ডাক যোগে ভোটদান
৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩‘‘জার্মানির শহরগুলিতে প্রায় ৩০ শতাংশ ভোটারই পোস্টাল ব্যালটের সুবিধাটা গ্রহণ করেন৷ বড় বড় শহরগুলিতে সংখ্যাটা আরো বেশি'', বলেন মারবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নরব্যার্ট ক্যায়র্সটিং৷ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে আর তার কারণ, ‘‘আমরা স্বতন্ত্রীকরণের দিকে ঝুঁকছি৷ রাজনীতিতে অংশগ্রহণ সহজ করতে চাইছি৷'' ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে ব্যাখ্যা করে জানান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নরব্যার্ট ক্যায়র্সটিং৷ সুইজারল্যান্ডে ১৯৯০-এর দশকে পোস্টাল ভোটের প্রচলণ শুরু হয়৷ আজ শহরগুলিতে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ভোট ডাক যোগে দেওয়া হয়৷
ডাক যোগে ভোটদান সহজ করা হয়েছে
জার্মানিতে ১৯৫৭ সালে পোস্টাল ভোট চালু হয়৷ নির্বাচনের সময় বিদেশে অবস্থান করলে কিংবা অসুস্থতার কারণে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হতে না পারলে ভোটাররা ডাক যোগে ভোট দিতে পারেন৷ ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই ভাবে ভোট দিতে হলে কারণ দেখাতে হতো৷ তারপর থেকে ভোটারদের ওপরই ছেড়ে দেওয়া হয়, কীভাবে তারা এই নাগরিক অধিকারটি প্রয়োগ করবেন৷
আজকাল এই সুযোগটির সদ্ব্যবহার করছেন অনেকেই৷ তবে সমালোচনাও শোনা যায় এই ব্যাপারে৷ ইয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-দর্শনের অধ্যাপক রল্ফ গ্র্যোশনার পোস্টাল ভোটের ব্যাপারে সন্দিহান৷ তাঁর মতে, ‘‘ভোটদান প্রকাশ্য নির্বাচন কেন্দ্রে হওয়া উচিত, বাড়িতে নয়৷'' এক্ষেত্রে পরিবার পরিজন, বন্ধু-বান্ধবরা প্রভাব বিস্তার করতে পারে৷ এক দলের কথা চিন্তা করে আরেক দলকে ভোট দিয়ে ফেলতে পারে মানুষ৷
প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনা
২০০০ সালে নেওয়া ব্রিটেনে এক সমীক্ষায় জানা গেছে, ডাক ভোটে প্রায়ই প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটে৷ যেমন দেখা গেছে কোনো সংঘ বা সমিতির সদস্যরা একই পার্টিকে ভোট দেন৷ নিজস্ব মতামত উপেক্ষা করে দলের চাপের কাছে নতি স্বীকার করেন৷ তবে এর একটা ইতিবাচক দিকও রয়েছে৷ ‘‘যেমন লক্ষ্য করা গেছে, যে সব এলাকায় শুধুমাত্র ডাক ভোট চালু, সেই সব এলাকায় ভোট দেওয়ার হারও সর্বোচ্চ'', বলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ক্যায়র্সটিং৷
ইয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রল্ফ গ্র্যোশনার মনে করেন, প্রভাব বিস্তারের ঝুঁকি থাকলেও ডাকভোটের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা জায় না৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমাদের এই নিশ্চয়তা থাকতে হবে, যাঁরা ভোট দিতে চান, তাঁরা যেন দিতে পারেন৷''
এবারের নির্বাচনেও রয়েছে এই সুযোগ
জার্মানির এবারের সংসদীয় নির্বাচনেও যথারীতি ডাক ভোটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ বিদেশে বসবাসরত ভোটারদের জন্য ২০১৩ সালের পয়লা সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিজস্ব এলাকার ভোটার তালিকায় নাম লেখানোর সুযোগ রাখা হয়৷ এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ফর্ম জার্মান দূতাবাস বা দূতাবাসের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়৷ এই সময়সীমা ইতোমধ্যে পার হয়ে গিয়েছে৷ আশা করা যায়, অনেকেই এর মধ্যেই কাজটা সম্পন্ন করতে পেরেছেন৷