জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ কমানোর পরিকল্পনা রাশিয়ার
২৬ জুলাই ২০২২ইউরোপে ঠিক যে সময় গ্রীষ্ম বিদায় নিতে চলেছে, সেই সময় নতুন এই পরিকল্পনার ঘোষণা দিলো তারা৷
রাশিয়ার গ্যাস জায়ান্ট গাসপ্রম সোমবার জানিয়েছে, বুধবার থেকে নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপ লাইন দিয়ে দৈনিক ৩কোটি ৩০ লাখ ঘনমিটার গ্যাস কম দেবে তারা৷ বর্তমানে ওই পাইপ লাইন দিয়ে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ গ্যাস জার্মানিতে সরবরাহ করছে রাশিয়া৷ বুধবার থেকে সেটা ২০ শতাংশে পৌঁছাবে৷
কোম্পানিটি জানিয়েছে, ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামতের কারণে একটি টার্বাইনের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হচ্ছে বলেই তারা গ্যাস সরবরাহ কমাতে বাধ্য হচ্ছে৷
জার্মান অর্থনীতিমন্ত্রী রবার্ট হাবেক বলেছেন, ‘‘আমরা কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্ক সংস্থা এবং গ্যাস সংকট নিয়ে কর্মরত দলের সাথে এ ব্যাপারে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি৷ আমাদের কাছে যেসব তথ্য এসেছে তাতে কোথাও যান্ত্রিক ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যায়নি৷''
তিনি ডিপিএ সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, ‘‘রাশিয়া নিজে চুক্তি ভঙ্গ করছে আর অন্যদের দায়ী করছে৷'' রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন কূটনৈতিক খেলা শুরু করেছেন বলে মনে করেন তিনি৷
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর পশ্চিমা দেশগুলোর অবরোধের মুখে মস্কো ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ কমাতে শুরু করে৷ জার্মানি মনে করছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবরোধের প্রতিশোধ নিতেই রাশিয়ার এই পদক্ষেপ৷
এর আগে ১০ দিন বন্ধ থাকার পর ২২ জুলাই নর্ড স্ট্রিম ১ দিয়ে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছিল রাশিয়া, তবে সেটাও আগের থেকে অনেক কম, ক্ষমতার মাত্র ৩০ শতাংশ৷ নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনটি রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের উত্তরে শুরু হয়ে জার্মানির উত্তর বাল্টিক সাগরের কাছেগ্রাইফসভাল্ডে গিয়ে শেষ হয়েছে৷
জার্মানির অর্থনীতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাশিয়া তাদের গ্যাসকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে৷ তারা একটা অনিশ্চয়তার অবস্থা তৈরি করছে, পাশাপাশি দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে৷ শীতে যাতে আমাদের কোনো সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে আমরা সবাই একজোট হয়ে প্রতিকারের উপায় খুঁজছি৷''
আজ (মঙ্গলবার) ইউরোপীয় ইউনিয়নের মন্ত্রীরা গ্যাসের ব্যবহার কমানোর ব্যাপারে আলোচনা করতে বৈঠকে বসবেন৷
এদিকে, টার্বাইন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সিমেন্স রাশিয়ার যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, টার্বাইনগুলো প্রায়ই রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কিছুসময় বন্ধ রাখার কথা৷ কিন্তু গত ১০ বছরে একবারও রাশিয়া টার্বাইন নিয়ে অভিযোগ করেনি৷ গাসপ্রম এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোনো নথিপত্র জমা দেয়নি বলেও জানিয়েছে সিমেন্স৷
এপিবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)