ঘরেই বিদ্যুৎ উৎপাদন
১ জুন ২০১৪প্রতি বছর ‘৬০০ টেরাওয়াট আওয়ার্স' বিদ্যুৎ খরচ করে থাকেন জার্মানরা৷ এর মধ্যে ৫০ ‘টেরাওয়াট আওয়ার্স' বিদ্যুৎ ‘ঘরে তৈরি'৷ অর্থাৎ মোট খরচ হওয়া বিদ্যুতের আট শতাংশই আসছে ফ্যাক্টরির গ্যাস প্লান্ট কিংবা বাড়ির ছাদে বসানো সৌর প্যানেলের মতো উৎস থেকে৷
ঘরে এবং ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ নিজেরা ব্যবহারের পাশাপাশি বাড়তি অংশ মূল গ্রিডেও সরবরাহ করতে পারছেন জার্মানরা৷ আর এভাবে উপার্জিত অর্থের উপর বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো করও দিতে হচ্ছে না৷
দশ বছর আগে মায়ার তাঁর ৪৫ রুম বিশিষ্ট চার তারকা হোটেলের জন্য গ্যাস চালিত বিদ্যুৎ এবং তাপ উৎপাদক ইউনিট বসিয়েছিলেন৷ এ জন্য তিনি খরচ করেন প্রায় ৫০ হাজার ইউরো৷ তবে মায়ারের মতে, বিনিয়োগের ফলাফল প্রত্যাশিত সময়ের আগেই পাওয়া গেছে৷
জার্মান চেম্বার অফ কমার্স গত বছর এক জরিপ পরিচালনা করে৷ এতে অংশ নেয়া ২,৪০০-র মতো কোম্পানির মধ্যে অর্ধেকই ইতোমধ্যে নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা তৈরি করেছে, উদ্যোগ নিয়েছে অথবা এভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে৷ এই ব্যবস্থায় অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি বিদ্যুতের সার্বক্ষণিক সরবরাহের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে পারছে প্রতিষ্ঠানগুলো৷
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে জাপানের ফুকিশিমায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্ঘটনার পর সতর্ক হয় জার্মানি৷ ফলে পারামাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ক্রমান্বয়ে বন্ধ করে দিতে থাকে সরকার৷ তাই বিকল্প জ্বালানির উৎসের সন্ধান শুরু হয় দেশটিতে৷ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ছোট ছোট বাড়ির ছাদে তাই এখন দেখা যাচ্ছে সৌর প্যানেল৷ বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে সৌর তাপ বেশি পাওয়া যায়, সেসব অঞ্চলে এই প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে৷
উল্লেখ্য, ২০০০ সালে জার্মানিতে উৎপাদিত মোট জ্বালানির মাত্র ৬.৭ শতাংশ এসেছিল নবায়নযোগ্য উৎস থেকে৷ লক্ষ্য ছিল, ২০১০ সালে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বাড়ানো হবে ১২ শতাংশ৷ কিন্তু জার্মানি সেই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ২০০৭ সালেই৷ নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের এই ধারা ক্রমেই বাড়ছে৷
এআই/ডিজি (এএফপি, এপি)