জার্মানিতে নতুন জোট সরকার গড়ার লক্ষ্যে আরো অগ্রগতি
১১ নভেম্বর ২০২১করোনা সংকট সামলাতে হিমসিম খেলেও জার্মানিতে আগামী জোট সরকার গড়ার প্রক্রিয়া নির্ধারিত সময়সূচি মেনেই এগোচ্ছে৷ সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি, উদারপন্থি এফডিপি ও পরিবেশবাদী সবুজ দল ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই সরকার গড়ার লক্ষ্য স্থির করেছে৷ এর আওতায় তিন দলের ২২টি কমিটির প্রায় ৩০০ প্রতিনিধি বুধবার সন্ধ্যায় তাদের কাজ শেষ করেছেন৷ বিশেষজ্ঞ রাজনীতিকদের আলোচনায় বিভিন্ন বিষয়ে যতটুকু ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে, সেই সাফল্যের পাশাপাশি মতপার্থক্যগুলিও লিপিবদ্ধ করতে হয়েছে৷ দলের প্রতীকী রং অনুযায়ী লাল, হলুদ ও সবুজ রং দিয়ে সেই অংশ তুলে ধরা হয়েছে৷ প্রত্যেক কমিটিকে তিন পৃষ্ঠার মধ্যে সেই রিপোর্ট লেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল৷ এমনকি হরফ, হরফের সাইজ ও লাইনের মধ্যে ফারাকও স্থির করে দেওয়া হয়েছিল৷ গোপনীয়তার বেড়াজালে সেই আলোচনার খুঁটিনাটী সংবাদ মাধ্যমের কাছে পৌঁছতে পারে নি৷
এবার বাকি মতপার্থক্য দূর করতে আসরে নামছেন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা৷ তাদের জন্যও সময়সূচি স্থির করে দেওয়া আছে৷ ৬ই ডিসেম্বর অথবা সেই সপ্তাহে এসপিডি নেতা ওলাফ শলৎস জার্মানির আগামী চ্যান্সেলর হিসেবে যাতে শপথ নিতে পারেন, সেই লক্ষ্যে ২২শ নভেম্বরের মধ্যে কোয়ালিশন চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করতে হবে৷ তারপর দলীয় স্তরে সেই চুক্তির আনুষ্ঠানিক অনুমোদন করাতে হবে৷ গুরুত্বপূর্ণ এই পর্যায়ে কোনো বিঘ্ন ঘটলে নির্ধারিত সময়সূচি মেনে চলা কঠিন হবে৷
তিন দলই আপাতত মতপার্থক্য সত্ত্বেও সরকার গড়ার প্রশ্নে যথেষ্ট আশাবাদী৷ তবে শেষ পর্যন্ত বিষয় সম্পর্কে ঐকমত্য সত্ত্বেও মন্ত্রণালয় বণ্টনের প্রশ্নে সংঘাতের আশঙ্কা দূর হচ্ছে না৷ বিশেষ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দখল নিতে এফডিপি ও সবুজ দলের মধ্যে রেষারেষি বার বার সংবাদ মাধ্যমেও স্থান পাচ্ছে৷ সবুজ দল সেই দাবি থেকে সরে এসেছে বলে সংবাদ মাধ্যমের একাংশে দাবি করা হলেও সেই দল এমন ‘ছাড়'-এর দাবি অস্বীকার করেছে৷
তিন দলের উচ্চাকাঙ্ক্ষী সংস্কার প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান নিয়েও সংশয় এখনো দূর হয় নি৷ বিশেষ করে এফডিপি দল বাজেট ঘাটতির অনুমোদিত মাত্রার ক্ষেত্রে কোনো আপোশ করতে রাজি নয়৷ বৃহস্পতিবারই বিদায়ী সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে ওলাফ শলৎস কর বাবদ অর্থের অংক সম্পর্কে পূর্বাভাস দিচ্ছেন৷ করোনা সংকট সত্ত্বেও অর্থনীতি জগত যথেষ্ট চাঙ্গা হওয়ায় এবং মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় রাজস্বও বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ ফলে আগামী সরকারের হাতে কিছুটা বাড়তি অর্থ থাকতে পারে৷ বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী বাকি বাড়তি ব্যয় সরাসরি বাজেট থেকে না নিয়ে বিকল্প পথের সন্ধান করছে ট্রাফিক লাইট কোয়ালিশনের শরিক দলগুলি৷
ডিসেম্বরে জার্মানিতে নতুন সরকার গঠন করা সম্ভব হলেও শীর্ষ নেতাদের সবার আগে ভয়াবহ করোনা সংকটের মোকাবিলা করতে হবে৷ বৃহস্পতিবারই সংসদে এই তিন দলের আনা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে৷ সংক্রমণ সুরক্ষা সংক্রান্ত আইনে রদবদল করে ভবিষ্যৎ সরকার মহামারি মোকাবিলার ক্ষেত্রে ভিন্ন পথ বেছে নিতে চায়৷ উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার জার্মানিতে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক গড় সংক্রমণের হার প্রায় ২৫০ ছুঁয়েছে৷ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫০,০০০ নতুন সংক্রমণের রেকর্ড ভাঙলে এই দেশ৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)