জার্মানিতে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন ‘অবৈধ অভিবাসীরা’
১৩ আগস্ট ২০১৯তবে পুলিশ বলছে, অভিবাসীদের প্রতিরোধ তাদের বল প্রয়োগ করতে বাধ্য করছে৷ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অনেকেই আদালতের অনুমতি নিয়ে জার্মানিতে থাকছেন৷ কিন্তু যাঁরা অনুমতি আদায় করতে পারছেন না, তাঁদের অনেকেই পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে পালিয়ে বেড়ায়৷ তাঁদের খুঁজে বের করা হলেও দেশে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানায় তাঁরা৷ এমনকি শেষমূহুর্তে বিমানের মধ্যেও সহিংস হয়ে ওঠেন আশ্রয়প্রার্থীদের অনেকে৷ চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের হিসেবে দেখা যায়, জার্মানি এবং অন্য দেশের পাইলটরা অন্তত ৩৩৪ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে তাঁদের ফ্লাইটে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে৷ জার্মানির লেফট পার্টির করা এক সংসদীয় তদন্তে এসব তথ্য উঠে আসে৷
হাতকড়ার ব্যবহার বাড়ছে
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে আরো বিশদ জানতে চেয়ে সরকারের কাছে ২৬টি প্রশ্ন রেখেছে লেফট পার্টির আইন প্রণেতা উল্লা ইয়েল্পকে৷ কারণ, তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৫ সালেও হাতকড়া কিংবা পায়ে বেড়ি পরানোর ঘটনা ঘটেছে মাত্র ১৩৫টি৷ ২০১৮ সালে এসে এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে এক হাজার ২৩১৷
বছরের হিসেবে বিতাড়িত অভিবাসীদের সংখ্যার হিসেবটা কাছাকাছি থাকলেও বল প্রয়োগের মাত্রাটা বেড়ে যাচ্ছে৷ ২০১৭ সালে ফেরত পাঠানো হয়েছে ২৩ হাজার ৯৬৬ জনকে৷ বিপরীতে ২০১৮ সালে পাঠানো হয় ২৩ হাজার ৬১৭ জনকে৷ এ বছর প্রথম ছয় মাসে ফেরত পাঠানো লোকের সংখ্যা ১১ হাজার ৪৯৬জন৷ হিসেব বলছে, বছর শেষে মোট সংখ্যাটিও অন্য বছরগুলোর কাছাকাছি থাকবে৷
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সহিংস আচরণের কারণে পুলিশ বল প্রয়োগ করতে বাধ্য হচ্ছে৷ বিষয়টি নিয়ে নির্ভরযোগ্য অনুসন্ধানের ঘাটতি রয়েছে বলেও দাবি করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়৷
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মন্তব্য
সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইলেওনোরে পেটারমান জানান, অনেকেই বাধা দেয়, অনেকই সহিংস হয়ে ওঠে৷ তাই তাঁদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াটি চালু রাখতে এবং সাধারণ মানুষকে আক্রমণের শিকার থেকে রক্ষা করতে হাতকড়াসহ অন্য উপায়গুলো ব্যবহার করতে হয় বলে জানান তিনি৷ পেটারমান জানান, নিতান্ত বাধ্য হয়েই তাঁদের এই উপায় বেছে নিতে হয়৷
লেফট পার্টির ইয়েল্পকে হাতকড়া আর বলপ্রয়োগকে ‘অসহনীয়‘ হিসেবে উল্লেখ করেছেন৷ অভিবাসনপ্রত্যাশী মানুষগুলোকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে ফেরত পাঠিয়ে তাঁদের আরো কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেয়া হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷ তদন্তে বেশকিছু মর্মান্তিক ঘটনার প্রমাণ পেয়েছেন বলেও জানান তিনি৷
স্বচ্ছতার অভাব
অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াটিকে অস্বচ্ছ বলছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো৷ কোনো ব্যক্তিকে ফেরত পাঠানোর উদ্দেশ্যে আটক করা হলে সেই মূহুর্ত থেকে বিমানে তুলে দেয়া পর্যন্ত তাঁর ওপর পুলিশ শারীরিক নির্যাতন করে বলেও অভিযোগ করছে মানবাধিকার সংগঠন প্রো অ্যাসাইল৷ মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এসব ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী না থাকায় সঠিক বিবরণ পাওয়াটাও মুশকিল হয়ে পড়েছে৷
মার্সেল ফ্রুসটেনাও/টিএম