জার্মানিতে দক্ষ জনশক্তি দ্রুত কমে যাওয়ার আশংকা
১৫ জানুয়ারি ২০০৯তবে এসব কিছু নিয়োগদাতাদের দয়া আর উদারতার বহিঃপ্রকাশ নিশ্চয় নয় বরং কর্মক্ষম জনশক্তির সংখ্যা হ্রাসের ফলেই কর্মক্ষেত্রে এ নাটকীয় পরিবর্তনের কথা বলছেন বন ভিত্তিক শ্রম গবেষণা ইন্সটিটিউট৷
জার্মানির এই শ্রম গবেষণা ইন্সটিটিউট এর মুখপাত্র ভ্যার্নার আইখহর্স্ট জানান, লোকসংখ্যা দ্রুত হ্রাসের ফলে জার্মানিতে কর্মপরিধি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে৷ ২০৫০ সালের মধ্যে জার্মানিতে বর্তমানের চেয়ে লোকসংখ্যা প্রায় ১০ মিলিয়ন কমে যাবে৷
ভবিষ্যতে দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং বার্ষিক কাজের চাপ আরো কমিয়ে ফেলতে হবে কেননা জার্মানির লোকসংখ্যা কমে যাওয়ায় শ্রমবাজারে কর্মীর সংখ্যা থাকবে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম এবং যারা থাকবে তারাও বয়স্ক হতে থাকবে৷ সুতরাং এ অবস্থায় নিয়োগদাতারা তাদের কর্মীবাহিনীকে পরিশ্রান্ত করে ফেলতে চাইবে না৷ তাই তাদের সুযোগ সুবিধার প্রতিও বেশ খেয়াল করতে হবে৷
ফেডারেল পরিসংখ্যান দফতরের বর্তমান পরিসংখ্যান যদি সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় তবে পরবর্তী ৩০ বছরে জার্মানিতে ৬ মিলিয়ন কর্মী কমে যাবে এবং কর্মীদের গড় বয়স হবে ৪২ থেকে ৪৮ বছর৷
বন ভিত্তিক ঐ ইন্সটিটিউটটের বিশেষজ্ঞরা বলেন, সংখ্যায় অল্প এবং অধিকতর বয়স্ক কর্মীর অর্থ হচ্ছে আমরা আমাদের বর্তমান অবসরকালীন বয়সসীমায় স্থির থাকতে পারবো না৷ তাদের অবসরে যাওয়ার বয়স প্রায় ৬৯ বছরে ঠেকবে বলে তাঁরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন৷
জার্মানির লোকসংখ্যা কমে যাওয়ায় অল্প সংখ্যক কর্মীকে দৈনন্দিন কাজের বোঝা বইতে হবে৷ ফলে প্রচলিত ৯-৫টার ধরা-বাঁধা সময়-সূচি অনুযায়ী তখন আর কাজ সম্ভব হবে না৷ কর্মক্ষেত্রে উপস্থিতির বর্তমান সংস্কৃতিও পাল্টে যাবে, বিশেষ করে কারখানাগুলোতেও আরো নমনীয় কর্মকাল নির্ধারণ করা দরকার হবে৷ আইখহর্স্ট এ ব্যাপারে মন্তব্য করেন যে, কর্মীরা তখন নমনীয় কর্মকাল অনুযায়ী আরো বেশি কাজ করবে এবং তখন তাদের দক্ষতা এবং উৎপাদন অনুযায়ী অতিরিক্ত সম্মানী প্রদান করতে হবে৷
তিনি বলেন, এক দিক থেকে তখন কর্মীরাই নিয়োগদাতায় পরিণত হবে৷
গবেষকদের মতে, এখন পর্যন্ত অধিকাংশ নিয়োগকর্তা ৪৫ বছরের চেয়ে বেশি বয়সের কর্মীদের ব্যয়বহুল মনে করেন৷ কিন্তু বেতন-ভাতা পরিবর্তিত হতে যাচ্ছে এবং এখন যেভাবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভাতা বাড়তে থাকে বিষয়টি আর সে রকম থাকবে না৷
দক্ষ জনশক্তির অভাবের কারণে একটি বিষয় আরো প্রকটভাবে অনুভূত হবে যে, অভিবাসনের বর্তমান হার দিয়ে এ সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না৷ সেকারণে শ্রম গবেষকরা এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতির জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালার উপর জোর দেন৷ এ ব্যাপারে তাঁরা উল্লেখ করেন যে, জার্মানিতে কাজের সুযোগ-সুবিধা তেমন একটা পর্যায়ে নেই যা দক্ষ জনশক্তিকে আকষর্ণ করতে পারে৷
এ পরিস্থিতির মোকাবিলায় ইন্সটিটিউট সম্ভাবনাময় দু‘টি পদক্ষেপের দিকে ইঙ্গিত করেছে৷ একটি হচ্ছে কর্মদক্ষ জনশক্তির জন্য আরো প্রশিক্ষণের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে এবং অন্যটি হচ্ছে পূর্ণকালীন কাজে নারীদের সংখ্যা আরো দ্রুত বাড়াতে হবে৷