয়ে আসতে চায়৷ সেই পরিপ্রেক্ষিতেই চীনের এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে৷
এ দিকে করোনা ভাইরাসের ওষুধ আবিষ্কারের জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছেন চীন এবং অ্যামেরিকার গবেষকরা। চাইনিজ সেন্টার ফর ডিসিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন করোনা ভাইরাসের মূল উপাদান আবিষ্কার করে ফেলেছে। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানমহলে তার তথ্যও তারা পাঠিয়ে দিয়েছে। তারই উপর ভিত্তি করে ওষুধ তৈরির চেষ্টা করছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। অ্যামেরিকা এবং চীনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সব ঠিক থাকলে মাস তিনেকের মধ্যেই এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার মতো ওষুধ তৈরি হয়ে যাবে।
ভারতেও করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ক্রমশ বাড়ছে। রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ এবং দিল্লির পরে এ বার ওড়িশা আর গোয়াতেও দুই অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের রক্তের নমুনা পাঠানো হয়েছে পুনের গবেষণাগারে। গোয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি বিদেশি। ভারতে আসার আগে তিনি চীনে গিয়েছিলেন।
ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে একটি পরামর্শমূলক বিবৃতি তৈরি করা হয়েছে। এর হাত থেকে বাঁচার জন্য কী কী করতে হবে, তার নির্দেশ রয়েছে সেখানে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিটি রাজ্যের সঙ্গেই এ বিষয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ভাইরাস যাতে কোনও ভাবেই ছড়িয়ে না পড়ে, সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ, এনডিটিভি )