1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে বন্যা : বড় চ্যালেঞ্জ আবর্জনা সরানো

২৯ জুলাই ২০২১

ভয়াবহ বন্যার পর থেকে দুর্গত এলাকায় চলছে সবকিছু যত দ্রুত সম্ভব স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানোর চেষ্টা৷ ধীরে ধীরে সবই হয়ত হবে, তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে হাজার হাজার টন ওজনের আবর্জনা সরানো৷

https://p.dw.com/p/3yFEb
Deutschland Unwetterkatastrophe | Bad Neuenahr-Ahrweiler | vorher - nachher
ছবি: Kate Brady/DW

সেই কাজও চলছে বন্যায় বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে৷ কিন্তু বন্যার পর প্রায় দু' সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও আবর্জনা ব্যবস্থাপনার জন্য সুপ্রসিদ্ধ দেশটির জন্য আবর্জনাই এখন ভয়াবহ এক সমস্যা৷ ভেঙে পড়া ঘর-বাড়ির নানা অংশ ভেসে বেড়াচ্ছিল চারপাশে৷ ভাসছিল ফার্নিচার, টেলিভিশন, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, বই, ছবির অ্যালবাম, পুরোনো রেকর্ড আরো কত কী! জলমগ্ন রাস্তা থেকে জল সরে গেলেও যানবাহন ঢুকতে পারছিল না, সেসব এলাকায় হাঁটাচলাও ছিল দুস্কর৷

তাদের প্রথম স্বস্তি

আরভাইলারের মিস ক্রল (পুরো নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)-এর বাবা-মায়ের বাসার দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল ভেসে আসা একটা ফ্রিজ৷ নতুন ফ্রিজটাতে তখনো চুম্বক লাগানো অক্ষরগুলো অক্ষত৷ দরজায় ‘‘থ্যাঙ্ক গড উই আর অ্যালাইভ'' লেখা স্টিকারটাও দেখা যাচ্ছিল পরিষ্কার৷ ক্রলের বাবা-মা ওই ফ্রিজটা নিয়েই বেশি বিপদে পড়েছিলেন৷ কে সরাবে ওটা?

পানি সরে যাওয়ার পর আবর্জনার পাহাড় সরানোর কাজও শুরু হলো৷ একসময় সরানো হলো ফ্রিজটাও৷ অনেক দিন পর সেদিন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন ক্রল, ‘‘আবর্জনাগুলো যে সরানো হয়েছে তা খুব বড় স্বস্তির ব্যাপার৷'' স্থানীয় আরেকজন তো বলছিলেন রাস্তার আবর্জনার সরানোর দিনটিতে তার মনে হয়েছিল যেন আগেভাগে ক্রিসমাস চলে এসেছে!

দল বেঁধে কাজ

আবর্জনা সরানোর কাজ মূলত নগর কর্তৃপক্ষের হলেও সবাই শুধু কর্তৃপক্ষের অপেক্ষায় বসে থাকেনি৷ স্থানীয় নির্মাণ ঠিকাদার, খামারি এবং দমকল কর্মীরা যোগ দেন আবর্জনা ব্যবস্থাপনা কোম্পানির সঙ্গে৷ এর ফলে কাজ এগোতে থাকে দ্রুত৷

এখনো অনেক কাজ বাকি

রাস্তা থেকে সরানো হলেও ছোট-বড় সব আবর্জনা এখনো যথাযথভাবে সরানো যায়নি৷ ডাস্টবিনের পাশে, কিংবা শহরের কোনো ফাঁকা জায়গায় সারবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে লোহা, কাঠ, প্লাস্টিক ইত্যাদির তৈরি নানা জিনিস৷ তার মধ্যে কিছু এখনো ব্যবহারযোগ্য৷ সেসব যতটা সম্ভব পরিষ্কার করে রাখা হয়েছে প্রকৃত মালিকদের জন্য৷

স্বাভাবিক অবস্থায় বড় বড় আসবাব থেকে কাঠ, লোহা বা অন্য কোনো ধাতুর তৈরি অংশ আলাদা করা হয় পুনর্ব্যবহারের জন্য৷ কিন্তু এত বড় দুর্যোগের প্রস্তুতি তো ছিল না, তাই পাহাড়সমান আবর্জনার সামনে আবর্জনা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এখন অসহায়৷ অনেক আসবাবের কাঠ এখনো ভেজা৷ শুকানোর আগে পুনর্ব্যবহারযোগ্য অংশ আলাদা করা যাবে না৷ তা ছাড়া এত জিনিস সরানোর জায়গা পাওয়াও মুশকিল৷ অথচ দ্য অ্যাসোসিয়েশন এনভায়র্নমেন্টাল অ্যাকশ জার্মানি (ডিইউএইচ) ইতিমধ্যে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এমন আবর্জনার স্তূপ পরিবেশের ভয়ঙ্কর ক্ষতি করবে, তাই মাটিতে বা মাটির নীচের পানিতে মিশে গিয়ে যাতে পরিবেশের ক্ষতি করতে না পারে, সেজন্য এগুলোকে কংক্রিটের ওপর বা সেরকম শক্ত কোনো স্থানে রাখতে হবে৷ এত আবর্জনা রাখার জায়গা বের করা কঠিন বলে ডিইউএইচ-এর কর্মকর্তা মারিয়েকে হফমান, জলে ভেসে আসা আসবাবপত্র, সাইকেল, থালাবাসন, ফ্রিজ ইত্যাদি পরিষ্কার এবং ঠিকঠাক করে আবার ব্যবহারে জনগণকে উৎসাহিত করার পরামর্শ দিয়েছেন৷

ছদ্মবেশীদের উপদ্রব

দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই দুর্গত এলাকায় গিয়েছেন সেবার মনোভাব নিয়ে৷ এখনো অনেকেই কাজ করে যাচ্ছেন সেখানে৷ তবে মানবকল্যাণে উদ্বুদ্ধ এমন মানুষদের মাঝে কিছু লোভী মানুষও ঢুকে পড়ছে৷ বন্যাদুর্গতদের সহায়তার কথা বলে এলাকায় গিয়ে ব্যবহারযোগ্য সামগ্রী গাড়িতে তুলে নিয়ে আসছে তারা৷ দুর্গতদের শেষ সম্বল হাতিয়ে নিতে যাওয়া এসব মানুষের ওপর এখন কড়া নজর রাখছে পুলিশ৷ মামলাও হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে৷ ম্যার্কিশার ক্রাইস এলাকার পুলিশ সুপারিন্টেন্ড্যান্ট মার্সেল ডিলিং জানান, ‘‘আবর্জনার স্তূপ থেকে ধাতুর তৈরি নানা জিনিস এবং ইলেক্ট্রনিক পণ্য চুরি করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে এ পর্যন্ত আমরা ১০টি ফৌজদারি মামলা করেছি৷''

বাড়ছে আবর্জনা

বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর রাস্তা থেকে আবর্জনা সরিয়ে ফেলায় স্থানীয়দের অনেকেই তাদের বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ফিরছেন৷ নিজেদের যেসব আসবাবপত্র বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো ফেলে দেয়ার জন্য রাস্তার পাশে রাখছেন তারা৷ ফলে আবর্জনার পাহাড় আবার বড় হচ্ছে৷

কেট ব্র্যাডি/ এসিবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান