জার্মানিতে চন্দ্র অভিযানের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু
পশ্চিম জার্মানির শহর কোলনে চন্দ্র অভিযানের প্রশিক্ষণ সুবিধা চালু হয়েছে৷
বিশ্বে একমাত্র
বুধবার কোলনে শহরের পোরৎস এলাকায় প্রকল্পটি চালুর পর মহাকাশচারী থমাস পেস্কুয়েট ও মাথিয়াস মাউয়ার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন৷ ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) ও জার্মান অ্যারোস্পেস সেন্টার (ডিএলআর) এর সমন্বয়ে এই সেন্টারটি চালু করা হয়েছে৷ এ ধরনের প্রতিষ্ঠান বিশ্বে এটিই প্রথম৷
চাঁদের ৭০০ মিটার!
স্থাপনাটি বাইরে থেকে খুব সাধারণ মনে হলেও এর ভেতরটা তৈরি করে হয়েছে চাঁদের পরিবেশের আদলে৷ ৭০০ মিটার যা প্রায় ৭ হাজার ৫৩৪ স্কয়ার ফিট জায়গা পাথর ও ৯০০ টন বালি এবং ভলকানিক পাথরের সমন্বয়ে প্রায় চাঁদের পৃষ্ঠদেশের অনুরূপ তৈরি করা হয়েছে৷ যার মধ্যে অভিকর্ষজ ত্বরণ কম রাখার ব্যবস্থাও করা হয়েছে৷
ক্ষতিকর ধুলা
নভচারীরা সেখানে চন্দ্র অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা সম্পর্কেও হাতে কলমে ধারণা পাবেন৷ চাঁদের ধুলাকে খুবই ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা স্পেসস্যুটে লেগে আরোহীর ক্ষতি করতে পারে৷ নিঃশ্বাসের মাধ্যমে এই ধুলা ফুসফুসে প্রবেশ করলে ফুসফুসও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷
‘কোলন চাঁদের সবচেয়ে কাছাকাছি’
খুব দ্রুতই নভোচারীদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রথম কর্মশালার আয়োজন করা হবে৷ লুনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কীভাবে মাটির নমুনা সংগ্রহ করতে হয় এবং সেগুলোকে স্পেসস্যুটের ভেতরে সংরক্ষণ করতে হয় সে বিষয়টি শেখানো হবে৷ জার্মান নভোচারী আলেকজান্ডার গেরস্ট বলেন, ‘‘আপনি আসলে বলতে পারেন যে কোলন হচ্ছে পৃথিবীতে চাঁদের সবচেয়ে কাছাকাছি জায়গা৷’’
চাঁদে নতুন প্রতিযোগিতা
কোলনের এই সিমুলেশন কেন্দ্রে লুনার রোবটও পরীক্ষা করা হতে পারে৷ ১৯৭২ সালে ইউএস অ্যাপোলো প্রকল্পটি শেষ হয়ার পর কোনো মানুষ এখন পর্যন্ত চাঁদে অবতরণ করেনি৷ তবে ভারত, চীন ও জাপানের মতো দেশ সাম্প্রতিক সময়ে মহাকাশে তাদের বিচরণ বাড়াতে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে৷
সফলতার পথে যাত্রা
নর্থ রাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হেন্ড্রিক ভুস্ট এর সঙ্গে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাসার প্রতিনিধি ও ইএসএ-র পরিচালক ইয়োসেফ আশবেশার উপস্থিত ছিলেন৷ নাসা পুনরায় চাঁদে নভচারীদের অভিযান চালুর কথা ভাবছে৷ তবে সেখানে কিছু কারিগরি ত্রুটির কারণে আরটেমিস ৩ মিশনটি ২০২৬ এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে৷
ধাপে ধাপে চাঁদের পথে
চাঁদের বুকে পদ চিহ্ন আঁকতে খুব দ্রুতই কি কোনো ইউরোপিয়ান নাগরিককে চন্দ্র অভিযানে যেতে দেখা যাবে? ২০৩০ সালের আগে এমনটি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই৷ কারণ সেসময় পর্যন্ত মিশনটিতে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নভোচারীরাই যুক্ত থাকবে৷ তবুও ইউরোপে লুনার অবস্থানের কারণে ইউরোপ সে পথে একধাপ এগিয়ে গেছে মনে করছেন ইএসএ-র পরিচালক ইয়োসেফ আশবেশার৷